মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাস, বন্যা, ভ‚মিধ্বস মোকাবিলা করা না খাদগা প্রসাদ অলিকে পদত্যাগে বাধ্য করা, কোনটি সবার আগে দরকার? গতকালই হয়ত ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি ভাগ করার মধ্য দিয়ে নেপালে সরকার ফেলে দিয়ে এক রাজনৈতিক অচলাবস্থায় পড়ে যেতে পারত নেপাল। কিন্তু ভারতের এ ধরনের আকাক্সক্ষা উপেক্ষা করে সামলে নিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী। তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে বন্যা ও ভ‚মিধ্বস। নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির বৈঠক হবার কথা ছিল বুধবার। কিন্তু সেদিন বৈঠক মুলতবি হয়ে যায় শুক্রবার পর্যন্ত। এবার বন্যা-ভ‚মিধ্বসে বিধ্বস্ত হবার কারণে বৈঠক মুলতবি হয়ে গেছে এক সপ্তাহের জন্য। ফলে দেশটির সরকার টিকিয়ে রাখার জন্য চীনা প্রচেষ্টা জোরদারে আরো এক সপ্তাহ সময় মিলল।
দেশের জনগণ যে কে পি শর্মা অলির সমর্থনে একাট্টা তা বোঝা যায় রাজপথে তার সমর্থনে বের হওয়া মিছিল, এমনকি তাকে নিয়ে সমালোচনার কারণে নেপালে ভারতীয় সব নিউজ চ্যানেল বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত দেখে। সরকারের চাপে নয়, ক্যাবল অপারেটররা জনগণের দাবির কারণে সরকারি সম্প্রচার কেন্দ্র দূরদর্শন ছাড়া অবশিষ্ট সব প্রাইভেট চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে।
ভারত নিয়ে কড়া অবস্থান এবং চীনের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার কারণে নিজের দলের নেতাদের কাছেই অপছন্দের পাত্র হয়েছেন অলি। নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের সঙ্গে গত বুধবার বৈঠক করেন অলি। দাহাল বলেছেন, সামনের দিন এবং সপ্তাহগুলোতে দলের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে খাদগা প্রসাদ অলির পদ থাকা-না থাকার ব্যাপারে।
প্রসঙ্গত, ভারত ও নেপালের বিতর্কিত এলাকা নিজেদের হিসেবে চিহ্নিত করে নতুন মানচিত্র প্রকাশের পর থেকে ঝামেলায় পড়েছেন অলি। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে অলি বলেন, তার নিজের দলের কয়েকজনের সহায়তায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য ভারত চেষ্টা চালিয়েছে। তার এ মন্তব্যের জেরে নয়াদিল্লির সঙ্গে নেপালের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। অথচ নেপালে চীনের সম্পৃক্ততা বাড়ার আগ পর্যন্ত কাঠমান্ডুতে ভারতের ব্যাপক প্রভাব ছিল। নেপালে বিমানবন্দর তৈরি, রাস্তার কাজ ও বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সে দেশের নেতাদের সঙ্গে চীনের ক‚টনীতিকরা তৎপরতা বাড়িয়েছেন। এ সপ্তাহেই চীনের রাষ্ট্রদ‚ত নেপালে যান কেবল সে দেশের কম্যুনিস্ট পার্টির নেতাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পুরনো সিল্ক রোড রুট যেভাবে পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে চীনকে যুক্ত করেছিল, সেভাবে নেপালকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে চীন।
নেপালের জনপ্রিয় দৈনিক নাগারিক-এর সম্পাদক গুরানাজ লুইটেল বলেন, নেপাল কৌশলগত ভৌগলিক অবস্থানে রয়ে গেছে। উভয় দেশই মনে করে যে, নেপালের রাজনীতিতে তাদের গুরুত্ব থাকতে হবে। বর্তমান সরকার চীনের প্রতি বেশি ঝোঁক দেখাচ্ছে। আর সে কারণে ক্রমশ ভারতের প্রভাব কমে যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। অন্যদিকে ২০১৭ সালে নেপালে কম্যুনিস্ট সরকার ক্ষমতায় এলে শঙ্কায় পড়ে যায় ভারত।
নেপালের কম্যুনিস্ট পার্টির জাতীয় কমিটির সদস্য বিরোদ খাতিওয়াদা বলেছেন, নেপালে কম্যুনিস্ট পার্টি ক্ষমতায় দেখে ভারত সরকার ভেবেছে, নেপাল চীনের পরামর্শে চলছে। কিন্তু সেটা সঠিক নয়। এর আগে ২০১৭ সালে পার্লামেন্টে কম্যুনিস্ট পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত হন অলি। ওই সময় অনেকেই ভেবেছিলেন, অলি এবং দাহাল পাঁচ বছর শাসনামল ভাগ করে নেবেন। কিন্তু অলি আড়াই বছর পার করলেও সেই লক্ষণ দেখা যায়নি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য হরিবোল গজুরেল বলেছেন, কে পি শর্মা অলি ও পুষ্প কমল দাহালের অনেক দূরত্ব থাকায় বর্তমান অচলাবস্থা অব্যাহত রয়েছে। তবে তাদের মতপার্থক্য মিটিয়ে ফেলা ছাড়া আর কোন বিকল্প নেই। তিনি আরও যোগ করেছেন, অলিকে যদি প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করতে বলা হয়, তবে তা কেবল কেন্দ্রেই নয়, সরকারের তিনটি স্তরের প্রশাসনের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে এবং পারে জাতীয় সঙ্কটের আমন্ত্রণ। দল বিভক্ত হলে, কোনও দলই পরবর্তী সরকার গঠনের পক্ষে পর্যাপ্ত সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না। প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অবিশ্বাসের প্রস্তাব তোলা বাঞ্ছনীয় নয়, কারণ যে দলটি নতুন সরকার গঠন করতে চায় তাকে অন্য দলের উপর নির্ভর করতে হবে এবং অন্যান্য দলগুলি যে কোনও সময় নতুন সরকারের প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করতে পারে। সূত্র : দি হিমালয়ান নিউজ, নেপাল টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।