মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনাভাইরাসের কারণে গত ৩ মাস ধরে লকডাউনের জেরে রীতিমতো ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে ভারতীয় অর্থনীতি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনুন্নতির প্রভাব পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই নিয়ে অনেকেই ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। কেউ বলেছেন, স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি না করে মোদি তাদের জীবন ঈশ্বরের হাতে সঁপে দিয়েই নিশ্চিন্তে আছে। আবার অনেকেই টেনেছেন ভারতের অর্থমন্ত্রীর পাঁচ কিস্তির সাংবাদিক বৈঠকের কথা। যে বৈঠকে আর্থিক সংস্কারের সঙ্গে মাস্ক ও রোগ প্রতিহারী বর্মের উৎপাদন কত বেড়েছে তার তথ্য মিললেও একবারের জন্যও উচ্চারিত হয়নি দেশে আপৎকালীন ভিত্তিতে ভেন্টিলেটরের সরবরাহ কতটা বেড়েছে সেই তথ্য।
আর বিরোধী সহ সাধারণ মানুষের এত অনুযোগ, তখনই অভিযোগ হয়ে ওঠে যখন সরকারি তথ্যই বলে ভারতে আয়ের নিরিখে শেষের ২৫ শতাংশের মধ্যেকার ৩৯ শতাংশই মারা যাওয়ার আগে কোনও চিকিৎসার সুযোগ পান না। বর্তমান জনসংখ্যার নিরিখে এই ২৫ শতাংশ মানে কিন্তু প্রায় ৩০ কোটি। আর তার ৩৯ শতাংশ গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ১২ কোটির কাছাকাছি।
অর্থাৎ করোনার ছোবল নয়, ভারতে ১০ শতাংশের মতো মানুষ বা বর্তমান জনসংখ্যার হিসেবে ধরলে প্রায় ১২ কোটি মানুষ মারা যান শুধুমাত্র সঠিক চিকিৎসা না পেয়েই।
চিত্রটা আরও কালো হতে থাকে, যখন দেখা যায় ভারতে চিকিৎসার খরচ বাড়ছে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির থেকেও বেশি গতিতে। খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার যখন ৫.৮৪ শতাংশ, তখন চিকিৎসার খরচ বাড়ছে ৭ শতাংশেরও বেশি হারে। একদিকে রোজগার কমছে। আর একদিকে বাড়ছে সুস্থ থাকার খরচ। আর অসুস্থতা কাড়ছে আমাদের রোজগার। ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরামে পেশ করা গ্লোবাল হেলথকেয়ার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০৩০-এর মধ্যে অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে নানান রোগভোগের ফলে ভারতের ক্ষতি হবে প্রায় ৩২১ লক্ষ কোটি টাকার মতো।
অর্থাৎ ১ বছরের জাতীয় উৎপাদন খাবে অপ্রতুল চিকিৎসা ঘুণে। কিন্তু তা এড়াবার কোনও পদক্ষেপ সেভাবে দেখাই গেল না কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে। আয়ুষ্মান ভারত খাতায় কলমে ভালো প্রকল্প। কিন্তু দেশে চিকিৎসার পরিকাঠামোই যদি না থাকে, তা হলে স্বাস্থ্যবিমা থেকে আদৌ কি কোনও সুবিধা হবে জনগণের? করোনার ছোবলে নাগরিক এখন হাড়ে মজ্জায় বুঝছেন এর অর্থ, কাছের মানুষের মৃত্যুর মূল্যে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ভারতে গোটা জনসংখ্যার ১৪.৪ শতাংশ পরিবারে চিকিৎসা করাতে গিয়ে একজন সদস্যের গোটা বছরের খরচ চলে যায় এবং সাড়ে সাত কোটি মানুষের অসহায় মৃত্যুর এটা অন্যতম কারণ। এরপরেও কি আমরা এটাকে দেশের সমৃদ্ধি দশের সমৃদ্ধি বলব? প্রশ্ন কিন্তু থাকছেই। কেন্দ্রীয় সরকারের ২০১৯ সালের স্বাস্থ্য সমীক্ষাই অনুযায়ী, ভারতে স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় জাতীয় উৎপাদনের ১ শতাংশের একটু উপরে যখন বাংলাদেশ ও নেপাল ছাড়া অন্য প্রতিটি কাছের দেশগুলোতে স্বাস্থ্যখাতে খরচের অংশ আমাদের থেকে অনেক বেশি। তাই রাজ্যগুলিকে দোষারোপ নয়, বরং আত্মসমীক্ষা দরকার এবার কেন্দ্রেরই। -পুবের কলম
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।