মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
লকডাউনের কারণে ভারতে করোনা সংক্রমণ না কমলেও অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ভারতের অর্থনীতি নজিরবিহীন ভাবে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে, যেটা গত চল্লিশ বছরে হয়নি। সোমবার প্রকাশিত এক সরকারি পরিসংখ্যান থেকে এই তথ্য জানা গেছে। এদিকে, চীনের উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে ও তাদের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হয়েছে।
বস্তুত, অর্থনীতির এতটা গভীর সঙ্কোচন ভারতের স্বাধীনতার পরেই আর কখনও হয়নি। এর পর জুলাই-সেপ্টেম্বরেও যদি অর্থনীতির সঙ্কোচন জারি থাকে, যার সম্ভাবনা খুব বেশি, তা হলে ভারত সরকারি ভাবে অর্থনৈতিক মন্দায় পড়বে। রেটিং সংস্থা ক্রিসিলের আশঙ্কা, ‘স্বাধীনতার পর চতুর্থবার মন্দার সম্মুখীন ভারত এবং এই মন্দা হয়তো সবচেয়ে তীব্র হবে।’ সংস্থাটি মনে করে, পরের ত্রৈমাসিকগুলিতে অর্থনীতি যদি খানিকটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে তা হলেও পুরো অর্থবছরে ভারতীয় অর্থনীতি ৫ শতাংশ সঙ্কুচিত হতে পারে।
করোনা মহামারি ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউনের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্পোৎপাদন হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে যায়। ১ জুন থেকে ধীরে ধীরে লকডাউন ওঠা শুরু হলেও ব্যবসা-বাণিজ্য, কলকারখানায় উৎপাদন, কর্মসংস্থান তৈরিতে তেমন গতি আসেনি। সোমবারের পরিসংখ্যান থেকেই স্পষ্ট, কৃষি ছাড়া বাকি সব শিল্প ক্ষেত্রেই, বিশেষ করে ম্যানুফ্যাকচারিং বা কলকারখানায়, উৎপাদন কমেছে আশাতীত। শুধুমাত্র কৃষিক্ষেত্রেই ৩ দশমিক ৪ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ, বৃষ্টি ও চাষ ভালো না-হলে, দেশটির অর্থনীতি আরও সঙ্কুচিত হত।
এই পরিসংখ্যান থেকে আরও একটা বিষয় উঠে আসে। সেটা হল, অর্থনীতিতে করোনা মহামারীর প্রভাব কমাতে কেন্দ্রীয় সরকার পাঁচ দফায় মোট ২১ লাখ কোটি টাকার যে আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছিল, অর্থনীতিতে তার কোনও উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েনি। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হল, গত বেশ কিছু মাস ধরে মানুষের ভোগব্যয় কমছে এবং গত এপ্রিল-জুন মাসে ওই ব্যয় অর্ধেকের বেশি (৫৪ দশমিক ৩ শতাংশ) কমে গিয়েছে। অথচ, ২০১৯ সালের ওই ত্রৈমাসিকে ভারতে ভোগব্যয় বেড়েছিল ৫৬ দশমিক ৪ শতাংশ। আয়, কর্মসংস্থান হারিয়ে মানুষ ভোগব্যয় কমানোর ফলে বাজার থেকে ক্রেতাচাহিদা কমে গিয়েছে। গাড়ি-বাড়ির মতো অত্যাবশ্যক নয় এমন পণ্যের বিক্রি কমেছে সবচেয়ে বেশি। এর থেকেই বোঝা যায়, অর্তনৈতিক সঙ্কট সাধারণ মানুষের উপরে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে।
এদিকে, গতকাল প্রকাশিত একটি বেসরকারী জরিপে দেখা গেছে, আগস্টে চীনের উৎপাদন কার্যক্রম গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত গতিতে প্রসারিত হয়েছে। এই তথ্য সামনে আসার পরে এশিয়ার শেয়ার বাজারে বড় উত্থান দেখা যায়। সোমবার চীনের সরকারি জরিপেও বলা হয়েছে, চীনের কারখানাগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা ধীরে ধীরে বেড়েছে।
উভয় জরিপেই দেখা গেছে চীনের রফতানি বেড়েছে ও অর্থনীতি সম্প্রসারিত হয়েছে। চীনের শেয়ারবাজারও আরও চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। সাংহাই কম্পোজিটের মূল্য ০ দশমিক ৪৪ শতাংশ ও শেনঝেন কম্পোনেন্টের মূল্য ০ দশমিক ৬৬৫ শতাংশ বেড়েছে। আগস্ট মাসের জন্য কক্সিন/মার্কিট ম্যানুফ্যাকচারিং পারচেজিং ম্যানেজারস’ ইনডেস্কের (পিএমআই) জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পরেই চীন ও এশিয়ার শেয়ার বাজারে এই উত্থান দেখা যায়।
অর্থনীতি শক্তিশালী হওয়ার পাশপাশি মার্কিন ডলারের বিপরীতে চীনের ইউয়ানের বিনিময় মূল্যও বেড়েছে। মঙ্গলবার চীনা ইউয়ানের বিনিময় মূল্য ছিল ডলার প্রতি ৬ দশমিক ৮২৫। আগেরদিন ডলারপ্রতি বিনিময় মূল্য ছিল ৬ দশমিক ৮৪ ইউয়ান। পিএমআই জরিপ থেকে বোঝা যাচ্ছে, করোনাভাইরাস মহামারী থেকে চীন অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সফল হয়েছে। সূত্র : টিওআই, রয়টার্স, সিএনবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।