বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
করোনাভাইরাসের মধ্যে সবকিছু খুলেছে। বন্যার পানিও কার্যত চলে গেছে। তারপরও স্বস্তি দিচ্ছে না কাঁচাবাজার। বাজার করতে গিয়ে দাম বৃদ্ধির কারণে অস্বস্তিতে পড়ছেন শ্রমজীবী মানুষ।
বন্যার কারণে কাঁচাবাজারের প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়ে যায় দুই মাস আগে। এখন পর্যন্ত রাজধানীর বাজারগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। দাম তো কমছেই না, উল্টো এখন নতুন করে কিছু সবজির দাম বেড়েছে। ফলে বেশিরভাগ সবজির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকার ওপরে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে ৪ জনের সংসারের জন্য একদিনেই লাগছে একশ’ টাকার সবজি।
রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শাক ও কাঁচা মরিচ। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ভালো মানের কাঁচা মরিচের কেজি ২৫০ টাকা থেকে তিনশ’ টাকা। আর যে কোনো শাকের আঁটি কিনতে খরচ হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। শাক-সবজি, কাঁচা মরিচের এমন চড়া দাম বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছে নিম্ন আয়ের মানুষকে। এমনকি মধ্যবিত্তরাও অস্বস্তিতে ভুগছেন। এদিকে করোনা মহামারিতে আয় কমে যাওয়া, অন্যদিকে পণ্যের চড়া দামের কারণে রাজধানীর বেশিরভাগ মানুষকেই ভুগতে হচ্ছে। অবশ্য শাক-সবজির চড়া দামের বাজারে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে ব্রয়লার মুরগি। বাজারভেদে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকা। এতে কিছু কিছু সবজির তুলনায় ব্রয়লার মুরগি কম দামেই পাওয়া যাচ্ছে।
গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়। এক কেজি গাজর কিনতেও একশ’ টাকা গুণতে হচ্ছে। বাজারভেদে গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০-১১০ টাকা। গত সপ্তাহেও সবজি দুটি এমন চড়া দামে বিক্রি হয়। শুধু টমেটো ও গাজর নয়, একশ’ টাকা কেজি স্পর্শ করেছে করলা, বেগুন, বরবটি। আগের সপ্তাহের মতো করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে বেগুন। গত সপ্তাহে ৭০-৯০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ৮০-১০০ টাকা হয়েছে। দাম বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে চিচিঙ্গা, পটল, ঢেঁড়স। গত সপ্তাহে ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিচিঙ্গার দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে। ৫০-৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পটল ও ঢেঁড়সের দাম বেড়ে ৬০-৭০ টাকা হয়েছে।
বিক্রেতারা জানান, আগের সপ্তাহের মতো কচুর লতি ৬০-৭০ টাকা, কাকরোল ৬০-৭০ টাকা, কচুর মুখি ৫০-৬০ টাকা, ধুন্দুল ৬০-৭০ টাকা, লাউয়ের পিস ৬০-৭০ টাকা, জালির পিস ৪০-৫০ টাকা, পেঁপের কেজি ৪০-৪৫ টাকা এবং কাঁচা কলার হালি ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু ও ডিম। এক কেজি আলুর জন্য ৩৫-৪০ টাকা খরচ করতে হচ্ছে। আর এক ডজন ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকা।
যাত্রাবাড়ি পাইকারি বাজারে সবজি কিনতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সোহেল রানা বলেন, দুই ছেলে-মেয়ে, মা-বাবাসহ আমাদের ৬ জনের সংসার। মহল্লার বাজারে সবজির যে দাম, দেড়শ’ টাকার সবজিতে একদিনও হয় না। তাই বেশি করে সবজি কিনতে এখানে আসা। কিন্তু লাভতো তেমন দেখছি না। এখানেও দাম প্রায় মহল্লার সমান। বরং রিকশা ভাড়া যোগ করলে দেখা যাবে খরচ আরও বেশিই পড়ছে।
এদিকে বিভিন্ন বাজারে লাল শাক, সবুজ শাক, কলমি শাকের পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে পুঁইশাক। পুঁইশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৪৫ টাকা। আর লাল শাক, সবুজ শাক ও কলমি শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা। শাক-সবজির এমন চড়া দামের বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী ইব্রাহিম বলেন, বন্যা ও পানিতে খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় শাক-সবজির দাম এমন বেড়েছে। এছাড়া দাম বাড়ার পেছনে অন্য কোনো কারণ নেই। কারণ শাক-সবজি এমন পণ্য যা মজুদ করে দাম বাড়ানোর সুযোগ নেই। তিনি বলেন, সবজির দাম বাড়ায় আমাদের বিক্রিও কমেছে। আগে যারা কেজি কেজি সবজি কিনতেন, এখন তারা আধা কেজি করে কিনছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।