মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যক্ষ্মা প্রতিরোধে ব্যবহৃত ব্যাসিলাস ক্যালমেট গুয়েরিন বা বিসিজি টিকা করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ও আক্রান্তের পর মৃত্যুর সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে। আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট সায়েন্স নামের এক দাতব্য সংস্থার চালানো গবেষণায় এই তথ্য জানা গেছে। ‘সায়েন্স অ্যাডভান্স’ মেডিক্যাল জার্নালে গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে৷ গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের মার্থা বার্গ।
বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারি ঠেকাতে যখন সম্ভাব্য ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে মরিয়া প্রচেষ্টা চলমান তখন এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো। এতে বলা হয়েছে, টিকা গ্রহণের প্রথম ৩০ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা সবচেয়ে বেশি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনায় বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রে মানুষের এত মৃত্যু ও সংক্রমণ হতো না যদি দেশটির সরকার কয়েক দশক আগে সবার জন্য বিসিজি টিকা বাধ্যতামূলক করত। গবেষণায় উঠে এসেছে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে বিসিজি টিকার নীতি কার্যকরী হতে পারে।
যক্ষ্মার প্রতিষেধক হিসেবে শিশুর জন্মের ১৫ দিনের মধ্যে বিসিজি টিকা দেওয়া হয়ে থাকে। চীন এবং ভারতের মতো দেশে বিসিজি টিকা প্রয়োগকে সরকারি কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে৷ এই দেশগুলিতে মৃত্যু হারও তুলনামূলক ভাবে কম৷ করোনার বিরুদ্ধেও বিসিজি প্রতিষেধক কার্যকরী কি না, এই নিয়ে গত ৮ মাসে কম চর্চা হয়নি৷ চিকিৎসকদের একাংশেরও দাবি, এই দেশগুলিতে বিসিজি টিকাই মানুষকে করোনার প্রাণঘাতী ছোবল থেকে রক্ষা করছে৷
এই গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা ১৩৫টি দেশে নতুন শনাক্তের দৈনিক হার এবং ১৩০টি দেশে সংক্রমণের শুরুতে প্রথম এক মাসে মৃত্যুর সংখ্যা বিশ্লেষণ করেছেন। তাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, বাধ্যতামূলক বিসিজি টিকা কর্মসূচি করোনার বিস্তারের বক্ররেখার সমরূপতার সঙ্গে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত।
তবে গবেষকরা বিসিজি টিকাকে করোনার বিরুদ্ধে শতভাগ কার্যকর বা ম্যাজিক বুলেট হিসেবে তুলে ধরেননি। তারা সতর্ক করে বলছেন, এই বিষয়ে আরও পর্যালোচনার প্রয়োজন রয়েছে। তাদের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, বিসিজি বাধ্যতামূলক দেশগুলোতেও করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধিতে ভিন্নতা ছিল। এর অর্থ হলো, করোনা ঠেকাতে বিসিজি টিকার কার্যকারিতায় অতিরিক্ত সামাজিক ভ্যারিয়েবলের প্রভাব রয়েছে।
সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গত ২৯ মার্চ পর্যন্ত আমেরিকায় ২ হাজার ৪৬৭ জনের মৃত্যু হয়৷ গবেষকরা দাবি করেছেন, আমেরিকায় যদি কয়েক দশক আগেই বিসিজি টিকা নেয়া বাধ্যতামূলক থাকত, তাহলে সেই সংখ্যাটা কমে ৪৬৮-এর আশেপাশে থাকতে পারত৷ এ বিষয়ে ইন্ডিয়ান কলেজ অফ ফিজিশিয়ানস-এর ডিন শশাঙ্ক যোশী একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিসিজি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ এবং করোনার সংক্রমণকে দমিয়ে রাখতেও এর ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়৷’ উদাহরণ হিসেবে ওই চিকিৎসক পর্তুগালের কথা বলেছেন৷ দেশটিতে বিসিজি টিকা বাধ্যতামূলক৷ প্রতিবেশী দেশ স্পেনে করোনা ভয়াবহ আকার ধারণ করলেও সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সফল হয়েছে পর্তুগাল৷ শশাঙ্ক যোশী আরও জানিয়েছেন, করোনা আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার অবনতি রুখতে তাদের শরীরে বিসিজি প্রতিষেধক পুনরায় প্রয়োগ করা যায় কি না, সেটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্রে ২৫০ জন করোনা আক্রান্তের উপরে এই টিকা প্রয়োগ করে মৃত্যু হার কমে কি না, তার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হয়েছে৷ আগামী তিন মাসের মধ্যে এই পরীক্ষার ফলাফল চলে আসতে পারে৷ সূত্র: টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।