মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চীনের মতো করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য মাস্ক, গাউন, টেস্ট কিট এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উৎপাদনের পদক্ষেপ নিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। ভবিষ্যতে এ ধরনের মহামারি মোকাবেলায় নিজস্ব কারখানা স্থাপন করেছে তারা। যখন এই মহামারি চলে যাবে, তখন সেই কারখানাগুলোকে টিকে থাকার জন্য লড়াই করতে হতে পারে। তবে, চীন সরকার সহায়তা এবং সুরক্ষা কার্যক্রমের অধীনে একটি স্বল্প মূল্যের উৎপাদন শিল্প তৈরি করেছে, যা করোনার জন্য মাস্ক, পরীক্ষার সরঞ্জাম এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সরঞ্জাম তৈরি করে।
চীন আগামী কয়েক বছর ধরে প্রতিরক্ষামূলক এবং চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের বাজারে আধিপত্যের ভিত্তি তৈরি করেছে এবং দীর্ঘস্থায়িত্বের জন্য আগাম পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। করোনাভাইরাস উপলক্ষে চীন সরকারের সৌজন্যে কারখানার মালিকরা সস্তায় জমি পাচ্ছেন। রয়েছে প্রচুর ঋণ এবং ভর্তুকি সুবিধা। চীনা হাসপাতালগুলোকে প্রায়ই স্থানীয় উৎস থেকে সরঞ্জাম কিনতে বলা হয়, যা চীনা সরবরাহকারীদের একটি বিরাট এবং স্থিতিশীল বাজার নিশ্চিত করেছে। যদিও করোনা ভ্যাকসিন চলে আসলে সরবরাহগুলোর চাহিদা হ্রাস পাবে এবং অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে। তবে, চীনা সংস্থাগুলোর এতে সম্ভবত সবচেয়ে কম লোকসান হবে এবং পরবর্তী বিশ্ব মহামারির মোকাবেলার জন্য সেরা অবস্থানে থাকবে দেশটি।
বছরের পর বছর ধরে চীনের নেতারা মনে করেছেন যে, তাদের দেশটি চিকিৎসা সরবরাহ থেকে শুরু করে মাইক্রোচিপস থেকে বিমান পরিবহনের সমস্ত কিছুর জন্য বিদেশী উৎসগুলির ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল। এ গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে শক্তিশালী হিসাবে আত্মপ্রকাশের জন্য তারা ভর্তুকি, অর্থনৈতিক লক্ষ্য এবং অন্যান্য সরকারি সাহায্য ব্যবহার করেছেন। যখন চীনা নেতারা দূষণ এবং বিদেশি তেলের ওপর নির্ভরতা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন হয়ে সোলার প্যানেল, বায়ু টারবাইন এবং দ্রুতগতির রেল সরঞ্জাম উৎপাদনে স্থানীয় উৎপাকদের সহায়তা করেছেন, তখন ৫জি ডেটা ট্রান্সমিশনের মতো ভবিষ্যতের শিল্পগুলিতে আধিপত্য বিস্তার করতেও অনুরূপ পদক্ষেপ নিয়েছেন।
চীন সরকারের এ নীতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এমন শিল্প তৈরিতে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে, যা লোকসান এবং শক্ত বিদেশি প্রতিযোগিতা মোকাবেলা করতে সক্ষম। দেশটির চিকিৎসা সরবরাহ শিল্পের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এ প্রসঙ্গে সুইজারল্যান্ডের বিজনেস স্কুল ইনস্টিটিউট ফর ম্যানেজমেন্ট ডেভেলপমেন্টের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনোভেশন বিভাগের অধ্যাপক হাওয়ার্ড ইউ বলেছেন, ‘মহামারির পরে ব্যাপক সমন্বয় সাধন হবে। এটি গ্রিন এনার্জি, ৫জি এবং দ্রুত গতির রেলের মতো একই রকম গতিশীল থাকবে।’
চীন সরকারের ২০১০ সালের ৫ বছর মেয়াদি অর্থনৈতিক পরিকল্পনায় উচ্চতর চাহিদাসম্পন্ন, বিস্তৃত প্রয়োগ রয়েছে এবং প্রধানত আমদানি করা হয় এমনসব প্রাথমিক চাহিদা এবং চিকিৎসা উপকরণ উৎপাদনের ওপর লক্ষ্য স্থির করার নির্দেশনা ছিল। চীন নিউক্লিক এসিড বা ডিএনএ এবং আরএনএ পরীক্ষার সরঞ্জামের গুরুত্বও আগে থেকেই জানতো, যা করোনাভাইরাস সংক্রমণ শনাক্ত করতে পারে। ২০১৭ সালেই দেশটির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সরঞ্জাম উৎপাদন শিল্পকে একটি ‘লক্ষ্যমাত্রার উন্নয়ন শিল্প’ হিসাবে চিহ্নিত করে। চীনের সিদ্ধান্তটি দেশটির মেডিকেল সরঞ্জামসহ অনেক শিল্পে আমদানি প্রতিস্থাপনের জন্য ৩শ’ বিলিয়ন ডলারের ‘মেড ইন চায়না ২০২৫’ শিল্পনীতির অংশ ছিল। চীন স্থানীয় বাজারে চিকিৎসা শিল্পের প্রতিটি বিভাগে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ অংশীদারিত্ব বাড়ানোর আহ্বান জানায়। এ ধরনের প্রচেষ্টা চীনকে দৃঢ়ভাবে প্রধান্য বিস্তারে সহায়তা করেছে। চীনের কয়েকজন অর্থনীতি বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, তাদের দেশ হয়তো অনেক বেশিই এগিয়ে চলেছে। চীনা তথ্য সংস্থা তিয়ানিয়ানচা’র মতে, এ বছর ৬৭ হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান মাস্ক তৈরি বা বাণিজ্য করতে নাম নিবন্ধন করেছে। অনেকে শুরুতেই নিম্নমানের মান নিয়ন্ত্রণসহ ইতিমধ্যে অনেক সমস্যার সম্মুখীন। চীন সরকার রফতানিতে ক্রমবর্ধমানভাবে কঠোর শুল্কনীতি আরোপ করেছে। তবুও, চীনের এই বিস্তৃত শিল্পটি ভবিষ্যতের জন্য ভালো মতো প্রস্তুত বলে মনে হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।