মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সবসময়ই টাকার ছড়াছড়ি থাকে। তবে দেশটিতে নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে আইনগত কড়াকড়ি আছে। এজন্য প্রার্থীদের স্বচ্ছতা রক্ষা করতে হয়। এবারের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী জো বাইডেন ও রিপাবলিকান প্রার্থী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করছেন, প্রচারকাজে ঢালছেন বিপুল অর্থ। তবে নির্বাচনের মাত্র ছয় সপ্তাহেরও কম সময় আগে বাইডেন টাকার সাগরে ভাসছেন। ট্রাম্প বেশ পিছিয়ে পড়েছেন।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেপ্টেম্বরে এসে বাইডেনের হাতে আছে ৪৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা প্রায় চার হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চেয়ে তিনি ১৪ কোটি ১০ লাখ ডলারে এগিয়ে রয়েছেন। তবে কয়েক মাস আগেও বাইডেন ট্রাম্পের চেয়ে ১৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারে পিছিয়ে ছিলেন। নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিকে এসে বাইডেন আর্থিকভাবে এগিয়ে থাকায় বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন।
সেপ্টেম্বরের শুরুতে বাইডেনের ৪৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার তহবিলের বিপরীতে ট্রাম্পের জমা ছিল ৩২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। তবে ট্রাম্পের যোগাযোগ পরিচালক টিম মুরটাফ বলেন, এখন ছোট দাতাদের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহে মন দেবেন তারা।
আগস্টে টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে ট্রাম্প শিবির ব্যয় করেছে এক কোটি ৮৭ লাখ ডলার। বিপরীতে বাইডেন খরচ করেছেন ছয় কোটি ৫৫ লাখ ডলার। ফেডারেল নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া নথিতে দেখা যায়, আগস্টে ট্রাম্প সংগ্রহ করেছেন ছয় কোটি ১৭ লাখ ডলার আর খরচ করেছেন ছয় কোটি ১২ লাখ ডলার। বিপরীতে গত মাসে বাইডেন শিবির সংগ্রহ করেছে ২১ কোটি ২০ লাখ ডলার আর ব্যয় করেছে ১৩ কোটি ৩০ হাজার ডলার। এ মাসেই বাইডেনের উদ্বৃত্ত ছিল আট কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রুথ বেডার গিন্সবার্গের মৃত্যুর পর বাইডেনের তহবিল ফুলেফেপে উঠতে শুরু করেছে। ডেমোক্র্যাট সমর্থকরা মনে করছেন, নির্বাচনে ট্রাম্প হেরে যাবেন এবং ফলাফল সুপ্রিম কোর্টে গড়াবে। সর্বোচ্চ আদালতে বর্তমানে ট্রাম্প তথা রিপাবলিকান সমর্থক বিচারপতির সংখ্যা অর্ধেক অর্থাৎ, চারজন। গিন্সবার্গের জায়গায় রক্ষণশীল বিচারপতি নিয়োগ দেওয়া গেলে রায় ট্রাম্পের পক্ষে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। ডেমোক্র্যাটরা মনে করছেন, এ অবস্থায় বাইডেনের দরকার বড় ব্যবধানে জয়, যাতে ট্রাম্পের কলাকৌশল ভণ্ডুল হয়ে যায়।
গিন্সবার্গের মৃত্যুর পর সপ্তাহান্তে বাইডেনের তহবিলে ১০ কোটি ডলার জমা পড়েছে। তবে অনেক রিপাবলিকান প্রশ্ন তুলছেন, ২০১৯ সালের শুরুতে ট্রাম্পের তহবিলে ১৩০ কোটি ডলার জমা থাকলেও এখন এত কমল কীভাবে? জবাবে ট্রাম্পের নির্বাচনী কর্মকর্তারা বলছেন, সরাসরি প্রচারের কাজে (যেমন বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারণা) তারা বিপুল অর্থ খরচ করেছেন। বাইডেন শিবির এ ধরনের তৎপরতা চালায়নি। তারা বরং দূরদর্শিতার সঙ্গে শেষ মুহূর্তের প্রচারে অর্থ জমিয়ে রেখেছেন।
আগস্ট মাসে বাইডেন শিবির রেকর্ড তহবিল সংগ্রহ করেছে। এ সময় তাদের তহবিলে জমা হয় ৩৬ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। বিপরীতে ট্রাম্পের তহবিলে জমা পড়ে দুই কোটি ১০ লাখ ডলার।
এ মাসে বাইডেনের ব্যয় হয় ১৯ কোটি ২০ লাখ ডলার। বাইডেনের প্রচার ম্যানেজার জেনিফার ও'মালি ডিলন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, প্রচারে খরচ করার জন্য বিপুল অর্থ এখনও তাদের তহবিলে আছে। বিশেষ করে রণক্ষেত্র রাজ্যগুলোতে রাশি রাশি টাকা খরচ করতে চান তারা।
নির্বাচনের শেষ পর্যায়ে এসে ধনকুবের সমর্থকরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা দিচ্ছেন দুই প্রার্থীকে। তেল পাইপলাইনের ব্যবসায়ী কেলসি ওয়ারেন ট্রাম্পের তহবিলে এক কোটি ডলার দিয়েছেন। তবে সবাইকে পেছনে ফেলে নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ রণক্ষেত্র রাজ্য ফ্লোরিডায় বাইডেনের প্রচারে ১০ কোটি খরচ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এটাই এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তির বৃহত্তম অনুদান। অথচ এবার বাইডেনের দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ব্লুমবার্গ। মজার ব্যাপার হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স চ্যানেল ট্রাম্পের কট্টর সমর্থক হলেও এই চ্যানেলের মালিক রুপার্ট মারডকের ছেলে জেমস মারডক বাইডেনের তহবিলে আগস্টে তিন লাখ ডলার দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।