২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ডায়াবেটিস শুধু শারীরিক রোগ নয়, এটি মনের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলে। করোনার মহামারি সে চাপ বাড়িয়ে দিতে পারে আরও বহুগুণে। কারণ, করোনার সংক্রমণে ডায়াবেটিস রোগীর জটিলতার ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় বেশি। তবে কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকলে এই মানসিক চাপ সহজেই এড়ানো সম্ভব। একই সঙ্গে এড়ানো সম্ভব করোনার সংক্রমণের ঝুঁকিও। ডায়াবেটিস একটি রোগ, এ রোগ কিভাবে জন্ম হলো এ কথা কেউ সঠিক ভাবে বলতে পারে না। তবে ডায়াবেটিসের ইতিহাস সুপ্রাচীন কালের। মিশরের প্রাচীন নগরী থিবসের একটি পিরামিডের ভেতর থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ১৫৫২ সালের প্যারিপাস গাছের ছালে একটি রোগ বিবরণী আবিস্কার হয়।এই রোগবিবরণীতে সর্বপ্রথম বহুমূএ রোগের উল্লেখ দেখতে পাওয়া যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক প্রাচীন গ্রীসের হিপোক্রেটিস কর্তৃক আবিস্কৃত ইউনানী চিকিৎসা পদ্ধতিতে ডায়াবেটিসের ধারণা ছিল।
★ডায়াবেটিস কি?
আমাদের শরীরে বিলিয়ন বিলিয়ন কোষে প্রতি মুহূর্তে লক্ষ-কোটি কাজ হয়ে চলেছে। এই কাজ সুষ্ঠুভাবে সমাধা হওয়ার জন্য চাই শক্তি। শক্তির সবচেয়ে বড় যোগানদাতা কার্বোহাইড্রেট। এর মধ্যে রয়েছে ভাত, ডাল, আলু, শাকসবজি, গম ভুট্টা প্রভৃতি। জটিল বিক্রিয়া শেষে এগুলো আমাদের শরীরের কোষে গ্রহণ উপযোগী সরল অণুতে পরিণত হয়। এই সরল অণু হচ্ছে গøূকোজ। গøুকোজ অণুকে শরীরের কোষ গ্রহণ করে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপাদন করে। এই শক্তি দেহকে সচল রাখে।
কিন্তু বেশীর ভাগ কোষে গøুকোজ প্রবেশ করতে হলে একটি হরমোন লাগে। এর নাম ইনসুলিন। ইনসুলিন না থাকলে গøুকোজ কোষে প্রবেশ করতে পারবে না। ফলে কোষে শক্তি উৎপাদন হবে না। আর কোষ শক্তি না পেলে তার কাজ ঠিকমতো করতে পারবে না। অথচ রক্তে অফুরন্ত গøুকোজের যোগান রয়েছে। কিন্তু কোষগুলোকে অভুক্ত অবস্থায় থাকতে হচ্ছে। বারে বারে প্রস্রাব করার জন্য এই রোগের আরেক নাম বহুমূত্র রোগ।
স্বাভাবিক সুস্থ মানুষের রক্তে অভুক্ত অবস্থায় প্রতি লিটারে ৫.৬ থেকে ৬.১ মিলি মোল গøূকোজ থাকে। খাবার গ্রহণের পরে এটা বেড়ে যায়।
*প্রকারভেদঃ
এছাড়া আরো কিছু কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। এদের মধ্যে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস। একে ইংরেজিতে বলা হয় জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস। গর্ভবতী নারীদের দেহে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি ইনসুলিন প্রয়োজন হয়। কারণ ইনসুলিন মানবদেহে আরো বেশ কিছু কাজে নিয়োজিত। এখন মাতৃদেহ যদি পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপাদনে অক্ষম হয়ে পড়ে, তাহলে দেহে স্বভাবতই গøুকোজ বেড়ে যাবে। গর্ভবতী নারীদের প্লাসেন্টা থেকেও কিছু হরমোন ক্ষরিত হয় যা মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসের জন্য দায়ী। এসব নারীদের সন্তান প্রসবের পর আর ডায়াবেটিস থাকে না।
এছাড়া জেনেটিক কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে। অটিজম বা ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোম এ আক্রান্ত মানুষের এজন্য ডায়াবেটিসে ভোগার সম্ভাবনা বেশি। পাশাপাশি অগ্ন্যাশয়ের সমস্যার কারণে ডায়াবেটিস হতে পারে; যেমন: যদি অগ্ন্যাশয়ে ক্যান্সার হয় কিংবা সংক্রমণ হয়, তবে ডায়াবেটিস হতে পারে। হরমোন সমস্যার কারণেও ডায়াবেটিস হতে পারে। কুশিং সিন্ড্রোম বা এক্রোমেগালি, যা থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হরমোনের কারণে হয়ে থাকে, এদের ডায়েবেটিসের উপর প্রভাব আছে। কিছু ঔষধও ডায়াবেটিসের কারণে হতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ স্টেরয়েড, থায়াজাইড কিংবা ফেনাইটইন জাতীয় ঔষধগুলোর ডায়াবেটিসের কারণ হিসেবে ভূমিকা থাকতে পারে। সাইটো-মেগালো-ভাইরাস, জন্মগত রুবেলা ভাইরাস কিংবা কক্সস্যাকি ভাইরাসগুলোর সংক্রমণ ডায়াবেটিসে প্রভাব পড়ে।
★ডায়াবেটিসের লক্ষণঃ
ডায়াবেটিস রোগীরা যে সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভোগেন তা হলো বার বার প্রস্রাব করা। ফলে শরীরে তরল কমে যায় এবং বেশি বেশি পানি তৃষ্ণা পায়। অপরদিকে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের দেহে ‘কোষীয় অনাহার’ অবস্থার সৃষ্টি হয়। ফলে দেহ মস্তিষ্ককে ক্ষুধা লেগেছে বলে মেসেজ দেয়। এজন্য ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ক্ষুধা লেগেই থাকে। প্রচুর খাওয়া সত্তে¡ও তাদের ওজন কমে যায়। সারাক্ষণ ক্লান্তি ঘিরে রাখে। কোথাও ক্ষত তৈরি হলে সহজে সারতে চায় না। বিভিন্ন চর্মরোগের আক্রমণ বেড়ে যায়। আস্তে আস্তে যৌন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
*হোমিওপ্রতিবিধানঃ রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয়। এই জন্য অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসককে রোগীর পুরা লক্ষণ নির্বাচন করে ধাতুগত চিকিৎসা দিতে পারলে উপকার হতে পারে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয় কমিটি,
কো- চেয়ারম্যান, হোমিওবিজ্ঞান গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।