মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ধরা যাক, আপনি একটি জাদুঘরে একটি কলম্বাসের মূর্তি রেখেছেন এবং আপনি শিক্ষার্থীদের সেভাবে দেখাচ্ছেন যেভাবে কলম্বাসকে ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকে বীরোচিত করা হয়েছে। তবে, তাদের পড়তে দিয়েছেন দে লাস কাসাসের লেখা বই ‘ইন্ডিজের ধ্বংসযজ্ঞ’। তারপর আপনাকে জিজ্ঞাসা করতে হবে, ক্রিস্টোফার কলম্বাসের ইতিহাসের এই বিশেষ সংস্করণটি প্রচারে কেন লোক লাগানো হয়েছিল?
ফিলাডেলফিয়ার মতো বড় শহর এবং কলম্বাস, মিসিসিপির মতো গ্রামীণ জনপদগুলিতে অপেক্ষাকৃত অখ্যাত ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব এবং গভীরভাবে সম্মানিত সাংস্কৃতিক প্রতীক উভয় ধরনের স্মৃতিস্তম্ভগুলো উৎখাত করা আহ্বান দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তর ক্যারোলাইনার রালিতে গত মঙ্গলবার এক সাদাবর্ণের আধিপত্যবাদী প্রাক্তন সংবাদপত্রের প্রকাশকের মূর্তিটি সরিয়ে ফেলা হয়।
স্যাক্রামেন্টোতে, ক্যালিফোর্নিয়ায় স্বর্ণ উত্তোলনের জন্য স্থানীয় আমেরিকানদের দাসে পরিণত করা ও শোষণ করার জন্য বিখ্যাত বসতি স্থাপনকারী জন সাটারের সম্মানে গড়া স্মৃতিস্তম্ভটি গত সপ্তায় নামিয়ে ফেলা হয়। এবং ডালাসে, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অভ্যন্তরে পুলিশের বর্বরতা এবং বর্ণবাদ সম্পর্কিত ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো নিয়ে উদ্বেগের মধ্যেই নির্মাণ কর্মীরা সম্প্রতি টেক্সাসের লোককাহিনীর কাল্পনিক চরিত্র এক টেক্সাস রেঞ্জারের মূর্তিও সরিয়ে ফেলে।
ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের নেতাকর্মীরা যারা কনফেডারেট এবং অন্যান্য স্মৃতিসৌধগুলিকে নিপীড়ন ইতিহাসের স্মারক হিসাবে দেখান, তারা এই চাপটিকে অনেকাংশে স্বাগত জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে, তাদের কারণেই তারা আজ বাস্তবতার বিরুদ্ধে লড়াই করছেন। তবে তাদের মধ্যে অনেকেই আশঙ্কা করেন যে, ঐতিহাসিক প্রতীকগুলির বা মূর্তি ভাঙায় মনোনিবেশ করলে স্তিমিত হয়ে পড়বে মূল আন্দোলন এবং আফ্রিকান-আমেরিকানদের প্রতি পুলিশের বর্বর আচরণ বন্ধ করার ওপর চাপ কমে যাবে।
স্মৃতিস্তম্ভ নষ্ট করে দেয়াটা একটি সহজ সান্তনায় পর্যবসিত হতে পারে আশঙ্কা করে সেন্ট লুইসের ২৪ বছর বয়সী মানসিক স্বাস্থ্যের আইনজীবী আলিশা সোননিয়ার বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না এটিকে দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেয়া বলব কিনা, কারণ আমি মনে করি মানুষ স্পষ্টতই সূক্ষ¥ পার্থক্য করার ক্ষমতা রাখে।’ তিনি বলেছেন, ‘মূর্তি সরানো হচ্ছে যা কাউকে মৃত্যু থেকে বাঁচাচ্ছে না। এটি প্রাণ বাঁচাবে না।’
আফ্রিকার শহর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ দাসের চালান যাওয়া ভ্রাম্যমান ঘাট আলা’র ৭৭ বছর বয়সী অধিকার আন্দোলনকর্মী ক্লিওন জোনস বলেন, কনফেডারেট স্মৃতিস্তম্ভগুলোর ওপর ধ্বংসযজ্ঞ সাম্যতার অগ্রগতি স্থগিত করে দিতে পারে, এই সম্ভাবনা দেখে তিনি হতাশ হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমদের এগিয়ে যেতে হবে, পেছনে ফেরা যাবে না। যতক্ষণ আমরা এসব মূর্তি নিয়ে মেতে আছি, আমরা ততক্ষণ সামনে এগিয়ে যাচ্ছি না।’
অবশ্য মূর্তিগুলো অপসারণের দিকে দৃষ্টিপাত করায় ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনের বাইরের শত শত বছরের গভীর নাগরিক বৈষম্য প্রকাশ পেয়েছে। এটি ইতালীয়-আমেরিকানদের মধ্যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া জাগিয়ে তুলেছে যারা দীর্ঘকাল ধরে কলাম্বাসকে গর্বের বিষয় হিসাবে বিবেচনা করতেন এবং নিউ মেক্সিকোতে কিছু হিস্পানিকদের মধ্যেও, যারা একটি যুগ উদযাপন করেন, যে সময়টিতে এঙলোরাও জনজীবনে আধিপত্য বিস্তার করেনি এবং কলাম্বাসকে নিয়ে গর্বও করেন।
ফিলাডেলফিয়ার কলাম্বাসের একটি মূর্তি রক্ষার জন্য জড়ো হওয়া একটি দলের ৫৮ বছর বয়সী ইতালিয়ান-আমেরিকান অভিবাসন আইনজীবি ক্রিস্টিন ফ্লাওয়ারস বলেছেন, ‘আমাদের ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের আরও ব্যাপক আলোচনা হওয়া দরকার।’ তবে তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘ফিলাডেলফিয়ার ইতালীয়-আমেরিকানদের সংস্কৃতির অত্যন্ত প্রিয় এবং অত্যন্ত প্রতীকি কিছুকে উপড়ে ফেলে ইতিহাসকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা অনায্য।’ স্মৃতিসৌধটি সরিয়ে নেয়ার বিরোধিতাকারী এক সাদা চামড়ার কাউন্টি সুপারভাইজার ট্রিপ হাইয়ারটন বলেছেন, ‘কিছু ইতিহাস শেখার জন্য এটি ভাল সময়। আমি অবশ্যই এসব ইতিহাসের সাথে একমত নই, তবে এটি যা, তাইই, এটি ইতিহাস।’
এটি এমন একটি যুক্তি ছিল, যা মূর্তিটি সরিয়ে ফেলার জন্য যারা চাপ দিচ্ছে, তাদের মধ্যে অনেককে বিভ্রান্ত করেছিল। কলাম্বাসের স্থায়ী বাসিন্দা ২৮ বছর বয়সী ডেভিড হর্টন, যিনি প্রথম রবার্ট ই. লী মিডল স্কুলের ৭ম শ্রেণির ছাত্র হিসেবে কনফেডারেট স্মৃতিসৌধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন, বলেন, ‘এরা একটি হারানো যুদ্ধকে স্মরণ এবং উদযাপন করছে, আমি বুঝতে পারি না।’ (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।