Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কুয়াকাটায় আবাসিক হোটেলে ৮শ্রেণীর শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : ২৬ আগস্ট, ২০২০, ৪:০১ পিএম

প্রলোভনে পরে বন্ধুর সাথে কুয়াকাটায় বেড়াতে গিয়ে বরগুনা জেলার আমতলী পৌরসভার এ কে স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী লাবনী আকতার মীম গনধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ঘটনায় মীমের মা সাবিনা বেগম বাদী হয়ে অপহরণ ও গনধর্ষণের অভিযোগ এনে আমতলী থানায় মঙ্গলবার দুপুরে একটি মামলা দায়ের করেছে। এ গণধষণের সাথে জড়িত মীমের বন্ধু জিসান ওরফে সোহেল (১৮) ও ভাড়াটিয়া মটরসাইকেল চালক সাগর (২১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল রাজু ও সাগর নীড় হোটেলে এ গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, পটুয়াখালী জেলার মহিপুর থানা সদর ইউনিয়নের সেরাজপুর গ্রামের বাদশা গাজীর পুত্র জিসান ওরফে সোহেল এর সাথে মোবাইলে কথোপোকথনের মাধ্যমে মীমের বন্ধুত্ব হয়। মীমের সাথে জিসানের প্রায় সময়ই মোবাইলে কথা হয়। এক পর্যায়ে জিসান মীমের সাথে দেখা করার প্রস্তাব দেয়। সোমবার শেষ বিকেলে জিসান মীমের সাথে দেখা করতে আমতলী পৌর এলাকার মীমের বাসা সংলগ্ন সকাল সন্ধা হোটেলের সামনে গিয়ে ফোন করে। মীম বাসা থেকে বেড়িয়ে জিসানের সাথে দেখা করে। এসময় জিসান তার সাথে ঘুরতে যাবার আবদারে অটো রিক্সায় টেনে তুলে খুড়িয়ার খেয়াঘাটের দিকে নিয়ে যায়। সেখানে আগে থেকেই প্রস্তুত রাখা ভাড়াটিয়া মটরসাইকেলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই টেনে তুলে। এসময় মীম আপত্তি তুললেও মটরসাইকেল চালক দ্রুতগতিতে চালিয়ে মীমকে কুয়াকাটায় নিয়ে যায়।
রাত আটটার দিকে কুয়াকাটা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত আবাসিক হোটেল রাজু’র ২০৩ নম্বর কক্ষে উঠায়। সেখানে জিসান ওরফে সোহেল (১৮) ও সাগর (২১) সহ ৫জনে মিলে প্রথম দফায় ধর্ষণ করে মীমকে। হোটেলে ওঠার এক ঘন্টা পর হোটেল রাজু’র কক্ষ থেকে মীমকে নিয়ে বেড়িয়ে যায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে জেলা পরিষদ ডাক বাংলো সংলগ্ন আবাসিক হোটেল সাগর নীড়’র নীচ তলায় এ-ফোর ও এ-ফাইভ নামে দু’টি কক্ষ ভাড়া নিয়ে রাতভর পাঁচ যুবক মিলে ধর্ষণ করে মীমকে। সকালে মীমকে পরিবহনে আমতলী পাঠিয়ে দেয়। মীম সেখান থেকে বাড়িতে গিয়ে মায়ের কাছে এঘটনা জানায়।

এঘটনায় মীমের মা আমতলী সরকারী কলেজের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী সাবিনা বেগম বাদী হয়ে অপহরণ ও গনধর্ষণের অভিযোগ এনে আমতলী থানায় মঙ্গলবার দুপুরে একটি মামলা দায়ের করে। আমতলী থানার ওসি তদন্ত মোঃ হেলাল উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ওইদিন বিকেলে মীমকে নিয়ে আসামীদের ধরতে অভিযানে নামে। অভিযান কালে মীমের সনাক্ত মতে আমতলী পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের সানু হাওলাদারের পুত্র ভাড়াটিয়া মটরসাইকেল চালক সাগর (২১) কে গ্রেফতার করে। এরপর পটুয়াখালীর মহিপুর থানা সদর ইউনিয়নের সেরাজপুর গ্রামের বাদশা গাজীর পুত্র জিসান ওরফে সোহেল (১৮) গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃত দুই ধর্ষক ও মীমকে নিয়ে সন্ধায় কুয়াকাটায় আবাসিক হোটেল রাজু ও সাগর নীড় হোটেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সেখানে হোটেলের গেষ্ট রেজিস্টার জব্দ করে। এবং হোটেলের ম্যানেজার ও স্টাফদের সাথে কথা বলে অভিযোগের সত্যতা পান।

পুলিশ আরও জানান, আবাসিক হোটেল সাগর নীড়’র গেষ্ট রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ রুম ও নামের সাথে কোন মিল নেই। সেখানে মীমের নাম রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। এবং দুই রুমে মীম সহ ৬জনে অবস্থান করলেও সেখানে রেজিষ্টারে ১জনের নাম রয়েছে, কক্ষ নম্বর দেখানো হয়েছে বি-ফোর ও বি-ফাইভ। ওই হোটেলের গেষ্ট রেজিষ্টারে কোন ধরনের নিয়মকানুন মানা হয়নি।

আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, লাবনী আকতার মীম’র মা বাদী হয়ে অপহরণ ও গনধর্ষণের অভিযোগে আমতলী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়া গেছে। মীমের সনাক্ত মতে দুই ধর্ষককে আটক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে বাকী আসামীদের চিহ্নিত করণ ও গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মীমকে ডাক্তারী পরিক্ষার জন্য পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

 



 

Show all comments
  • মোঃ আঃ মোমিন সেখ ২৬ আগস্ট, ২০২০, ৪:৩৭ পিএম says : 0
    Akhane meyetar kisu did ase
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গণধর্ষণ


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ