Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে প্রতিদিনই আক্রান্তে রেকর্ড

করোনাভাইরাস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

ভারতে রোজই নিজের রেকর্ড নিজে ভাঙছে করোনাভাইরাস। একদিনে আবার সর্বাধিক লাফ ভাইরাসের। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২২ হাজার ৭৭১ জন। এর ফলে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৬ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৫। এক দিনে এত সংখ্যক মানুষ এর আগে সংক্রমিত হননি।
আক্রান্ত বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশে মোট মৃত্যু ১৮ হাজার পেরিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে ৪৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হল ১৮ হাজার ৬৫৫ জনের। গতকাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে দেশটিতে করোনা সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৩৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ৩ লাখ ৯৪ হাজার ২২৬।
অন্যদিকে, দেড় মাসের মধ্যে কোভিডের প্রতিষেধক দেশের বাজারে আসছে বলে জানা গেয়েছে। একদিকে এ নিয়ে যেমন আশা তৈরি হয়েছে দেশবাসীর একাংশের মধ্যে, তেমনই আবার আইসিএমআরের চরম উচ্চাকাক্সক্ষী চিঠির বয়ানে বিস্মিতও অনেকে। বস্তুত, দেশটির কেন্দ্রীয় চিকিৎসা গবেষণা সংস্থার প্রধানের চিঠিতে হতবাকই বিশেষজ্ঞদের অনেকে। সে তালিকায় সামিল স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক কর্তাও। বায়ো-এথিক্স নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিকিৎসক অনন্ত ভানের প্রশ্ন, ‘একটি ট্রায়াল শুরুর আগেই যদি তার সাফল্য সম্পর্কে এতটা নিশ্চিত হয়ে যায় আইসিএমআর, তা হলে তো তা পক্ষপাতেরই সামিল!’
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রস্তাবিত ভ্যাকসিনটি সবে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অনুমোদন পেয়েছে। দু’পর্যায়ের সে ট্রায়ালের জন্য ১৫ মাস সময় লাগবে বলে সংস্থার তরফেই নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে সিটিআরআই (ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালস রেজিস্ট্রি অফ ইন্ডিয়া) ওয়েবসাইটে। দেশের এক ডজন শহরের ১২টি হাসপাতালে ১১২৫ জনের ওপর দুই পর্যায়ের এই ট্রায়ালের প্রথমটি মাসখানেকের মধ্যে উতরে যেতে পারে।
করোনা পরীক্ষার নয়া যন্ত্র
করোনাকে থামাতে ভ্যাকসিন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছেই বিশ্বে। ভারতেও আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই পাওয়া যাবে কোভ্যাকসিন এমনটাই জানান হয়েছে। আর সেই আবহের মাঝেই করোনা পরীক্ষার জন্য সহজলভ্য একটি যন্ত্র আবিষ্কার করে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিলেন ভারতীয় গবেষক মনু প্রকাশ।
কী এই যন্ত্র? : বৈজ্ঞানিক ভাষায় একে বলে সেন্ট্রিফিউজ। একটি মেশিন যেখানে টেস্টটিউব বসিয়ে একটি নির্দিষ্ট ঘূর্ণনমাত্রায় তা ঘোরানো হয়। এর ফলে তরলের ভারী উপাদানগুলি টেস্ট টিউবের তলায় চলে আসে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, রক্ত পরীক্ষার সময় এ পদ্ধতির মাধ্যমে রক্তরস এবং রক্তকণিকাকে আলাদা করা হয়। করোনাভাইরাস পরীক্ষার ক্ষেত্রে রোগীর থেকে লালারস নিয়ে তা এই নয়া সেন্ট্রিফিউজ মেশিনে দেয়া হবে। দেখা গেছে এ পদ্ধতির মাধ্যমে লালারস থেকে আলাদা হয়ে আসছে কোভিড-১৯ ভাইরাসের জিনোম।
এ পরীক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যন্ত্রটি চালাতে কিন্তু কোনওরকম বিদ্যুতের প্রয়োজন হয় না। স্ট্যান্ডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য গবেষকদের নিয়ে এ যন্ত্র বানিয়েছেন মনু প্রকাশ। নাম দিয়েছেন ‘হ্যান্ডিফিউজ’। বিজ্ঞানী জানান, এ যন্ত্র সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন ক্লিনিকের কর্মীরা এবং বিজ্ঞানীরাও। রোগীর দেহে করোনাভাইরাস আছে কি না তা সহজেই ল্যাম্প [যার পুরো নাম- লুপ মেডিয়েটেড আইসোথার্মাল অ্যাপ্লিফিকেশন] পদ্ধতি এ যন্ত্রে ব্যবহার করে সহজেই সনাক্ত করতে পারবেন।
বিজ্ঞানী মনু প্রকাশ জানান, এ যন্ত্র ব্যবহার করতে কোনও বিশেষ ধরনের যন্ত্রপাতি, উপাদান কিছুই লাগবে না। পরীক্ষার ফলাফলের সময়ও দ্রুততার সঙ্গে প্রকাশ করা যাবে। আর ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে একেবারে স্বল্পমূল্যে এই পরীক্ষা করা যাবে। ভারতে যেভাবে পাল্লা দিয়ে ফের বাড়ছে করোনাভাইরাস সেই প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা নিতে পারে এ যন্ত্র।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে সাধারণ সেন্ট্রিফিউজ যন্ত্র এবং নয়া আবিষ্কৃত যন্ত্র হ্যান্ডিফিউজ যন্ত্রের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? প্রকাশিত গবেষণাপত্রে জানান হয়েছে যে ল্যাম্প পরীক্ষার মাধ্যমে সেন্ট্রিফিউজ মেশিন ব্যবহার করে নিষ্ক্রিয় লালারস থেকে ইনহিবিটর উপাদান বাদ দেয়া হত। এ কাজ করতে প্রতি মিনিটে ২০০০ বার ঘুরত মেশিন (বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় যাকে ২০০০ রোটেশন পার মিনিট বা আরপিএম বলা হয়ে থাকে)। যেখানে দরকার বিদ্যুতের এবং খরচও ব্যয়সাপেক্ষ। এক্ষেত্রে হাতে ঘোরালেই চলবে এই হ্যান্ডফিউজ মেশিনটি। যেখানে একবার ঘোরালে নিজে থেকেই একাধিকবার ঘুরবে এ যন্ত্র। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ