পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ইনকিলাব ডেস্ক : তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান রাশিয়া সফরে প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এটাকে তার রাশিয়া মিশনের সাফল্য হিসাবেই দেখা হচ্ছে। ইতিহাসের নতুন পাতায় দুই দেশের সম্পর্ক লেখার কথা বলেছেন তিনি। গত মঙ্গলবার সেন্ট পিটার্সবার্গে বৈঠক করেন পুতিন ও এরদোগান। অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা বলেছেন পুতিন। তুরস্কে ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পর প্রথম বিদেশ সফরে রাশিয়া গেলেন এরদোগান। তাকে রাশিয়া সফরে পুতিনকে আহ্বানকে সুস্বাগতম হিসেবে নিয়েছেন তিনি।
গত বছর নভেম্বর মাসে সিরিয়া সীমান্তের কাছে তুরস্ক একটি রুশ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করলে দুই দেশের সম্পর্কে অবনতি হয়। তুরস্কের ওপর আংশিক অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে রাশিয়া।
ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশে শুদ্ধি অভিযান শুরু করায় প্রেসিডেন্ট এরদোগানের কঠোর সমালোচনা করছে তার পশ্চিমা মিত্ররা। এরই মধ্যে রাশিয়া সফরে গেলেন তিনি। বিষয়টিকে তুরস্কের পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে। রাশিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয়ার আগে এরদোগান বলেন, পুতিন তার ‘বন্ধু’ এবং রাশিয়ার সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন করতে চান তিনি। বৈঠকের পর রাশিয়া সফরকে সম্পর্কের নতুন মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। অর্থনৈতিক সম্পর্ক চাঙ্গা করা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তুরস্ককে নিয়ে একসঙ্গে লড়াইয়ে ঘোষণা দেন পুতিন। গত জুন মাসে রাশিয়া দাবি করে, যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার বিষয়ে এরদোগান দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং নিহত পাইলটের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এরপর পরের মাসে ১৫ জুলাই তুরস্কে সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয় এবং পুতিন এর সমালোচনা করে এরদোগানের শুদ্ধি অভিযানকে সমর্থন করেন। তবে সমালোচকদের দাবি, পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের শীতল সম্পর্কের সুযোগ নিয়েছে রাশিয়া।
উল্লেখ্য, গত সোমবার রুশ বার্তা সংস্থা তাসে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে এরদোগান বলেন, তিনি রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ‘পুনঃস্থাপন’ করতে চান। তিনি আরো বলেন, রুশ-তুর্কি মিত্রতার নতুন অধ্যায় শুরু হবে। এই অধ্যায়ে সামরিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতার বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত হবে। পাশাপাশি অভ্যুত্থানকারীদের প্রতি অতিরিক্ত দমনপীড়ন চালানোর সমালোচনা করায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের তীব্র সমালোচনা করে দেশটি।
উল্লেখ্য, নয় মাস আগে তুরস্ক সিরীয় সীমান্তের কাছে একটি রুশ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পর দেশটির উপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মস্কো। এখন দুই দেশের সম্পর্কে উষ্ণতা এমন সময়ে আসছে যখন পশ্চিমের সঙ্গে আঙ্কারার বন্ধুত্বে ফাটল ধরেছে। পশ্চিমারা অভ্যুত্থান চেষ্টার পর দমনাভিযান নিয়ে উদ্বেগ জানালেও ১৫ জুলাইয়ের রক্তাক্ত ঘটনা, যেখানে ২৩০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি এবং বিদ্রোহী সেনাদের পার্লামেন্ট বোমাবর্ষণ, ট্যাংক ও হেলিকপ্টার দিয়ে ব্রিজ অবরোধের মতো ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতি তারা উদাসীন ছিলেন বলে অভিযোগ এরদোগানসহ অনেক তুর্কির। এই অভ্যুত্থান চেষ্টার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা একজন ধর্মীয় নেতার অনুসারীদের দায়ী করছে তুরস্ক সরকার। তার কয়েক হাজার অনুসারীকে এরইমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে হাজারো শিক্ষক, বিচারক ও সৈনিককে। এরদোগান সরকারের এই শুদ্ধি অভিযান খুব দ্রুত ও বাছ-বিচারহীনভাবে হয়েছে বলে সমালোচনা করছে পশ্চিমা দেশগুলো। উভয়পক্ষের সম্পর্কের এতো অবনমন হয়েছে যে, জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই সপ্তাহে বলেছেন, তুরস্কের সঙ্গে আলোচনার মতো আর কোনো জায়গা নেই। আমরা দুটি ভিন্ন গ্রহের বাসিন্দাদের মতো একে অপরের সাথে কথা বলেছি। অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর ইইউতে তুরস্কের সদস্যপদ নিয়ে আলোচনা স্থগিতের প্রস্তাব করেছেন। তাস, বিবিসি, রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।