Inqilab Logo

বুধবার, ২৯ মে ২০২৪, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য ভারতের ৫ জায়গা চূড়ান্ত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ জুলাই, ২০২০, ৩:০৫ পিএম

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়ালের জন্য ভারতের পাঁচটি জায়গা চূড়ান্ত করা হল। এই পাঁচটি জায়গায় তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল করবে অক্সফোর্ড। সোমবার এই তথ্য জানান ভারতের ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজির সেক্রেটারি রেনু স্বরূপ।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের হিউম্যান ট্রায়াল ভারতেও হবে বলে আগেই জানানো হয়েছিল। সেইমতো ভারতের পাঁচটি জায়গা বেছে নেওয়া হল। এই পাঁচ জায়গায় স্বেচ্ছাসেবকদের শরীরে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রয়োগ করা হবে করোনার ভ্যাকসিন। তবে, এই ভ্যাকসিন দেশবাসীর ব্যবহারের জন্য দেওয়ার আগে এই বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য সরকারের হাতে থাকা জরুরি বলে জানিয়েছেন রেনু স্বরূপ।

ভ্যাকসিন প্রস্তুত হয়ে তা তৈরির জন্য ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটকে বেছে নিয়েছে অক্সফোর্ড। সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া বিশ্বের বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা। সেরাম ইনস্টিটিউট ছাড়াও অ্যাস্ট্রাজেনেকা নামে আরও একটি সংস্থাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অক্সফোর্ডের তৈরি করোনার ভ্যাকসিনের প্রথম ও দ্বিতীয় দফার পরীক্ষার ফলাফল এই মাসের গোড়াতেই প্রকাশিত হয়।

অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন আশা জাগালেও সহযোগী সংস্থা সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার শীর্ষকর্তা সাইরাল পুনাওয়ালার একটি বক্তব্য থেকে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ঘনিষ্ঠ মহলে তিনি জানিয়েছেন যে, শুধুমাত্র পার্সিদের জন্যেই প্রায় ৬০ হাজার করোনা ভ্যাকসিন সংরক্ষণ করা হবে। সাইরাস পুনাওয়ালার ছেলে আদর পুনাওয়ালাও ট্যুইট করে তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন সব ধাপ পেরিয়ে পাশ করলেই ভারতে এই টিকার উৎপাদন শুরু করবে তারা।

সংস্থার তরফে সরকারিভাবে এ বিষয়ে কিছু জানানো না হলেও ভ্যাকসিন আবিষ্কারের আগেই এভাবে সংরক্ষণের বিষয়টি সামনে চলে আসায় শুরু হয়েছে বিতর্ক। গোটা দেশ, এমনকী গোটা বিশ্ব যেখানে করোনার আঘাতে কার্যত পর্যুদস্ত, সেখানে ভ্যাকসিনেও এভাবে সংরক্ষণ শুরু হলে তা কতটা নৈতিকতার জায়গা হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।

অক্সফোর্ডের এই করোনা টিকার হিউম্যান ট্রায়াল চলছে ব্রিটেন, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ব্রাজিলে। ভারতেও অক্সফোর্ডের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের মানবশরীরে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। আদর পুনাওয়ালা জানিয়েছেন, ভারতের মুম্বই ও পুনেতে প্রায় ৪ হাজার মানুষের শরীরে করোনার এই ভ্যাকসিনের ট্রায়াল করা হবে। আপাতত সমস্ত পরীক্ষায় ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন সিরাম-এর সিইও আদর পুনাওয়ালা।

সেরাম আগেই জানিয়েছিল, চূড়ান্ত সম্মতি আসার আগে তারা প্রতিষেধক তৈরির কাজ শুরু করে দেবে। প্রতিষেধকের বিষয়ে সব রকম অনুমতি পাওয়ার পরই নির্দিষ্ট পরিমাণের প্রতিষেধক বাজারে ছাড়বে তারা। তাই তৃতীয় ধাপের এই প্রয়োগের ফল কী হয় সে দিকেই তাকিয়ে রয়েছে তারা। সেরাম ছাড়াও দেশের করোনার প্রতিষেধক নিয়ে কাজ করছে জাইডাস ক্যাডিলা এবং ভারত বায়োটেক। মানবদেহে প্রতিষেধক প্রয়োগের প্রথম ধাপে রয়েছে তারা।

মানবদেহে প্রথম পর্বের প্রতিষেধক প্রয়োগের পর গত ২০ জুলাই বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করেন, অক্সফোর্ড যে প্রতিষেধক তৈরি করেছে তা সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং দেহে প্রতিরোধ গড়ে তোলার পক্ষেও সক্ষম। ল্যানসেট মেডিক্যাল জার্নালে প্রকাশিত একটি রিপোর্টে বলা হয়, গত এপ্রিল ও মে-তে ব্রিটেনের পাঁচটি হাসপাতালে ১৮-৫৫ বছয় বয়সি ১ হাজার ৭৭ জন সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রথম পর্বের প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়। দেখা গিয়েছে, প্রতিষেধক দেওয়ার ৫৬ দিন পরে তাদের শরীরে শক্তিশালী অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

দ্বিতীয় পর্বে ১০০ জনকে দুটো ভাগে ভাগ করে এই প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়। শিশু এবং বয়স্কদের দুটো আলাদা দলে ভাগ করেন বিজ্ঞানীরা। এই পর্বের প্রয়োগও সফল হয়। এ বার তৃতীয় ধাপের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে অক্সফোর্ড। এই পর্বে এক হাজার মানুষের দেহে করোনার প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হবে। সূত্র: পিটিআই, টিওআই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ