পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
ফরেন পলিসি : গত অক্টোবরে আরব মিডিয়া জানায় যে, বাশারের খালা বাহিজার পরিবার বাশার সরকারের প্রতি আরও উন্মুক্ত চ্যালেঞ্জ করেছেন। তার পুত্র গাইদাক বিদ্রোহের সময় দিয়ার এজরে বাশারের হয়ে লড়াই করেছিলেন এবং তারপর লাতাকিয়ায় এক সৈনিকের সাথে সংঘর্ষে নিহত হন। সৈনিকটি তাকে অপরাধমূলক কাজের জন্য অস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করতে এসেছিলেন। গাইদাকের পরিবার একটি ফেসবুক পোস্টে প্রতিশোধের অঙ্গীকার করেছিল। তবে এর পরবর্তী ফলাফলের ভয়ে তারা পরে তা ফেসবুক থেকে মুছে ফেলে।
অর্থনীতি হু হু করে তলানিতে এসে ঠেকায় আসাদের সাধারণ সমর্থকরা আশঙ্কা করতে শুরু করেছেন যে, তাদের আত্মত্যাগ সফল হয়েছে কি না। অনুগতরা নিজেদের রক্তের বিনিময়ে বাশারকে টিকিয়ে রেখেছেন এবং বিদ্রোহের সময় হাজার হাজার প্রাণ হারিয়েছেন। যুদ্ধ শেষে তারা প্রত্যাশিত কিছু বৈষয়িক মুনাফা অর্জন করার আশা করেছিলেন। যেমন, আরও বেশি চাকরির সুযোগ, পদোন্নতি বা সরকার-প্রদত্ত ব্যবসায়িক চুক্তিতে অগ্রাধিকার। কিন্তু এর পরিবর্তে দেউলিয়া সরকার তাদেরকে আরও দরিদ্র ও ক্ষুধার্ত করে রেখেছে।
প্রাক্তন সিরিয় কূটনীতিক বারাবান্দী বলেছেন যে, আলাবিরা এখন মাখলুফ-বাশার কাহিনীতে স্তম্ভিত। তিনি বলেন, ‘তারা মনে করে যে, তারা বহু কিছু হারিয়েছে এবং পরিশেষে কোন পুরষ্কার নেই। তারা ক্ষোভে ফুসছে যখন দেখছে যে, এই দুই চাচাত ভাই শত শত কোটি ডলারের জন্য পরস্পরের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, অথচ সাধারণ মানুষ একটা পয়সার জন্যও হাহাকার করছে।’
বেশ কয়েকজন সিরিয়া বিশেষজ্ঞ ফরেন পলিসিকে বলেছেন যে, বাশার আল-আসাদ আলাবিদের মধ্যে সমর্থন হারাচ্ছেন তাতে সন্দেহ নেই। তবে তারা আরও বলেছেন, শাসক দল লৌহমুষ্টি দিয়ে দেশটিকে নিয়ন্ত্রণ করছে এবং বাশারকে দুর্বল মনে করাটা অর্বাচীনতা হবে।
এটি কোনো গোপন বিষয় নয় যে, রিবাল এবং দাউরাইদ আল-আসাদ কামনা করেছিলেন যে, বাশার নয়, হাফেজের উত্তরসূরী হবেন তাদের বাবা রিফাত। তবে ৮২ বছরের বৃদ্ধ রিফাতের অতীতে হামা গণহত্যার রক্ত লেগে রয়েছে। রক্তাক্ত পথে লড়াই করে দামেস্কে পৌঁছানো তার পক্ষে অনেক দেরী হয়ে গেছে। রিবাল অবশ্য এখোনো তরুণ এবং স্বীকার করেছেন যে, তিনি সিরিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয় থাকতে চান। ফরেন পলিসিকে তিনি বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই চাই, তবে এ পর্যায়ে কোনও সরকারের অংশ নয়, বিরোধী হিসাবে।’
দেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য অন্যান্য যারা উসখুস করছেন, তাদের মধ্যে দীর্ঘকাল ধরে আল-আসাদ শাসনের অনুগত এবং বিদ্রোহের সময় বিদায় নেয়া মুস্তাফা তালাস’র পরিবারও রয়েছে। তালাসের ছেলে মানাফ বাশারের ঘনিষ্ঠ দলের অন্তর্ভুক্ত এবং শীর্ষস্থানীয় সামরিক কমান্ডার ছিলেন। বর্তমানে প্যারিসে বসবাসরত মানাফ রাশিয়াকে পরামর্শ দিয়েছে যে, রাশিয়া সমর্থন করতে আগ্রহী হলে বাশারের বিকল্প রয়েছে। মানাফের ভাই ফিরাস তালাস, যিনি বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থিত সিরিয়ান ব্যবসায়ী, তিনি মনে করেন যে, মানাফ তালাস বাশারের বিকল্প এবং সিরিয়ার রাজনীতিতে ভ‚মিকা নিতে চান। তবে তিনি কেবল তখনই সিরিয়ায় ফিরে আসবেন যখন বাশার বিদায় হবেন।’
আপাত দৃষ্টিতে, রাশিয়াকে বাশার আল-আসাদ প্রতিস্থাপনের পরিবর্তে সিরিয়া নিয়ন্ত্রণে বেশি আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে। পরবর্তীতে বাশারের জন্য যুদ্ধে নিমজ্জিত ও অর্থনৈতিকভাবে ধ্বসে পড়া সিরিয়া নিয়ন্ত্রণ করা আরও কঠিন হয়ে উঠবে। তবে, সিরিয়ার প্রেসিডেন্টকে নিয়ন্ত্রণ করা রাশিয়ার জন্য আগের চেয়ে আরো বেশি সহজ হয়ে উঠবে। (সমাপ্ত)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।