মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহ হত্যাকান্ডে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেফতার তার সহকারীর বিরুদ্ধে জোরালো প্রমাণ পাওয়ার দাবি করা হয়েছে। নিরাপত্তামূলক ভিডিও ফুটেজের কথা উল্লেখ করে এ দাবি করেছেন প্রসিকিউটররা। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় ১৭ জুলাই মধ্যরাতের কিছু পরে গ্রেফতার সন্দেহভাজন খুনি টাইরেস ডেঁভো হ্যাসপিলকে (২১) ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে হাজির করা হয়। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে নিউইয়র্কের আদালতে ভার্চুয়াল শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। ম্যানহাটনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিসট্রিক্ট অ্যাটর্নি লিন্ডা ফোর্ড সন্দেহভাজন খুনি টাইরেস ডেঁভো হ্যাসপিলকে আদালতে উপস্থাপন করে বলেন, হোমডিপো নামের দোকান থেকে হ্যাসপিলের কেনা ইলেকট্রিক করাত ও ধোয়ামোছার সরঞ্জামাদি ফাহিম সালেহর অ্যাপার্টমেন্টে পাওয়া গেছে। টাইরেস হ্যাসপিলকে নৃশংস অপরাধ করায় জামিন-অযোগ্য দ্বিতীয়-ডিগ্রি খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে ফাহিমের কাছ থেকে ৯০ হাজার মার্কিন ডলার চুরি করে ধরা পড়েন হ্যাসপিল। কিন্তু ফাহিম তাকে পুলিশে ধরিয়ে না দিয়ে বরং কিস্তিতে ওই টাকা ফেরতের সুযোগ দেন। অথচ এ ঘটনায় উল্টো ফাহিমকে হ্যাসপিল নির্মমভাবে খুন করেন বলে অভিযোগে বলা হচ্ছে। নিরাপত্তাকাজে ব্যবহৃত নজরদারি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হ্যাসপিল একটি দোকান থেকে করাত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সেইসব জিনিস কিনছেন, যেগুলো মঙ্গলবার ক্রাইম-সিনে মিলেছে। তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তোলার সময় আদালতে এ কথা বলেন ম্যানহাটনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি লিন্ডা ফোর্ড।
ফুটেজে খুনির পরনে যে পোশাক দেখা গেছে, ব্রæকলিনে হ্যাসপিলেন বাসা থেকে উদ্ধার পোশাকের সঙ্গে সেগুলোর মিল রয়েছে; তাছাড়া তদন্তকারীরা অপরাধটির ঘটনাস্থলে হ্যাসপিলের আসা-যাওয়ার ডিজিটাল ট্র্যাকও নিশ্চিত করেছেন বলে জানান ফোর্ড। ম্যানহাটন ক্রাইম কোর্টে হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক ওই অভিযোগ তোলার সময় ফোর্ড আরও বলেন, ‘এ মামলার ক্ষেত্রে জোরালো প্রমাণ রয়েছে’। ‘অপরাধটির আগে ও পরে তাকে (হ্যাসপিল) ওই ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে। ভিডিও টেপ দেখে অন্তত দু’জন তাকে শনাক্ত করেছেন’।
অভিযোগে বলা হয়, ‘সোমবার ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ফাহিমের পিছু পিছু তার অ্যাপার্টমেন্টের লিফটে ওঠেন হ্যাসপিল। ফাহিমের মালিকানাধীন সম্পত্তি- সাত তলায় লিফটের দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গেই টেজার গান দিয়ে তাকে কুপোকাত করেন ওই অভিযুক্ত। ফাহিম ফ্লোরে পড়ে গেলে তার ধড়ে ও গলায় নৃশংসভাবে বেশ কয়েকবার ছুরি চালান হ্যাসপিল, বলেছেন ফোর্ড। তারপর ফাহিমের লাশ অ্যাপার্টমেন্টের ভেতরে রেখেই সেখান থেকে চলে যান অভিযুক্ত খুনি।
পরের দিন তিনি দোকান থেকে ইলেকট্রিক করাত ও অন্যান্য জিনিসপত্র কেনেন ফাহিমের লাশ কেটে টুকরো-টুকরো করার উদ্দেশ্যে। কয়েকটি সূত্র বলছে, ফাহিমের লাশ খন্ড-বিখন্ড করে কনস্ট্রাকশনের ব্যাগে ভরে গুমের পরিকল্পনা ছিল হ্যাসপিলের; কিন্তু এরই মধ্যে ফাহিমের খালাত বোন ওই অ্যাপার্টমেন্টের ঘণ্টি বাজান; আর তখন সিঁড়ি বেয়ে পালিয়ে যান হ্যাসপিল। অবশ্য মঙ্গলবার ঠিক কোন কারণে হ্যাসপিল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছিলেন সে সম্পর্কে প্রসিকিউটররা আদালতে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
২০১৮ সালে নাইজেরিয়ায় মোটরসাইকেল রাইড শেয়ারিং কোম্পানি ‘গোকাডা’ এবং ইনভেস্টমেন্ট ফার্ম ‘অ্যাডভেঞ্চার ক্যাপিটাল’-এর প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহের কাছ থেকে তার সহকারী হ্যাসপিল যে ৯০ হাজার মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ চুরি করেছিলেন, এ ব্যাপারে আদালতকে নিশ্চিত করেছেন ফোর্ড। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর সিইও ফাহিম যখন হ্যাসপিলের এ অপকর্ম ধরে ফেলেন তখন তাকে পুলিশের হাতে তুলে না দিয়ে বরং ভাগে ভাগে টাকা ফেরত দেওয়ার সুযোগ দেন বলে ফোর্ড জানান।
হত্যার পেছনে হ্যাসপিলের অন্য কোনো কারণ আছে কি না, এখনো নিশ্চিত না হলেও প্রসিকিউটররা বিশ্বাস করেন, ওই চুরির ঘটনায়ই ৩৩ বছর বয়সী ফাহিমের প্রাণ কেড়ে নেয়া হয়েছে। হ্যাসপিলকে জামিন-অযোগ্য অভিযুক্ত হিসেবে বন্দি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক জোনাথন স্যভেটকি। ১৭ আগস্ট তাকে আবারও আদালয়ে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
১৪ জুলাই বিকেলে নিউইয়র্ক নগরের ম্যানহাটনে নিজ অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ফাহিম সালেহর খন্ডবিখন্ড মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। শুরুতে এ হত্যাকান্ডকে চরম পেশাদার কোনো খুনির কাজ বলে ধারণা করা হলেও ঘটনার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঘাতককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ফাহিম সালেহর সাবেক ব্যক্তিগত নির্বাহী মাত্র ২১ বছরের টাইরেস ডেঁভো হ্যাসপিলকে পুলিশ ১৭ জুলাই শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার করে। সূত্র : নিউইয়র্ক পোস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।