Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১, ০৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বদলে যাচ্ছে চীনে খাবার গ্রহণ পদ্ধতি!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩১ মে, ২০২০, ১২:২৯ পিএম

চীনে এক সঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়া একটি ভালোবাসার প্রতীক। করোনাভাইরাসের কারণে সেই ধারা থেকে সরে আসতে বাধ্য হচ্ছে। তাদের নতুন স্লোগান হচ্ছে খাবার ভাগ করুন ভালোবাসা নয়।

চীনের সংস্কৃতি অনুযায়ী খাওয়ার সময় একজন বড় একটি বাটি থেকে চপস্টিক এর মাধ্যমে খাবার তুলে বাকিদের পরিবেশন করে থাকে। পারিবারিক জমায়েতে এটি করে থাকেন বাড়ির সব থেকে বয়স্ক মানুষটি। বন্ধুদের মধ্যে আড্ডা দেয়ার সময়েও তারা নিজেদের মাঝে এমনটি করে থাকে। গত এক শতাব্দী ধরে এই সংস্কৃতি চলে আসছে দেশটিতে। কিন্তু এরপরে কোভিড-১৯ এসে সবকিছু পাল্টে দিলো।
অল্প কয়েকটি দেশেই মহামারীর কারণে নিজেদের সংস্কৃতিকে বাদ দিতে হয়েছে। তবে চীনের এই সংস্কৃতি নিয়ে চীনারা নিজেরাই উদ্বিগ্ন। চীনা গণমাধ্যমে এরই মধ্যে এ নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত চপস্টিক থেকে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। একসঙ্গে বসে খেলে এমনিতেই নিঃশ্বাসের মাধ্যমে একজনের কাছ থেকে অন্য জনের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। যদিও বিশেষজ্ঞরা চপস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাবধান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছেন। দেশটিতে খুলতে শুরু করেছে রেষ্টুরেন্টগুলো। ফলে সম্ভাব্য ঝুঁকি কে সামনে রেখে সেখানে একসঙ্গে বসে খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নানা নিয়ম নীতি প্রণয়ন করা হচ্ছে । চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমেও কিভাবে চপস্টিক ব্যবহার করতে হবে তা নিয়ে জোর প্রচারণা চলছে। নতুন যে পদ্ধতিতে একসঙ্গে খাবার খাওয়ার কথা বলা হচ্ছে তাতে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর জুকি তুলনামূলক কম। এতে থাকছে অতিরিক্ত চপস্টিক যা সাধারণের থেকে কিছুটা লম্বা। এর ফলে এটি একদম মুখে পুরে খেতে হয় না। এ ধরনের চপস্টিক চীনের বাইরে জাপান ও তাইওয়ানে জনপ্রিয়। থেকে বেশি আক্রান্ত প্রদেশ হচ্ছে হুবেই প্রদেশ । সেখানে এখন স্কুলগুলোতে অনলাইনে ক্লাস চলছে। তাতেও চপস্টিক ব্যবহারে নিরাপদ উপায় সম্পর্কে শেখানো হচ্ছে। সাংহাইয়ের একটি রেস্টুরেন্ট নতুন চপস্টিক ব্যবহারের শর্তে ক্রেতাদের ফ্রি পার্কিংয়ের সুবিধা দিচ্ছে ।
রাজধানী বেইজিংয়ের শহর কর্তৃপক্ষ আদর্শ ব্যবহার নামে নতুন নিয়ম চালু করেছে। এতে সবার জন্য আলাদা চপস্টিক ব্যবহারের কথা উল্লেখ রয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ও পশ্চিমাদের মতো নিজের খাবার নিজে নিয়ে খাবার সংস্কৃতি চালু করার কথা বলছে। ইতিমধ্যে চীনে বেশ কয়েকটি রেস্টুরেন্ট নতুন পদ্ধতিতে খাবার পরিবেশন শুরু করেছে। এরমধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মালয়েশিয়ার একজন ব্যবসায়ীর। তিনি তার রেস্টুরেন্টে এমন একটি টেবিল চালু করেছে যাতে খাবার ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে একজনের থেকে আরেকজনের কাছে নিয়ে যাওয়া যায়। ১৯৮৪ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হু ইয়োব্যাংক প্রস্তাব তুলেছিলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য হলেও চীনের মানুষের চপস্টিক দিয়ে খাওয়ার ধরন পাল্টে পশ্চিমাদের মত চামচ দিয়ে খাওয়ার প্রচলন চালু করতে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এখন সেই পশ্চিমাদের মত করে খাবার পদ্ধতি প্রচার করছে। তবে এক্ষেত্রে তারা চীনের সংস্কৃতির প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা রেখে প্রচারণা চালাচ্ছেন। কারণ দেশটিতে এক সঙ্গে খাবার ভাগ করে খাওয়া একটি ভালোবাসার প্রতীক। প্রচারণায় বলা হচ্ছে খাবার ভাগ করুন ভালোবাসা নয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি পোল থেকে জানা গেছে অন্তত ২৭ ভাগ চীনা মানুষ নতুন এ পদ্ধতি কে স্বাগত জানাবেন বলে জানিয়েছেন। অপরদিকে বিরুদ্ধে রয়েছেন ৩০ শতাংশের মতো মানুষ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ