পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ভারতের এই অঞ্চলে একতরফা সিদ্ধান্তের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানের ‘নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র’ ছিল সময়ের প্রয়োজন। হালনাগাদ করা মানচিত্রে পাকিস্তান সুস্পষ্টভাবে জম্মু ও কাশ্মীরকে বিরোধপূর্ণ ভূখন্ড হিসেবে প্রদর্শন করে ভারতের অনুচ্ছেদ ৩৭০ ও ৩৫ক বাতিলকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাছাড়া জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের আলোকে জম্মু ও কাশ্মীরের ভাগ্য নির্ধারণে দাবিও জানিয়েছে। জাতির উদ্দেশে দেয়া গত ৪ আগস্টের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কাশ্মীরী জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রনাধিকার দিতে আবারো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের কথা বলেছেন। তিনি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করেন যে আমরা রাজনৈতিক সংগ্রামের মাধ্যমে কাজ করব, আমরা সামরিক সমাধানে বিশ্বাসী নই। আমরা বারবার জাতিসংঘকে মনে করিয়ে দেব যে কাশ্মীরী জনগণের কাছে আপনাদের একটি প্রতিশ্রুতি রয়েছে, যা এখনো পূরণ করা হয়নি। নতুন মানচিত্র অনুযায়ী, জম্মু ও কাশ্মীরের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের আলোকে। এ কারণে অবশিষ্ট এলাকা ভারতের দখলদারিত্বে থাকার বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, নতুন মানচিত্রে চূড়ান্তভাবে অ্যাকচুয়াল গ্রাউন্ড পজিশন লাইনের প্রেক্ষাপটে পাকিস্তান ও ভারতের অবস্থান আলাদাকারী এনজে৯৮০৪২০ থেকে কারাকোরাম পাসের বাইরের সম্প্রসারিত এলাকা প্রদর্শন করা হয়েছে। তৃতীয়ত, থলওয়েব তত্তে¡র ভিত্তিতে স্যার ক্রিকের পশ্চিম তীরের ওপর ভারতীয় দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। চতুর্থত, বর্তমান মানচিত্রে কেন্দ্রীয়ভাবে শাসিত ফাটা অঞ্চলকে পাকিস্তানের খাইবার পাকতুনখাওয়ার মধ্যে দেখানো হয়েছে। মানচিত্রটি প্রত্যাখ্যান করে ভারত একে অবৈধ ও আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বাসযোগ্যতাহীন বিষয় হিসেবে অভিহিত করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের বিবৃতি অনুযায়ী, ইসলামাবাদের পদক্ষেপটি আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে ভূখন্ডগত সন্ত্রাসবাদের প্রতি পাকিস্তানের আচ্ছন্নতার বিষয়টিই প্রকাশ করছে। এর জবাবে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতর ভারতের পররাষ্ট্র দফতরের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে অগ্রহণযোগ্য পদক্ষেপগুলোর জন্য ধোয়াশা কিছু করতে পারে না ভারত। ভারতীয় প্রতিক্রিয়া ভ্রান্তি সৃষ্টিকারী ও সেইসাথে ভুল ব্যাখ্যা সৃষ্টি করে। নতুন মানচিত্র পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে জোরদার করেছে, সুস্পষ্টভাবে তার সার্বভৌম দাবিকে চিত্রিত করেছে, দেশের সীমান্তকে তুলে ধরেছে। অধিকন্তু, নতুন মানচিত্র অন্য সব ভুয়া মানচিত্র বাতিল করেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে অনুচ্ছেদ ৩৭০ ও অনুচ্ছেদ ৩৫ক রদ করার পর যেসব মানচিত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে ভারতীয় দখলে থাকা কাশ্মীর ছাড়াও আজাদ কাশ্মীর ও গিলগিট-বাল্টিস্তান, আকসাই চিনকেও ভারতের বলে দেখানো হয়েছে। ভারত ১৯৪৭ সাল থেকে জম্মু ও কাশ্মীরের অংশবিশেষ অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে, অব্যাহতভাবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করে চলেছে। ভারত আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি কর্ণপাত করছে না। বছরের পর বছর ধরে নির্ভীক স্বাধীনতা সংগ্রামকে শান্ত করার চেষ্টায় ভারত সফল হচ্ছে না। অবশ্য পাকিস্তানের অবস্থান স্পষ্ট, দ্ব্যর্থহীন ও ধারাবাহিক। জম্মু ও কাশ্মীর বিরোধের মূলে রয়েছে কাশ্মীরীদের আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার অধিকারের মধ্যে। আর তা হাসিল করতে হবে জাতিসংঘ নির্দেশনা অনুযায়ী। অধিকন্তু, পাকিস্তানের প্রয়োজন হবে বিশ্বের বিভিন্ন রাজধানীতে ভারতের ফ্যাসিবাদী নীলনক্সার বিরুদ্ধে কাশ্মীরীদের শান্তিপূর্ণ সংগ্রামের বিষয়টি নিয়ে যাওয়া আইনপ্রণেতা, মানবাধিকারকর্মী, আন্তর্জাতিক মিডিয়ার কাছে তুলে ধরা। অধিকন্তু পাকিস্তানের ইস্যু করা রাজনৈতিক মানচিত্রটি তার বাধ্যবাধকতাপূর্ণ দায়বদ্ধতার বিষয়টিই প্রকাশ করছে। মডার্ন ডিপ্লোম্যাসি, এসএএম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।