Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সিন্ডিকেট পকেটে ঢুকাচ্ছে কিটপ্রতি ১৬৮৮ টাকা

স্বাস্থ্যখাতে বন্ধ হয়নি পুকুর চুরি : গোয়েন্দা তল্লাশির মধ্যেও চলছে লুটপাট

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:০২ এএম | আপডেট : ১২:০৭ এএম, ১৯ জুলাই, ২০২০

রিজেন্ট ও জেকেজি প্রতারণা নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। ইতোমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে রিজেন্টের চেয়ারম্যান সাহেদ, জেকেজি’র চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা আরিফ চৌধুরী এবং এমডি আরিফুল হক চৌধুরী। যদিও তাদেরকে প্রতারণার সুযোগ করে দেয়ার নেপথ্যের কারিগর স্বাস্থ্য অধিদফতরের দায়িত্বশীলরা এখনো অধরাই। শুধু কি এরাই স্বাস্থ্যখাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে? করোনার সময়ে দেশে পিসিআর টেস্ট কিট সরবরাহ নিয়েও চলছে এক ধরণের নৈরাজ্য। অসাধু একটি সিন্ডিকেট মহামারি করোনা দুর্যোগের সময়েও বজায় রেখেছে তাদের অতি মুনাফার চিন্তা। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও সিএমএসডি’র (সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপো বা কেন্দ্রীয় ঔষধাগার) কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই সিন্ডিকেটটি কিট সরবরাহ করে হাতিয়ে নিয়েছে বড় অঙ্কের টাকা। এই সিন্ডিকেট প্রতিটি কিটে হাতিয়েছে ১৬শ’ ৮৮ টাকা। গত কয়েক দিন ধরে ইনকিলাবের অনুসন্ধানে কিট সরবরাহ নিয়ে নৈরাজ্যের এসব তথ্য উঠে এসেছে।

সূত্র মতে, কোনভাবেই থামছে না স্বাস্থ্যখাতে সিন্ডিকেটের দৌড়াত্ম্য। কিছু ক্ষেত্রে চুনোপুটিদের আইনের আওতায় আনা গেলেও স্বাস্থ্যখাতের ঠিকাদারদের মাফিয়া হিসেবে পরিচিত মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু অধরাই থাকছে। সম্প্রতি তাকে কাজ না দেয়ায় কেন্দ্রীয় ওষুধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক পদ ছাড়তে হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহিদ উল্লাহ। অথচ বর্তমান পরিচালক অতিরিক্ত সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান দায়িত্ব গ্রহণ করে সেই বিতর্কিত ব্যক্তির একটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দিয়েছেন। গত ৩ জুন যোগদান করেই ১৫ জুন মিঠু সিন্ডিকটকে ৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার পিসিআর টেস্ট কিট ক্রয়ের কাজ দেন। মিঠুর মেসার্স জেরিন এন্টারপ্রাইজকে ২৩শ’ টাকা দরে ১ লাখ ৫০ হাজার স্যানশিওর বায়োটেক ব্র্যান্ডের টেস্ট কিটের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এই সময়ে আরও তিন প্রতিষ্ঠানকে কিট সরবরাহের কাজ দেয়া হয়। শুধু কাজ দেয়ায়ই সীমাবদ্ধ নয়; করোনার শুরু থেকে যে সব ঠিকাদার কিট সরবরাহ করেছে তারা এখনো বিল না পেলেও মিঠুকে কার্যাদেশ দেয়া বিল উত্তোলনে উঠে পড়ে লেগেছেন বর্তমান পরিচালক।

গত ১৫ জুন পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান স্বাক্ষরিত কার্যপত্রে দেখা যায়, মিঠুর প্রতিষ্ঠান মেসার্স জেরিন এন্টারপ্রাইজকে দেড় লাখ পিস পিসিআর টেস্ট কিট সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিটি কিটের মূল্য ধরা হয়েছে ২৩শ’ টাকা। অথচ চীনের কিট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, বেইজিং অ্যাপলাইড বায়োলোজিক্যাল টেকনোলজি কোম্পানির বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থ্যা (ডাবিøউএইচও) স্বীকৃত একটি কিটের দাম ৫০ হাজারের ওপরে সংখ্যার জন্য ৫ ডলার। চীনের এনবাও বায়োটেকনলজি কোম্পানির ডাবিøউএইচও স্বীকৃত একটি কিটের দাম ৫০ হাজারের ওপরে সংখ্যার জন্য পড়ছে ৬ ডলার। একইভাবে ডাবিøউএইচও স্বীকৃত প্রতিটি কিট চীনের নানজিং ডিনরি মেডিকেল কোম্পানি লিমিটেড এবং পেরিননিয়াল মেডিকেল বিক্রি করছে ৬ ডলারে।

প্রতি ডলারের মূল্য ৮৫ টাকা ধরে হিসাব করলে প্রতিটি কিটের বাংলাদেশি দাম পড়বে সর্বোচ্চ ৫১০ টাকা। এর সঙ্গে ভ্যাট, ট্যাক্স ও বিমান ভাড়া মিলিয়ে প্রতিটি কিটে খরচ পড়বে সর্বোচ্চ আরও ১০২ টাকা। সর্বমোট খরচ দাঁড়ায় ৬১২ টাকা। অথচ সিএমএসডি থেকে দেয়া হচ্ছে প্রতিটি কিটের বিপরীতে ২৩শ’ টাকা। সিন্ডিকেটের কবলে প্রতিটি কিট বাবদ চলে যাচ্ছে ১৬শ’ ৮৮ টাকা।

কিট সরবরাহের কাজ পাওয়া অন্য তিন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ওভারসিজ মার্কেটিং কর্পোরেশন-ওএমসিকে ২৩শ’ টাকা দরে ১ লাখ ৫০ হাজার টেস্ট কিটের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে; যার মূল্য ৩৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা। একইভাবে মাইশা রাও টেলসেট জেভিকে ২৩শ টাকা ইউনিট মূল্যে ৫০ হাজার বায়োনির ব্র্যান্ডের টেস্ট কিট সরবরাহের আদেশ দেয়া হয়েছে; যার মূল্য ১১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এছাড়া স্টার্লিং মাল্টি টেকনোলজিস লিমিটেডকে ২১শ’ টাকা ইউনিট মূল্যে ২৫ হাজার এন্যাটোলিয়া ব্র্যান্ডের টেস্ট কিটের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে; যার মূল্য ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা। চারটি কার্যাদেশের মোট মূল্য ৮৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন আমদানিকারক ইনকিলাবকে জানান, প্রতিটি কিট আমদানিতে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬শ’ টাকা খরচ হতে পারে। এটাতো এক ধরণের পুকুর চুরি। তিনি বলেন, এই দাম করোনা শুরুর দিকে হলেও মেনে নেয়া যেতো। কারণ তখন এই কিট পাওয়া দুষ্কর ছিল। আমদানি করা কঠিন ছিল। খরচ বেশি পড়তো। দামও ছিল কিছুটা বেশি। বর্তমানে কিটসহ করোনা সামগ্রীর দাম অনেক কমে গেছে। তিনি বলেন, একটি সিন্ডিকেট সিএমএসডি’র ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণ করছে। এসব ঠিকাদাররাই কার্যাদেশ পেয়েছে। এই লুটপাটের সাথে স্বাস্থ্যখাতের কে কে জড়িত সেটা খতিয়ে দেখা উচিত। কিট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের এলসি ডকুমেন্ট, কাদের মাধ্যমে এই কাজ দেয়া হলো তা অবশ্যই জাতির সামনে তুলে ধরা উচিত বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সূত্র মতে, করোনা মোকাবেলায় দ্রুত ৪৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ৯৮ হাজার ২শ’ টাকা অনুমোদন ও ছাড় চেয়েছেন সিএমএসডি (সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপো বা কেন্দ্রীয় ঔষধাগার)। এর মধ্যে ১শ’ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। এতে পিসিআর টেস্টের কিট বাবদ ৮৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকাও আছে। গত ৫ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে লেখা এক চিঠিতে সিএমএসডি পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান এ অর্থ চেয়েছেন। যা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব অবহিত আছেন বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে কিছুই জানানো হয়নি।

স্বাস্থ্য অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, দরপত্র ছাড়াই সরাসরি পণ্য ক্রয়ের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে। এভাবে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত দামে কিট ক্রয় করেও সিএমএসডির পরিচালক এক চিঠিতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবকে জানান, করোনা মোকাবিলায় টেস্ট কিট গুরুত্বপূর্ণ। এতদিন সিএমএসডিতে কিছু প্রতিষ্ঠান একচেটিয়া ব্যবসা করলেও তিনি যোগদানের পর তা ভেঙে দিয়েছেন বলে দাবি করেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর ও অন্যান্য সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে সাপ্লাই চেন অব্যাহত রাখতে প্রধামন্ত্রীর কার্যালয়ের মৌখিক নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পরামর্শে ডিপিএম পদ্ধতিতে উল্লেখিত চারটি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে বলেও তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন।

মিঠু সিন্ডিকেটকে দ্রুত টাকা পাইয়ে দিতে সিএমএসডি পরিচালক চিঠিতে উল্লেখ করেন, টেস্ট কিট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের ৮৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা বিল না পেয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে এবং নতুন কিট সরবরাহ করবে না। অথচ করোনার শুরু থেকে ওএমসি কিট সরবরাহ করলেও এখন পর্যন্ত একটি টাকাও পায়নি প্রতিষ্ঠানটি বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা মো. জুয়েল।

পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল শাখার একাধিক কর্মকর্তা বলেন, যে দামে চারটি প্রতিষ্ঠানকে টেস্ট কিট আমদানির কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, কিটের মূল্য এর চেয়ে অনেক কম। তাদের মতে, এক্ষেত্রে একচেটিয়া ব্যবসা বদলানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। সবচেয়ে বড় কথা হল এ কার্যাদেশে বিতর্কিত এবং সমালোচিত একটি প্রতিষ্ঠানকে বড় অঙ্কের টাকার কাজ দেয়া হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কথা বলতে সিএমএসডির পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আবু হেনা মোরশেদ জামানের মোবাইলে কল করলে তিনি রিসিভ করেননি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক ইনকিলাবকে বলেন, এ বিষয়ে এখনও আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। তাই আমি কিছুই বলতে পারছি না।



 

Show all comments
  • Norul Shamsuzzaman ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৭ এএম says : 0
    চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। বাংলাদেশে চুরি করা বন্ধ হবে তখন যখন নেতা আমলা মন্ত্রীরা সৎ ভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Shafiqullah ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৭ এএম says : 0
    সব চোরদের একসাথে ক্রসফায়ার দেয়া চায়
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmud Hossen ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৮ এএম says : 0
    শুরুটা হয়েছে অনেক আগেই। তাদের দেখা পথে হাঁটছে আমাদের সোনার বাংলাদেশ। এবার বাংলাদেশকে কেউই দাবাইয়া রাখতে পাড়বে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Faruk Hossain ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৮ এএম says : 0
    বেড়ায় ক্ষেত খেলে, আপনি গরু ছাগল পাহারা দিয়ে ক্ষেতের ফসল বাঁচাতে পারবেন না তো। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মহল যেখানে দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষক !!!
    Total Reply(0) Reply
  • Showkat Ali ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৯ এএম says : 0
    অবিলম্বে স্বাস্থ্য মন্ত্রী সহ স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাঘব বোয়ালদর গ্রেপতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হউক।।
    Total Reply(0) Reply
  • Khan Mahfuj ১৯ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৯ এএম says : 0
    আর কত করবেন ভাই।। সবাইকে মরতে হবে। একটু চিন্তা করেন
    Total Reply(0) Reply
  • তানবীর ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১২ এএম says : 0
    রিপোর্টটি করার জন্য দৈনিক ইনকিলাব ও রিপোর্টার হাসান সোহেল সাহেবকে অসংখ্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • সাব্বির ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৩ এএম says : 0
    এজন্যই হয় তো কম দামী কিট বাজারে আসতে দেয়া হয় নি
    Total Reply(0) Reply
  • মাহবুব ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৪ এএম says : 0
    এত বড় মহামারীর মধ্যেও যেসব লোকেদের চুরি করার প্রবণতা বন্ধ হয় নাই, তাদেরকে সোজা ক্রসফায়ার দেয়া উচিত বলে আমি মনে করি।
    Total Reply(0) Reply
  • Helal Ahmad ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৬ এএম says : 0
    এখন আর পুকুর চুরির সময় নাই। সাগর-মহাসাগর বা তার চেয়েও বেশি কিছু চুরি চলছে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ মাহমুদুল হক ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৬ এএম says : 0
    রাতের ভোট এর সরকার,,,তাই এমনতো হবে,ই কেউ কাউকে জোড় দিয়ে কোন কথা বলতে পারবে না,,কারন চোরে,চোরে মাস্তুল ভাই।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Ripon ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৬ এএম says : 0
    এইজন্যই হয়তো গনস্বাস্থ্যের কিটের অনুমতি দেয়া সম্ভব হয় নি
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Hossain ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৮ এএম says : 0
    আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, ততদিন স্বাস্হ্য মন্ত্রনালয়ের সিন্ডিকেট ভাঙবে না।
    Total Reply(0) Reply
  • Monir Hossin ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৯ এএম says : 0
    দেশে লুটপাট চলছে ভালো ভাবেই.
    Total Reply(0) Reply
  • Maruf Ahmed ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:১৯ এএম says : 0
    ভোট চুরির দেশে চুরি বন্ধ হবে কিভাবে ?
    Total Reply(0) Reply
  • Mohammed Shah Alam Khan ১৯ জুলাই, ২০২০, ৯:২৬ পিএম says : 0
    খবরে প্রকাশ ব্যাবসায়ীরা ৬১২ টাকা হিসাবে কিট ক্রয় করে সেটা সরকারের কাছে বিক্রয় করছে ২৩০০ টাকা। আমার বিচারে এখানে ব্যাবসায়ীর কোন দোষ নেই কারন সে তাঁর জিনিষ দিবে কি দামে দিবে এটা তাঁর বিষয় এখন যিনি কিনবেন তিনি কি দামে কিনবেন এটা তাঁর বিষয়। এখানে যে হিসাবটা সাংবাদিক সাহেব সংগ্রহ করেছেন তখন উনি যদি একটু বাজারে গিয়ে দেখতেন বাজারে আমদানীকৃত জিনিষ পত্র কিভাবে বিক্রয় হয়। মানে যিনি আমদানী করেন তিনি কি সরাসরি গ্রাহকের নিকট বিক্রয় করেন?? আমি জানি না, আমদানীকারকেরা আমদানী করে কেন্দ্রীয় পাইকারি বাজারে (মানে চট্রগ্রামে অথবা ঢাকার মূল পাইকারী বাজারে) বিক্রয় করে। আবার এই পাইকারেরা সারা দেশের পাইকারদের কাছে বিক্রয় করে। এনারা বিক্রয় করেন দোকানীদের কাছে যারা সরাসরি প্রকৃত ক্রেতার নিকট বিক্রয় করে। এই প্রথায় দেখা যায় আমদানী কৃত জিনিষের মূল্য ১০ টাকা হলে সেটা বিক্রেতার কাছে যেতে যেতে ২০-২৫ টাকা হয়ে গেছে। কাজেই আমরা যদি আমদানীর মূল্যের উপর লাভ কষতে যাই সেটা ঠিক হবে না। এরপর ঠিকাদারেরা সবসময়ই দেখা যায় বাজার দরের উপর ভিত্তিকরেই তাদের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে সেজন্যে তাদের দাম আরো একটু বেশী হয়। তারপরও কথা আসে ব্যাবসায়িরা তাঁর জিনিষ বিক্রয় করবে টেন্ডারের মাধ্যে মূল্য ধার্য্য করে সেখানে সে যে দরই দিকনা কেন সেটা যদি টেন্ডার কমিটি গ্রহণ করে তাহলে আমাদের সেখানে ঠিকাদারকে দোষ দেয়ার কারন নেই। ব্যাবসায়ীরা লাভ করার জন্যে অনেক কিছুই করবে তাইবলে আমি সেটা মেনে নিব এটা ঠিক নয়। কাজেই ঠিকাদারদের কোন দোষ নেই তাই আমরা সবসময় ঠিকাদারদেরকে দোষারুপ করি। আর তাঁর (ব্যাবসায়ীরা) আইনের ফাঁক ফোকড় দিয়ে বেড়িয়ে আসে। কিন্তু এটা কেন হচ্ছে সেদিকে আমরা কোন নজর দেইনা বা বিচারে তাদেরকে আমরা জড়িত করিনা। আমি বলতে চাই সরকারের কর্মকর্তা মানে আমলারাই এসব ক্রয় করেন কাজেই ক্রয় সম্পর্কে যেকোন অনিয়ম হলে ব্যাবসায়ি দায়ী নয় দায়ী হচ্ছেন যিনি ব্যাবসায়ীকে সুযোগ দিয়েছেন তিনি দায়ী। কাজেই এখানে আমাদেরকে ধরতে হবে স্বাস্থ্য অধিদফতর ও সিএমএসডি’র কর্মকর্তাদেরকে। আল্লাহ্‌র কাছে আমার প্রার্থনা তিনি যেন আমাকে সহ সবাইকে কোন কিছু বলার বা লিখার আগে বিষয়টা নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে তারপর বলার বা লিখার ক্ষমতা দান করেন। আমিন
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বাস্থ্যখাত

৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ