পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনা সংক্রমণ রোধে সারা দেশে চলছে কঠোর লকডাউন। এর মধ্যেই পবিত্র রমজানের শুরু। রমজানকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম এমনিতেই কয়েক দফা বাড়িয়েছে। এবার লকডাউনের অজুহাতে রমজানের শুরুতেই বেড়েছে সবজির দাম। গত সপ্তাহের তুলনায় প্রতিটি সবজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকা। সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছে বেগুন, শসা ও বরবটি। রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে এগুলো ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য সবজিও অনেক চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।
লকডাউনে রাজধানীর সড়কগুলো ফাঁকা হলেও গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই কাঁচা বাজারগুলোতে ছিল ক্রেতাদের অস্বাভাবিক ভিড়। বিশেষ করে রাজধানীর আলোচিত কাঁচাবাজারের কাওরান বাজারে ক্রেতারা যেন হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। কঠোর লকডাউনের কোনো ছিটেফোঁটাও দেখা যায়নি কাঁচাবাজারে। স্বাস্থ্য বিধির কোনো বালাই ছিল না, কাওরান বাজারসহ রাজধানীর অন্যান্য বাজারে। সবজির বাজারে দেখা গেছে, মান ও বাজার ভেদে গতকাল বেগুনের কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে বেশিরভাগ বাজারে বেগুনের কেজি ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।
খিলগাঁও রেলগেইট বাজারে ১২০ টাকা কেজি বেগুন বিক্রি করা আলম বলেন, রোজার প্রথম দিন থেকে বেগুনের দাম বেড়েছে। প্রথম রোজায় বেগুনের কেজি ৮০ টাকা বিক্রি করেছি। লকডাউনের কারণে বাজারে আমদানি কম। এ জন্য পাইকারিতে দাম বাড়ায় আজ ১২০ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে।
ফকিরাপুল টিএন্ডটি কলোনি বাজারে ১০০ টাকা কেজি বেগুন বিক্রি করেন ছবুর মিয়া। তিনি বলেন, যেভাবে বেগুনের দাম বাড়ছে তাতে কেজি দেড়শ’ টাকা হলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই। দাম বাড়লেও এক শ্রেণির ক্রেতারা ঠিকই বেগুন কিনছেন। আবার কেউ কেউ বেগুনের দাম শুনেই চলে যাচ্ছেন। সবকিছু ভেবে-চিন্তেই বেগুন এনেছি। দাম বেশি তাই কম করে এনেছি। অন্য সময় ২০/৩০ কেজি বেগুন বিক্রি করেছি। এখন মাত্র পাঁচ কেজি এনেছি।
গত সপ্তাহে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাটার দাম বেড়ে ৭০ থেকে ৮০ টাকা হয়েছে। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে পটল, বরবটি, শিম, ঢ্যাঁড়স, টমেটোসহ অন্যান্য সবজিগুলোও।
বরবটি এবং ঢ্যাঁড়সও মান এবং বাজার ভেদে ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে বরবটি ও ঢ্যাঁড়স বিভিন্ন বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। পটলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ থেকে ৬০ টাকা। ৪০ টাকা কেজিতে নেমে আসা শিমের কেজি আবার ৬০ টাকায় উঠেছে। ৪০ থেকে ৫০ টাকা পিস বিক্রি হওয়া লাউয়ের দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা। ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া চিচিংঙা ও ধুন্দুলের দাম বেড়ে ৬০ থেকে ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটোর দাম বেড়ে ৪০ থেকে ৫০ টাকা হয়েছে।
সবজির পাশাপাশি দাম বেড়েছে শাকের। বাজার থেকে এখন শাক এক আঁটি কিনতে ১৫ টাকা বা তার বেশি গুণতে হচ্ছে। পালং শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে- লাল শাক, সবুজ শাক, পাট ও কলমি শাক। পুঁইশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
সবজির দাম নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করে শাহজাহানপুরের বাসিন্দা মোবারক বলেন, রোজাকে হাতিয়ার করে ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম বাড়ি দিয়েছে। এই মহামারির মধ্যেও ব্যবসায়ীরা এই অনৈতিক কাজ করছে। আল্লাহ এই জাতির উপর গজব দেবে না তো আর কার উপর দেবে।
খিলগাঁও রেল গেইট থেকে বাজার করে ফিরছিলেন মোবারক। তিনি আরও বলেন, বাজারে কারো কোনো তদারকি নেই। এ কারণে মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীরা সবকিছুর দাম ইচ্ছামত বাড়াচ্ছে। এখন লকডাউনের অজুহাতে আমদানি কম বলে দাম বাড়াচ্ছে। ওদের অজুহাতের কোনো অভাব নেই। সংশ্লিষ্টদের উচিত দ্রæত বাজার তদারকি করা। তা না হলে কষ্টে থাকা মানুষের কষ্ট আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।
খিলগাঁও বাজারের সবজি বিক্রেতা জালাল বলেন, সবাই ভাবে আমরা সবজির দাম বেশি রাখছি। এটা ঠিক না। আড়তে গেলেই বুঝতে পারবেন সবজির দাম কি হারে বেড়েছে। লকডাউনে আমদানি কম বলে আড়তদাররা সব মালের দাম বাড়িয়েছে। আমাদের অনেক বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। আমরা অল্প লাভেই সবজি বিক্রি করেছি। আড়তে দাম বাড়লে তো আমাদের কিছু করার নেই।
সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হলেও সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৬০ থেকে ১৬৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগির দাম কমলেও পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি ও লাল লেয়ার মুরগির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২৬০ থেকে ৩০০ টাকা। আর লাল লেয়ার মুরগির কেজি বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি।
এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা। গত সপ্তাহে এই পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকায়। চালের দাম তেমন বাড়েনি। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হয়েছে ৬২ থেকে ৬৩ টাকা, নাজিরশাইল বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৬ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, স্বর্ণা (পাইজাম) বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা, আটাশ বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫২ টাকা। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানিকৃত চাল বিক্রি হয়েছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা কেজি।
অপরিবর্তিত আছে ভোজ্যতেল। পুষ্টি ব্র্যান্ডের ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হয়েছে ৬৩০ টাকা, রূপচাঁদা ৬৪০ টাকা, বসুন্ধরা ৬৪০ টাকা, তীর ৬৪০ টাকা, মুসকান ৬২০ টাকা। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১২০ টাকা লিটার এবং পাম ১০৫ টাকা লিটার বিক্রি হয়েছে। ছোলা প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা, চিনি ৭০ টাকা, মসুর ডাল চিকন ১০৫ টাকা, মোটা মসুর ডাল ৭০ টাকা এবং মুগ ডাল ১৩৫ টাকা কেজি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।