Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাদুরোর সমর্থকরাও ছদ্মবেশে ঢুকে গেছে

অপারেশন গিডিওন-৪

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ আগস্ট, ২০২০, ১২:১১ এএম

যদিও দুজন ভাড়াটে মার্কিন সেনা এই অভিযানে যুক্ত হয়েছে, ২০ জনের মতো ভেনেজুয়েলান তখন দল ছেড়ে চলে গেছে। কারও কারও প্রশিক্ষণ শিবিরের জীবন খুব কষ্টকর বলে মনে হচ্ছিল। কেউ কেউ সন্দেহ করছিল, এই পুরো পরিকল্পনার মধ্যে প্রেসিডেন্ট মাদুরোর সমর্থকরাও ছদ্মবেশে ঢুকে গেছে। তখন সবকিছু ভন্ডুল হওয়ার উপক্রম হলো। এরপর ২৩ মার্চ কলম্বিয়ার কর্তৃপক্ষ একটা লরিভর্তি সামরিক সরঞ্জাম আটক করলো। এর মধ্যে অনেক অ্যাসল্ট রাইফেলও ছিল। তিনদিন পর যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট ফর জাস্টিস জেনারেল ক্লাইভার আলকালার বিরুদ্ধে মাদক-সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ আনলো। তাকে ধরিয়ে দেয়ার জন্য এক কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করা হলো। জেনারেল ক্লাইভার আলকালা আত্মসমর্পন করলেন। তবে এর আগে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করলেন, ভেনেজুয়েলায় যেসব অস্ত্রশস্ত্র ধরা পড়েছে, সেগুলো ভেনেজুয়েলার মানুষের সম্পদ। তিনি আরও দাবি করলেন যে হুয়ান গুয়াইদো, জে. জে. রেনডন এবং মার্কিন উপদেষ্টাদের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল, এই অস্ত্রের চালান তারই অংশ। তবে হুয়ান গুয়াইদোর প্রেসিডেনশিয়াল কমিশন বললো, কথিত এই চুক্তি আর কার্যকর নেই। হারনান এইলম্যান বিবিসিকে বলেন, তার মনে হলো এরমধ্যে কোন একটা ঘাপলা আছে। তার মতে, জেনারেল আলকালাকে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছিল যাতে তাদের অভিযানটিকে ব্যর্থ করে দেয়া যায়। কয়েকটি সূত্রের মতে, বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষণ শিবিরগুলোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র এবং কলম্বিয়া - উভয় দেশের সরকারই বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। তারা ভেবেছিল, জেনারেল আলকালাকে সরিয়ে দেয়া হলে অন্যরাও প্রশিক্ষণ শিবির থেকে চলে যাবে। কিন্তু তারা আসলে যায়নি। আলকালা যখন চলে গেলেন, তখন তার জায়গায় অভিযানের দায়িত্ব নিলেন আন্তনিও সেকুই। তিনি ভেনেজুয়েলার ন্যাশনাল গাডের’ এক সাবেক ক্যাপ্টেন। ভেনেজুয়েলার কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স সংস্থার উচ্চপর্যায়ে একসময় কাজ করেছেন। কিন্তু জর্ডান গাউড্রু কোথায় তখন? তিনি তখন কলম্বিয়ায় নেই..... ‘২০২০ সালের ২৮ মার্চ কিউরাকাউতে আমাদের রেসকিউ এন্ড কোঅর্ডিনেশন সেন্টারে সাহায্য চেয়ে একটি জরুরী বিপদ সংকেত আসলো একটি প্রমোদতরীতে থাকা কিছু লোকের কাছ থেকে। আমরা সাথে সাথে সেখানে একটি উড়োজাহাজ পাঠালাম’, বলছেন ডাচ-ক্যারিবিয়ান কোস্টগাডের’ একজন মুখপাত্র শ্যালিক ক্লিমেন্ট। এই প্রমোদতরীর নাম সিলভারপয়েন্ট। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী এটির মালিক ছিল জর্ডান গাউড্রোর কোম্পানি সিলভারকর্প ইউএসএ। তবে শেষ পর্যন্ত ডাচ ক্যারিবিয়ান কোস্টগাডের’ উড়োজাহাজের সাহায্য দরকার হয়নি তাদের। যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামির কোস্টগার্ড সেটির কাছ দিয়ে যাওয়া একটি ট্যাংকারকে অনুরোধ করে ঐ প্রমোদতরী থেকে দুই মার্কিন নাগরিককে উদ্ধার করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে আসতে। এদের একজন কি জর্ডান গাউড্রু? সিলভারপয়েন্ট নামের প্রমোদতরীটিতে কি অস্ত্র বহন করে কলম্বিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল? মায়ামির কোস্টগার্ড এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়নি, তারা বলেছে উত্তর দেবে এফবিআই। কিন্তু এফবিআই এসব প্রশ্নের উত্তরে কোন মন্তব্য করেনি। এই প্রমোদতরীটি কোথায় আছে, কেউ জানে না। তবে আমরা যতদূর জানি, জর্ডান গাউড্রু কলম্বিয়ায় আর ফিরে যায়নি। করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর তিনি মায়ামিতেই আটকে পড়েন। তবে জর্ডান গাউড্রু যদি সেই প্রমোদতরীর দুই আমেরিকানের একজন হতেন, তাহলো হয়তো অপারেশন গিডিওনের সেদিনই মৃত্যুঘণ্টা বেজে যেত। এর কারণ এই নয় যে এই সাবেক সৈনিক, যিনি নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলে দাবি করতেন, তিনি আর তার সৈনিকদের আর নেতৃত্বে দিতে পারতেন না। কারণটা ছিল ভিন্ন। ভেনেজুয়েলায় তখন যেন একটা বিরাট বোমা ফেটেছে, ফাঁস হয়ে গেছে এই ষড়যন্ত্রের বৃত্তান্ত। সূত্র : বিবিসি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অপারেশন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ