Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইউরোপের পর্যটকদের জন্য খুলল ইতালি

স্পেনে মৃত্যু নেই দু’দিন গ্রীষ্মের তাপে কমবে সংক্রমণ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ জুন, ২০২০, ১২:০০ এএম

করোনা মহামারির কারণে প্রায় তিন মাস সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল ইতালি। সংক্রমণ কমে আসায় ব্যবসা-বাণিজ্য শুরুর পরিকল্পনায় গতকাল ইউরোপের পর্যটকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে দেশটি।

করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর অন্যতম ইতালি। তবে ইতালির অবস্থা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। দেশটিতেতে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটও শুরু হয়েছে গতকাল থেকেই। এ ক্ষেত্রে কোনো কোয়ারেন্টিন ও অনুমতিপত্রও লাগবে না। পর্যটকদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ইতালির অসংখ্য মানুষের জীবিকা। সাধারণত এই সময়ের অনেক আগে থেকেই পর্যটকেরা আসতে শুরু করেন ইতালিতে। এই সমাগম চলে একেবারে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। রোমের ভ্যাটিকান সিটি ও কলোসিয়ামও খুলে দেয়া হয়েছে। অনলাইনে টিকিট কেটে আসতে হচ্ছে দর্শনার্থীদের। মুখে মাস্ক ও শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষার মাধ্যমে চলছে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার অদম্য আগ্রহ।

লকডাউন শিথিলের দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রায় সব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, শিল্পকারখানাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে যাচ্ছে। দেশটির সরকার নাগরিকদের দেশপ্রেমের পথে হাঁটতে বলেছেন সচেতন ও সর্তক থেকে এবং স্বাস্থ্যবিধিগুলো মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

তবে, ইউরোপের আরেক দেশ সুইজারল্যান্ড তার নাগরিকদের হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, তারা যদি ইতালি যায় তবে প্রত্যাবর্তনের সময় তাদেরকে ‘আইসোলেশন’ এর মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। দেশটি ১৫ জুন জার্মানি, ফ্রান্স এবং অস্ট্রিয়ার সাথে তার সীমান্ত উন্মুক্ত করবে, তবে ইতালির সাথে নয়।

জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়া এবং হাঙ্গেরির জন্য জুনের মাঝামাঝি সময়ে অস্ট্রিয়া নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে দিচ্ছে। তবে তারাও ইতালিকে বাদ রেখেছে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী গত সপ্তাহে ইতালিকে ‘এখনও হটস্পট’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। অন্যান্য দেশ, যেমন বেলজিয়াম এবং ব্রিটেন এখনও নাগরিকদেরকে প্রয়োজন ছাড়া বিদেশে যেতে নিষেধ করছে। সূত্র : এএফপি।

গ্রীষ্মের তাপে কমবে করোনা সংক্রমণ
ডেইলি মেইল জানায়, গ্রীষ্মকালে করোনা মহামারী বিস্তারে গতি ধীর হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন হার্ভার্ডের গবেষকরা। তবে সামাজিক দূরত্ব অনুসরণ না করলে এর বিস্তার ব্যাপকভাবে কমানো সম্ভব নয় বলে সতর্ক করে দিয়েছেন তারা। ম্যাসাচুসেটসের হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের গবেষকরা বলেছেন, তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে সংক্রমণের গতি ধীর হয়ে যাবে।

একটি নতুন গবেষণায় তারা জানিয়েছেন যে, ৬০ ডিগ্রি ফারেহাইটের চেয়ে বেশি তাপমাত্রাযুক্ত অঞ্চলগুলিতে প্রতি ১০ লাখে সর্বোচ্চ ১শ’ ৪০ জনের মধ্যে সংক্রমণ পরিলক্ষিত হতে পারে। ইনকিউবেশন পিরিয়ডের ওপর ভিত্তি করে, গবেষকরা বলেছেন, ৫২ ডিগ্রির চেয়ে কম তাপমাত্রাযুক্ত অঞ্চগুলোর মানুষের মধ্যে প্রতি ১০ লাখে ১শ’ ৬০টি এবং ৫২ ডিগ্রির চেয়ে বেশি তাপমাত্রাযুক্ত অঞ্চগুলিতে প্রতি ১০ লাখে ১শ’ ৩৭টি সংক্রমণ ঘটতে পারে এবং ৩০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রাযুক্ত অঞ্চগুলিতে প্রতি ১০ লাখে ২শ’ ৫০টি সংক্রমণ ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। গবেষণার নমুনাগুলো থেকে জানা গেছে, জনসংখ্যার ঘনত্বের মতো অনান্য বিষয়গুলো সংক্রমণের ক্ষেত্রে তাপমাত্রার ফলাফলে কোনো প্রভাব ফেলেনি।

তবে, তারা নথিতে উল্লেখ করেছেন, ‘আমাদের বিশ্লেষণের ভিত্তিতে পরিমিত অনুষঙ্গ থেকে প্রতীয়মান যে, কেবলমাত্র তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেলেই গ্রীষ্মের মাসগুলোতে রোগ সংক্রমণ নাটকীয়ভাবে হ্রাস পাবে না’। তারা জানিয়েছেন, উষ্ণ তাপমাত্রা বা গ্রীষ্মের দাবদাহ সম্পূর্ণভাবে ভাইরাসটির বিস্তার রোধ করতে যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব এবং ফেস মাস্ক পরার পাশাপাশি অন্যান্য সতর্কতামূলক পদক্ষেপগুলি এখনো প্রয়োজন।

স্পেনে নতুন মৃত্যু নেই করোনা
সিএনএন জানিয়েছে, গত ২ এপ্রিল এক দিনে স্পেনে কোরানাভাইরাসে মারা গিয়েছিল ৯৬১ জন। সেখান থেকে কমে করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা শূন্যতে নেমে এসেছে। পরপর দ্বিতীয় দিনের মতো নতুন কোনো করোনা রোগীর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবারে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে দেখা যায় স্পেনে মৃতের সংখ্যা ২৭ হাজার ১২৭ জন এবং গত দুইদিনে করোনায় কেউ মৃত্যুবরণ করেনি। দেশটিতে মোট ১ লাখ ৮৭ হাজার ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছেন।

এদিকে কেন্দ্রীয় জরুরি স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডক্টর ফারনান্দো সাইমন বলেন, মৃতের সংখ্যা নিয়ে এসব উপাত্ত আসলে কিছু সমস্যার তৈরি করছে যা পরের দিন সামঞ্জস্যে আনা হতে পারে। পাশাপাশি, দেশের ১৭টি অঞ্চলের গভর্নরেরা কেন্দ্রে তথ্য-উপাত্ত দিতে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে বলে জানান ফারনান্দো সাইমন। স্প্যানিশ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় ২ লাখ ৩৯ হাজার ৯৩২ জন আক্রান্ত হয়েছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ