Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

রেডিয়েশন থেরাপিতে করোনা মারতে চায় তুরস্ক

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় বিশ্ব জুড়ে লাগাতার চলছে প্রচেষ্টা। তবে এখন পর্যন্ত করোনার স্থায়ী কোন প্রতিষেধকের খোঁজ মেলেনি। এবার করোনার চিকিৎসায় রেডিয়েশন থেরাপি তুর্কিবিম নিয়ে এলো তুরষ্কের একদল বিজ্ঞানী। রেডিয়েশন থেরাপিটি কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই অণুজীব, ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস জাতীয় জীবের সম্পূর্ণ ধ্বংস নিশ্চিত করে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

তুর্কি বিজ্ঞানীদের তৈরি এই রেডিয়েশন থেরাপি এরই মধ্যে ক্লিনিকাল ট্রায়ালে রয়েছে। আঙ্কারার গাজী বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওভাসকুলার সার্জন হিকমেত সেলকুক গেদিক আরডি গ্লোবাল ইনভেমড-এ প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পরই ক্লিনিকাল স্টাডি প্রক্রিয়া, যা রোগীদের উপর চিকিৎসা পদ্ধতিটির বাস্তবায়নের সুযোগ করে দেয়, শুরু হয়েছে।

তুর্কিবিম হল একটি রশ্মি চিকিৎসা ব্যবস্থা যা তুর্কিবিম সিলেকটিভ-সেনসিটিভ ইউভিসি এবং লেজার থেরাপি বা তুর্কিবিমের বিজ্ঞানীদের তিন বছরের গবেষণার ফল। এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি বিশ্বে প্রথবারের মত তুরষ্কে করোনা রোগীদের দেহে প্রয়োগ করা হবে।

রেডিয়েশন থেরাপি তৈরির প্রক্রিয়াটি ভাইরাস এবং ব্যাকটিরিয়ার মতো অণুজীবগুলির উপর অধ্যয়ন দিয়ে শুরু হয়েছিল। এরপর প্রাণী এবং মানবকোষে এর প্রভাব সম্পর্কে গবেষণা শেষে ক্লিনিকাল ট্রায়ালের পর্যায়ে পৌঁছেছে। গেল ৪ মে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ক্লিনিকাল স্টাডির জন্য আবেদনটি অনুমোদন করে। পরে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষার এবং সহযোগিতার জন্য আমন্ত্রিত জানানো হয়।

টিকা উদ্ভাবন হলেই দ্রুত উৎপাদনে যেতে চায় সিঙ্গাপুর
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে টিকা উদ্ভাবনের জন্য সারাবিশ্বের গবেষকরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোও সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এশিয়ার চারটি দেশ করোনার টিকা উদ্ভাবনে ব্যাপক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। করোনার টিকা উদ্ভাবন করা গেলে দ্রুত এবং অত্যধিক পরিমাণে তা যেন উৎপাদন করা যায়, সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর।

সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হিসিয়েন লুং গত শুক্রবার ভার্চুয়াল গ্লোবাল ভ্যাকসিন সামিটে বলেছেন, টিকা উদ্ধাবন হয়ে গেলে তা উৎপাদন সম্পন্ন করে দেয়া হবে। তিনি আরো বলেছেন, ভায়াল থেকে শুরু করে সূচ পর্যন্ত আমরা প্রস্তুত করে দেব। জনসংখ্যা বিবেচনা করে টিকা দ্রুত উৎপাদন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করা হবে। কারণ, অনেকগুলো ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান দূষণের ঝুঁকিতে থাকে এবং তাদের তৈরি ভায়াল ভেঙে যায়। তিনি আরো বলেছেন, এসব বিবেচনা করে দ্রুত টিকা উদ্ভাবন করা হবে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে এবং তার গুণগত মান হবে উচ্চ। সূত্র : স্ট্রেইট টাইমস

করোনার সম্ভাব্য ‘ভেষজ ওষুধ’ তৈরির পথে ভারতীয় কোম্পানি সান
কোভিড-১৯-এ আক্রান্তদের সারিয়ে তুলতে ভেষজ চিকিৎসা নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা চলছে ভারতে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি সান ফার্মাসিউটিক্যালস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড জানিয়েছে, করোনা চিকিৎসায় তারা সম্ভাব্য একটি ভেষজ ওষুধের পরীক্ষা শুরু করেছে। একিউসিএইচ নামের এই ওষুধের পরীক্ষা এখন মাঝমাঝি পর্যায়ে রয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী অক্টোবরের মধ্যেই চ‚ড়ান্ত ফলাফল এসে যাবে।

সান ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, একিউসিএইচ নামের এই ওষুধটি উষ্ণমন্ডলীয় অঞ্চলের লতানো গুল্ম কক্কুলাস হিরসাটাস থেকে নিষ্কাশন করা হয়েছে। এই ভেষজ উদ্ভিদটি এশিয়া ও আফ্রিকায় ওষুধ হিসেবে বহুল প্রচলিত। এর হিন্দি নাম ‘ফরিদ বুটি’। আর সংস্কৃত ভাষায় এটি ‘পাতাল গারুদি’ নামে সমধিক পরিচিত।

ওষুধ কোম্পানিটি বলছে, তারা ভারতজুড়ে ১২টি চিকিৎসা কেন্দ্রে ২১০ জন রোগীর ওপর এই ওষুধটি প্রয়োগ করবে। তারা এরই মধ্যে পরীক্ষা করে দেখেছে যে, এই ওষুধের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। মানবদেহের জন্য এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ। অর্থাৎ তাদের দাবি অনুযায়ী এই ওষুধে করোনা নিরাময় না হলেও রোগীদের কোনো ক্ষতি হবে না।

গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি আরো জানায়, একিউসিএইচ ওষুধটি আসলে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার জন্য তৈরি করা হচ্ছিল। সেই সঙ্গে ল্যাবরেটরিতে এটির ভাইরাসবিরোধী বৈশিষ্ট্যও দেখা গেছে। এ কারণেই করোনা চিকিৎসায় তারা এটি ব্যবহারেরে উদ্যোগ নিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে করোনার ভ্যাকসিন তৈরিতে যে প্রতিযোগিতা চলছে তাতে সামিল রয়েছে ভারতের দুই ওষুধ কোম্পানি গেøনমার্ক ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড এবং স্ট্রাইডস ফার্মা সায়েন্স লিমিটেড। তবে এর আগে সেখানকার কোনো ওষুধ কম্পানি ভেষজ নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা চালায়নি। এক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করলো সান ফার্মা।

এমনিতেও ভারতে ভেষজ চিকিৎসার কদর রয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং ভেষজ চিকিৎসার ভক্ত। সেখানে করোনা প্রাদুর্ভাবের পর তিনি দেশবাসীকে এই রোগ ঠেকাতে ভেষজ ওষুধ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তখন মোদি ভারতীয়দের যে ভেষজ ওষুধ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছিলেন সেটি হলো ‘কাঢ়া’। তুলসি পাতা, শুকনো আদা, দারুচিনি, গোল মরিচ, কিশমিশ ইত্যাদি একসাথে মিশিয়ে এটি তৈরি করা হয়।

উল্লেখ্য, ভারতে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৬ হাজার ৬৪৯ জন। আক্রান্তের হিসাবে করোনার মৃত্যুপুরী ইতালিকে টপকে বিশ্বে ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে ভারত। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ