Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারাদেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের হুমকি আইএসপিএবি’র

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২০, ১২:০০ এএম

ইন্টারনেট সেবায় কর জটিলতার সমাধান না হলে সারাদেশে ইন্টারনেট বন্ধের হুমকি দিয়েছে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)। তবে কবে তা হবে নির্দিষ্ট করে জানাইনি সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ আমিনুল হাকিম। তিনি বলেন, সুবিধামতো সময়ে দুই থেকে এক ঘণ্টা ইন্টারনেট বন্ধ রাখব। কবে কখন এই কর্মসূচি নেওয়া হবে তা সংগঠনের নেতাদের সাথে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে। হতে পারে সপ্তাহে একদিন-দুদিন দিনে এক ঘণ্টা ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে। গতকাল ভার্চুয়াল মাধ্যমে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেয়া হয়। 

আমিনুল হাকিম বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ইন্টারনেটে ৫ শতাংশ কর এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাতে ১৫ শতাংশ কর নির্ধারিত হওয়ায় ইন্টারনেট সেবা খাতে জটিলতা সৃষ্টি হয়। পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ইন্টারনেটের প্রতিটি স্তরে (আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএন) ৫ শতাংশ কর আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে এনবিআর। কিন্তু এর কয়েক মাসের ব্যবধানে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের বাজেটে পুনরায় ইন্টারনেট সেবায় ৫ শতাংশ কর এবং অন্যান্য স্তরে ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করায় বিষয়টিতে আবারও আগের জটিলতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি জানান, বর্তমানে সারা দেশে ৮০ লাখের বেশি বাড়িতে তারের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে এবং ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহার করেছেন প্রায় সাড়ে ৩ কোটি গ্রাহক। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও কর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও বিল আদায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ কমে গেলেও ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারনেটে ৫ শতাংশ কর এবং ভ্যালু চেইনের অন্যান্য (আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএন) খাতে ১৫ শতাংশ আরোপিত কর ট নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সৃষ্টি হওয়া জটিলতার কারণে চলমান ইন্টারনেট সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হতে পারে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বলা হয়, জুলাই মাসের মধ্যে এই কর জটিলতা নিরসন না হলে ইন্টারনেট বন্ধের মতো কর্মসূচি দিবেন তারা। এ কর্মসূচি ধাপে ধাপে অর্থাৎ প্রতিমাসে বা সপ্তাহে সপ্তাহে চলমান থাকবে। প্রয়োজনে সারাদেশে এক ঘণ্টা করে ইন্টারনেট বন্ধ রেখে দাবির সমর্থনে প্রতিবাদ কর্মসূচি হিসেবে পালন করা হবে।
এম এ হাকিম বলেন, ৫ শতাংশ কর ইন্টারনেট গ্রাহক থেকে আদায় করে আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলো আর ১৫ শতাংশ কর ভ্যালু চেইনের অন্যান্য খাত আইএসপিগুলো থেকে আদায় করে থাকে। এর ফলে ৫ শতাংশ কর গ্রাহক থেকে আদায় করা হলেও আইটিসি, আইআইজি, এনটিটিএনকে ১৫ শতাংশ হারে কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। সবমিলে প্রায় ৩৫ শতাংশ ভ্যাট বাবদ খরচ দিতে হচ্ছে আইএসপিগুলোকে।
ইন্টারনেটে ভ্যাট আরোপ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আইএসপিএবির প্রস্তাব তুলে ধরে আমিনুল বলেন, ইন্টারনেটের সকল ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ অথবা শূণ্য শতাংশ হারে কর আরোপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করলে জটিলতা নিরসন হবে। প্রন্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেটের মূল্য ৩০ শতাংশ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও দূর হবে। এর ফলে সর্বস্তরের ইন্টারনেট গ্রাহক ও দেশের জনসাধারণ অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে ইন্টারনেট সেবার আওতায় আসতে পারবেন।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন ও দেশের সকল শ্রেণির জনগণের কথা বিবেচনা করে ইন্টারনেটে কর জটিলতা নিরসন করে আগামী অর্থবছরের বাজেটে ইন্টারনেটে ভ্যাট আরোপের পরিবর্তিত কাঠামোটি অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ইন্টারনেট সেবাকে একই গতিতে সচল রাখতে আমরা কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।
সংবাদ সম্মেলনে আরও অংশ নেন- আইএসপিএবি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি এফএম রাশেদ আমিন বিদ্যুৎ, সাধারণ সম্পাদক মো. এমদাদুল হক, যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন আহমেদ, ট্রেজারার মো. সারোয়ার আলম সিকদার, পরিচালক নাজমুল করিম ভূইয়া, মো. কামাল হোসেন, মো. নাসির উদ্দিন, মো. রাইসুল ইসলাম তুহিন, মোহাম্মদ ওবাইদুল্লাহ ভূইয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইন্টারনেট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ