Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত নেবে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ১২:০০ এএম

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, তবে কেন্দ্রীয়ভাবে কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত না নিয়ে এখন করোনা পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দেয়া হয়েছে। স্কুল-কলেজে পরীক্ষা বাকি আছে এগুলো নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এগুলো এখন করোনার লেটেস্ট যে সার্কুলার তাতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে দিয়েছি। কারণ এখন আর কেন্দ্রীয়ভাবে এত বড় বিধি-নিষেধ দেয়ার মতো অবস্থা নেই।
গত ১০-১২ দিন আগে জার্মানিতে কথা বললাম তারা সব ওপেন করে দিচ্ছে। যদিও ধরা পড়ছে। কিন্তু কী করবে, কতদিন আর বন্ধ রাখা যাবে। এজন্য এখন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওপর দিয়ে দিয়েছি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ খোলার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা করছে, কীভাবে করা যায়। কওমি মাদরাসা খুলে দেয়া হয়েছে।

গত ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর গত ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। তবে অনলাইনে পাঠদান চলছে। কবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে সেই অপেক্ষায় শিক্ষার্থীরা। এরই মধ্যে পিইসি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। এ অবস্থায় সংসদ টিভি, বেতার ও অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এইচএসসি পরীক্ষাও স্থগিত রেখেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, স্থানীয় সরকার (সিটি কর্পোরেশন) আইন, ২০২০-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সিটি করপোরেশনের মেয়র-কাউন্সিলরদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ছয় মাস নয়, তিন মাস আগেই নির্বাচন করতে হবে। একই সঙ্গে মেয়র-কাউন্সিলরদের ছুটি তিন মাস থেকে কমে এক মাস করা হচ্ছে। এমন বিধান রেখে স্থানীয় সরকার (সিটি করপোরেশন) (সংশোধন) আইন, ২০২০ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সর্বশেষ ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত দুই মেয়রকে শপথ নেয়ার পরও দায়িত্ব পেতে দীর্ঘদিন অপেক্ষা করতে হয়েছিল। কারণ তখনও আগের মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ শেষ হয়নি।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, দেখা গেছে বাস্তবে (সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী) কাজ করতে গেলে কিছু অসুবিধা হয়। এখন নিয়ম রয়েছে, (মেয়াদোত্তীর্ণের আগে) ছয় মাসের (১৮০ দিন) মধ্যে নির্বাচন করতে হবে। অন্যদিকে রয়েছে যেদিন তারা (মেয়র ও কাউন্সিলর) মিটিং করবে সেই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত তাদের সময় থাকবে। দেখা গেছে, চার-পাঁচ মাস আগে যদি নির্বাচন হয়ে যায়, শপথ হলেও তারা দায়িত্ব নিতে পারতেছে না এই শর্তের জন্য। মেয়াদ পূর্ণ না হাওয়ায় অনেক দিন তাদের অপেক্ষা করতে হয়।

তিনি বলেন, নির্বাচন তো বটেই, শপথ নেয়ার পরও তাদের অপেক্ষা করতে হয়। সেজন্য এটাকে একটু পরিবর্তন করা হয়েছে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন শেষ করতে হবে। যেদিন শপথ হবে এর ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর হয়ে যাবে। নতুন এ ব্যবস্থায় মেয়র ও কাউন্সিলরদের মেয়াদ থাকার পরও কি তাদের পদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে এমন প্রশ্বের জবাবে সচিব বলেন, হ্যাঁ, বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কারণ এখন তো আর ১৮০ দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। এতে ১৫ বা ১০ দিনের একটা ভেরিয়েশন মেয়াদের চেয়ে কম হয়। আগে তো তিন থেকে সাড়ে তিন মাস বসে থাকতে হতো। নতুন আইনে বলা হচ্ছে- মেয়াদ সম্পর্কে আইনে যা-ই থাকুক, নতুন পরিষদ যেদিন থেকে শপথ নেবে তার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রথম মিটিং করবে এবং সেদিন থেকেই আগের পরিষদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে।

৫ কেজির বেশি ড্রোন ওড়াতে অনুমতি লাগবে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সামরিক বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজন ছাড়া পাঁচ কেজির বেশি ওজনের ড্রোন ওড়াতে অনুমতি লাগবে। এ বিষয়ে বাধ্যবাধকতা রেখে ড্রোন নিবন্ধন ও উড্ডয়ন নীতিমালা-২০২০ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা চলছিল ড্রোন কি সবাই তার ইচ্ছামতো পরিচালনা করতে পারবে, না এগুলোর জন্য কোনো রেগুলেশন প্রয়োজন আছে। এটা নিয়ে ৭-৮ মাস ধরে আলোচনা ও মিটিং করে বিশেষজ্ঞসহ সবার মতামত নিয়ে চারটা শ্রেণি করে দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, বিনোদন বা খেলার জন্য এবং সামরিক বা রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহারে অনুমতি লাগবে না। সিভিল অ্যাভিশেয়ন কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট করে দেবে কার কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। ছেলেমেয়েরা খেলনা হিসেবে ব্যবহার করবে। এটার ওজন অবশ্যই পাঁচ কেজির নিচে হতে হবে। পাঁচ কেজির বেশি হলে এটা আর বিনোদনের মধ্যে পড়বে না।

ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা স¤প্রসারণে ভুটানের সঙ্গে অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি (পিটিএ) করতে বাংলাদেশ ও দেশটির মধ্যে স্বাক্ষরের জন্য একটি অগ্রাধিকার বাণিজ্য চুক্তি খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এটা নিয়ে অনেক দিন ধরে আলোচনা হচ্ছিলো। ২০১০ সাল থেকে ভুটানকে ১৮টি পণ্যে শুল্কমুক্ত বাজার দিচ্ছি। আর বাংলাদেশের ৯০টি পণ্য ভুটানে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাচ্ছে। পরবর্তী সময়ে ভুটান আরও কিছু শুল্কমুক্ত সুবিধা চাওয়ায় দুই দেশের দ্বিপক্ষিক অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।

তিনি বলেন, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ২০১৯ সালের ১২-১৫ এপ্রিল বাংলাদেশ সফরকালে দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ২১-২৩ আগস্ট দেশটির থিম্পুতে বাংলাদেশ-ভুটানের মধ্যে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে মিটিং হয়। গত ১৯ জুন দ্বিতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব আলোচনা ও মিটিংয়ের মাধ্যমে একটা দিক-নির্দেশনা সাপেক্ষে পিটিএ ড্রাফট করে তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়। তা মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিমান কপোরেশন (রহিতকরণ) আইন, ২০২০ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ