Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সমাধানে মাওয়া যাচ্ছেন ২ সচিবসহ কর্মকর্তারা

পদ্মা সেতু রেলের ডিজাইনে ত্রুটি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:৪৯ এএম

পদ্মাসেতুর রেলসংযোগ প্রকল্পের ডিজাইনে যে ত্রুটি ধরা পড়েছে তার সমাধান খোঁজা শুরু হয়েছে। এর অংশ হিসেবে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশে এখন সরেজমিন পরিদর্শনে যাচ্ছেন রেল সচিব, সেতু সচিব, পদ্মা রেলসংযোগ ও মূলসেতু প্রকল্পের দুই পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের পরিচালক গোলাম ফখরুদ্দিন জানান, তারা সবাই পদ্মাসেতু সরেজমিন পরিদর্শনে যাচ্ছেন। উদ্দেশ্য- রেললাইন ডিজাইনের ক্রটির একটা সমাধান বের করা। তবে তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি ঠিক কখন তারা রওনা দিচ্ছেন।

তবে রেল মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, সম্ভাব্য দিন হিসেবে রেল সচিব আজ শুক্রবার পদ্মাসেতু এলাকা পরিদর্শনে যেতে পারেন। দিনভর তিনি পদ্মাসেতু এলাকায় প্রকল্পের কর্মকর্তা, প্রকৌশলী ও চীনা ঠিকাদারদের সঙ্গে কাটাবেন। এছাড়া আর সেতু সচিব বেলায়েত হোসেনের নেতৃত্বে ওই বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেখানে থাকবেন বলে জানা গেছে। পদ্মাসেতুর দুই প্রান্তে রেললাইনের কারণে ট্রাক, ট্যাংকলরিসহ বেশি উচ্চতার যানবাহনের যাতায়াতে যেন বিঘœ সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে একটি সমাধান খুঁজবেন তারা। গণমাধ্যমে কথা বলার ওপর বিধি-নিষেধ থাকায় রেল মন্ত্রণালয়ের কেউ কথা বলতে চান না। তারপরও নাম প্রকাশ না করার শর্তে মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের ভুলের দায় নিতে চায় না সেতু কর্তৃপক্ষ এমনটা আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্য রেলসংযোগ প্রকল্প তাদের ডিজাইন পরিবর্তন করবে। সেক্ষেত্রে কী ধরনের ইঞ্জিনিয়ারিং সমাধান করা যায় তা নিয়ে বৈঠক হবে পদ্মা পাড়ে। আগামী বছরের ডিসেম্বরে পদ্মাসেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হওয়ার কথা। করোনা ও বন্যার কারণে কাজে কিছুটা ভাটা পড়লেও এখন চলছে পুরোদমে। কিন্তু নতুন করে রেললাইন ডিজাইনে মারাত্মক ‘ত্রæটি’-ই পদ্মাসেতু চালুর ক্ষেত্রে এখন বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে সেতুর সব স্প্যান বসিয়ে দেওয়ার শতভাগ প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। প্রায় চার মাস পর আগামী সপ্তাহে মাওয়ার দিকে সেতুর ৩২তম স্প্যান বসানো হবে। কিন্তু এখন পদ্মা রেলসংযোগ প্রকল্পের ডিজাইনের ভুলে সেতু দিয়ে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান চলাচল নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। সেতুর দুই প্রান্তে রাস্তার ওপর দিয়ে টানা হচ্ছে রেললাইন। কিন্তু লাইনের উচ্চতা এত কম যে নিচের হেডরুম দিয়ে বেশি উচ্চতার যানবাহন সেতুতে ওঠানামা করতে পারবে না। ডিজাইনের ত্রæটি ধরার পর রেল সংযোগ প্রকল্প কাজ আপত্তি দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্পের শুরুতে রেলওয়েকে ডিজাইন দেওয়ার পরও তারা মারাত্মক এই ভুল করেছে। এর দায় সেতু কর্তৃপক্ষ নেবে না।

মূল পদ্মাসেতুর ভেতরে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণ কাজ করছে সেতু কর্তৃপক্ষ। এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি। তবে সমস্যা তৈরি হয়েছে সেতুর দুই পাড়ের রেললাইন নিয়ে, যা ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত এবং মাওয়া থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ওই পারের জাজিরা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত বিস্তৃত। এটি পদ্মা রেললিংক প্রকল্প নামে পরিচিত, যার কাজ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রæপ। পদ্মাসেতু সূত্র জানায়, সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। দুই পাশের কিছু অংশে রেললাইন ওপর দিয়ে গেছে। এসব জায়গায় হেডরুম যে উচ্চতায় দেওয়ার কথা, সেটি দেয়নি রেলওয়ে। এ অবস্থায় সেতুতে ওঠানামা করতে পারবে না বড় ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান।

হরিজন্টাল ও ভার্টিক্যাল- দুটো দিকেই রেলওয়ের কাজে আপত্তি দেওয়া হয়েছে। দেশের সড়কপথের হেডরুম স্ট্যান্ডার্ড হলো—-হরিজন্টাল ১৫ মিটার, ভার্টিক্যাল ৫ দশমিক ৭ মিটার, যা এখানে মানা হয়নি। এ অবস্থায় সেতুতে ট্রাক কাভার্ড ভ্যানও দুই তলা বাস যেতে পারবেনা। দেশে মহাসড়কগুলোতে নিয়ম অনুযায়ী হেডরুম উচ্চতা রাখতে হয় সর্বনি¤œ ৫ দশমিক ৭ মিটার। কিন্তু পদ্মা রেললিংক প্রকল্পে মাত্র ৪ দশমিক ৮ মিটার উচ্চতা দেওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পদ্মা সেতু

১১ জানুয়ারি, ২০২৩
৩১ অক্টোবর, ২০২২
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২
২৬ আগস্ট, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ