পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
করোনার কারণে ঢাকা-৫ আসনের (ডেমরা, যাত্রাবাড়ী ও আংশিক কদমতলী) উপনির্বাচনের আনুষ্ঠানিকতা এখনো শুরু হয়নি। তবে থেমে নেই সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। রাস্তাঘাট, দেয়ালে বিলবোর্ড ও পোস্টার টানিয়ে প্রার্থিতা জানান দিচ্ছেন কেউ কেউ। আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, ঢাকার প্রবেশদ্বার খ্যাত ঢাকা-৫ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নিয়ে দলে নানারকম আলোচনা চলছে। প্রার্থী হিসেবে মরহুম হাবিবুর রহমান মোল্লার পরিবার থেকেই কাউকে বেছে নেয়া হবে নাকি নতুন মুখ আসবে, এ আলোচনা সর্বত্র। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মনিরুল ইসলাম মনু, যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না, মরহুম হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সজল, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ড. আওলাদ হোসেন, ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণের ৭০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আতিকুর রহমান আতিক, ব্যবসায়ী ও এশিয়ান টেলিভিশনের মালিক হারুন অর রশিদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও শহীদ শেখ কামালের স্ত্রী শহীদ সুলতানা কামালের ভাইয়ের মেয়ে নেহরীন মোস্তফা দিশি। প্রার্থী হিসেবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের নামও শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসুদ, ১৪ দলের শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম প্রচারণা চালাচ্ছেন।
গত নির্বাচনে হাবিবুর রহমান মোল্লা এবং কাজী মনিরুল ইসলাম মনু দুইজনই দলের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। পরে হাবিবুর রহমান মোল্লাকে দল বেছে নেয়। তাই এবার মনিরুল ইসলাম দলের মনোনয়নের ব্যাপারে বেশি আশাবাদি। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, ‘গতবার দলের মনোনয়ন পেয়েছিলাম কিন্তু দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে নির্বাচন করিনি। এবার মনোনয়নের বেশি হকদার আমি। আমি বিশ^াস করি নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেবেন।’ কাজী মনিরুল ইসলাম মনু ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিও ছিলেন। এছাড়া ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে তিনি ওয়ার্ড কমিশনার নির্বাচিত হয়েছিলেন।
যাত্রাবাড়ী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ মুন্না বৃহত্তর ডেমরা থানা আওয়ামী লীগেরও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, গণতান্ত্রিক আন্দোলনসহ নেত্রীর মুক্তির দাবিতে প্রতিটি আন্দোলনে আমি সক্রিয় থেকেছি। নেত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করেছি। ৬৪টি মামলা ছিল আমার নামে, অসংখ্যবার জেলে যেতে হয়েছে। দল আমাকে মনোনয়ন দেবে বলে আশা করি।
এদিকে, অতীতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দেখা গেছে, মৃত্যুবরণকারী সংসদ সদস্যের পরিবারের একজনকে দলের মনোনয়ন দেবার প্রবণতা বেশি। সে হিসেবে জনপ্রিয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান মোল্লার ছেলে ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল নির্বাচনে দলের মনোনয়নের বিষয়টি বেশি আলোচনা হচ্ছে। মশিউর রহমান মোল্লা সজল ইনকিলাবকে বলেন, বাবা দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। চারবারের এমপি ছিলেন। প্রতিটি ঘরের খবর তিনি রাখতেন। সবার বিপদে আপদে পাশে ছিলেন। তিনি বলেন, আমার অভিভাবক, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। নেত্রী, আমাকে মনোনয়ন দিলে বাবার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাব ইনশাআল্লাহ।
ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আতিকুর রহমান আতিক ডেমরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার ভাই, বাবা, দাদা এই এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিলেন। এলাকার উন্নয়নে এখন বেশ ভাল ভূমিকা রাখছেন আতিক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দুইবারের কাউন্সিলর হিসেবে এলাকায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। দলের মনোনয়ন পেলে ঢাকা-৫ আসনকে মডেল হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সাবেক সহকারী একান্ত সচিব ড. আওলাদ হোসেন বলেন, রাজনীতি করছি মানুষের সেবা করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি দলের মনোনয়ন দেন তাহলে মানুষের সেবা করার পরিধি বেড়ে যাবে।
ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কামরুল হাসান রিপন ইনকিলাবকে বলেন, নেত্রীর তরুণ নেতৃত্বের পছন্দের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নের বিষয়ে আমি আশাবাদী। জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রিপন এক এগারোর সময় দলীয় প্রধানের মুক্তি আন্দোলনে ভাল ভূমিকা রেখেছিলেন। করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিদিনই ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন, প্রত্যেক ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কাজ করছেন।
এশিয়ান গ্রæপ, এশিয়ান টেলিভিশনের চেয়ারম্যান ও বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের জাতীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব হারুন উর রশীদ বলেন, কিভাবে উন্নয়ন করতে হয় একজন ব্যবসায়ী হিসেবে আমি ভাল জানি। দলের মনোনয়ন পেলে সুবিধাবঞ্চিত ডেমরা-যাত্রবাড়ী জনমানুষের ভাগ্যোন্নয়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
নেহরীন মোস্তফা দিশি ইনকিলাবকে বলেন, আমার পরিবারের সদস্যরা ঐতিহ্যগতভাবেই ঢাকা-৫ এর উন্নয়নের সাথে জড়িত। আমিও বিগত কয়েক বছর থেকে এলাকার মানুষের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছি। করোনার মধ্যে গরীব দুঃখীদের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, পরিবহন শ্রমিকদের সহায়তা, পিপিই প্রদানসহ নানা ভাবে জনগণের পাশে থেকেছি। দলের মনোনয়নের বিষয়ে আশাবাদি তিনি।
জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় যুব সংহতির সাবেক সভাপতি আবদুস সবুর আসুদ ২০০৮ ও ২০১৪ সালে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। এবার উপনির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে প্রত্যাশা করেন। মীর আবদুস সবুর আসুদ ইনকিলাবকে বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আশা করি এই আসনটি মহাজোটকে ছেড়ে দেওয়া হবে। জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়ে এলাকার মানুষের কল্যাণে কাজ করে যেতে চাই।
জাসদের সহ-সভাপতি মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন এলাকায় মানুষের সুখে-দুঃখে কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি এবার জোটগতভাবে আমাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। মনোনয়ন পেলে জয়লাভের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদি শহীদুল ইসলাম বলেন, এলাকার মাদক নিয়ন্ত্রণ, ভূমি দখল বন্ধ করা, জলাবদ্ধতা নিরসনসহ উন্নয়নের ক্ষেত্রে মডেল আসন হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।