Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হায়দ্রাবাদ ট্রাজেডি

অভিমত

মোহাম্মদ ইয়ামিন খান | প্রকাশের সময় : ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০১ এএম

১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট স্বাধীন হওয়ার পরপরই প্রতিবেশী স্বশাসিত রাজ্যগুলোর উপর আধিপত্য বিস্তারে মনোনিবেশ করে ভারত সরকার। হায়দ্রাবাদ, জুনাগড় ও কাশ্মীর ছাড়া সকল রাজ্যই ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই তিনটি রাজ্যকে কীভাবে উদরস্থ করা যায় তার জন্য নতুনভাবে কোমর বেঁধে নামে ভারত। ‘সব সীমান্তবর্তী রাজাকে শত্রু বলে মনে করবে’, চানক্যের এই উপদেশকে শিরোধার্য করে ভারত তার আগ্রাসী নীতি অবলম্বন করে। জুনাগড় ও কাশ্মীরকে ভারতভুক্তির পর সর্বশেষ ভারতীয় আগ্রাসনের শিকার হয় হায়দ্রাবাদ। ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ভারত হায়দ্রাবাদে নানা রকম অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অপচেষ্টা করলেও শেষ নিজাম তা শক্ত হাতে দমন করেন। ১৯৪৮ সালের জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ঘোষণা করেন, ‘যখন প্রয়োজন মনে করবো তখন হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে সেনা অভিযান শুরু করা হবে।’ এ ব্যাপারে ভারত বেশ কিছু পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এর অংশ হিসেবে কংগ্রেস স্বেচ্ছাসেবকদের সক্রিয় করা হয়, হায়দ্রাবাদের রাজনীতিকে কলুষিত করা হয়, শিক্ষাঙ্গন, সাংস্কৃতিক জগৎ, বুদ্ধিজীবী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনুগত লোক তৈরি করা হয়, সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরে অনুগত দালাল সৃষ্টি করা হয় এবং হিন্দু মৌলবাদীদের দিয়ে নানা রকম সন্ত্রাসী কর্মকান্ড উস্কে দেয়া হয়। কংগ্রেস সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় হিন্দু মহাসভা, আরএসএস ও আর্য সমাজ এতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। ১৯৪৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তেলেঙ্গগনায় কম্যুনিস্ট বিদ্রোহ দমনের অজুহাতে অপারেশন পোলোর নামে ভারতীয় সৈন্যবাহিনী হায়দ্রাবাদে আক্রমণ চালায়। এ আক্রমণ শুরুর আগেই সেনাপ্রধান আল ইদরুসকে কিনে নেয় ভারত। আল ইদরুস দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত অরক্ষিত রাখে, সেনাবাহিনীকে করে রাখে অপ্রস্তুত। ভারত আল ইদরুসের সহায়তায় হায়দ্রাবাদে তার বিপুল সেনাশক্তি, পদাতিক বাহিনী ও বিমান বাহিনীসহকারে শুরু করে সামরিকভাবে আক্রমণ। প্রথমে ট্যাংক বাহিনী আক্রমণ শুরু করে। এরপর বিমান বাহিনী বোমাবর্ষণ করে বিভিন্ন বিমানবন্দর ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে। ভারতীয় বাহিনীর সাথে একাত্ম হয়ে আর্য সমাজ ও অন্যান্য হিন্দু মৌলবাদী সংগঠন হায়দ্রাবাদে প্রায় দুই লাখ মুসলিমদের উপর নির্বিচারে গণহত্যা চালায়। ভারতীয় সৈন্যবাহিনী মুসলিম নিরীহ নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ, বৃদ্ধা, শিশুদের হত্যা করেছে, বিমান দিয়ে বোমা বর্ষণ করে শহর বন্দর গ্রাম গুঁড়িয়ে দেয়া হয় এবং মসজিদ, মাদ্রাসা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর ভারতীয় বাহিনী রাজধানী দখল করে। হায়দ্রাবাদকে অন্ধ্র, কর্ণাটক ও মহারাষ্ট্র এই তিন রাজ্যে বিভক্ত করা হয়। ৭২ বছর পরে এসে মোদী সরকার একে একে মুসলিমদের সকল অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সা¤প্রদায়িক বিষবাস্প ছড়াচ্ছে। ভারতকে সা¤প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী ভারতে পরিণত করেছে।



 

Show all comments
  • Jack Ali ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১:১৫ পিএম says : 0
    Munafiq are pandemic in our muslim socities as such our own government is killing us and also kafir.. now majority Munafiq are every corner in our societies. Days are not far away when India and Mayanmar will invade our Beloved Country and they will kill us also they will rape our mother and daughter. O'Mulim wake up and repent to Allah and establish the Law of Allah. Allah will instil fear to the heart of Kafir and Allah will save us from their hand.
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন