Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিচারাঙ্গনে উৎকণ্ঠা

আদালত বন্ধ রাখার পক্ষে সাধারণ আইনজীবীরা

সাঈদ আহমেদ | প্রকাশের সময় : ৩০ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

‘সাধারণ ছুটি’ না বাড়ায় করোনা সংক্রমিত হওয়ার উৎকণ্ঠা নেমে এসেছে বিচারাঙ্গনে। নির্বাহী বিভাগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখনই নিয়মিত আদালত খুলে দিলে করোনা সংক্রমণে ভয়াবহ পরিণতি হবে মর্মে আশঙ্কা করছেন আইনজীবী ও সংশ্লিষ্টরা।
ইতিমধ্যে একাধিক আইনজীবী করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন বিচারপতিও। সারা দেশে হুহু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। এতে বিচারাঙ্গনের মানুষদেরও ভীত সন্ত্রস্ত করে তুলেছে। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আদালত বন্ধের পক্ষে অবস্থান ব্যক্ত করছেন সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবীরা।
তাদের মতে, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের যত শর্তই দেয়া হোক না কেন নিয়মিত আদালত এখনই খুলে দিলে সেটি হবে আত্মঘাতী। তবে মামলায় আইনজীবীদের ‘সমান সুযোগ’ দিতে ভার্চুয়াল আদালতের সংখ্যা বৃদ্ধির পক্ষেও মত দেন কোনো কোনো আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল তার ফেসবুক আইডি’তে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতিসমূহ ‘স্বাস্থ্যবিধি› পালনে প্রস্তুত না থাকলে, প্রস্তুতি নিয়ে সাতদিন পর কোর্ট খোলা হোক।’ অ্যাডভোকেট টি.এম.শাকিল হাসান বলেন, ‘কোনো কোর্ট চাই না আপাতত, অন্তত: আরও দুই সপ্তাহের জন্য। প্রয়োজনে সামনের লম্বা ছুটি ছোট করে আরও দুই সপ্তাহ কোর্ট বন্ধ রাখা হউক।’
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক অর্থ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথী বলেন, ‘কোনো ভার্চুয়াল কোর্ট না ... কোর্ট হলে হবে একচুয়াল কোর্ট নইলে নয় .... কেউ সুবিধা পাবে না .... কেউ পাবে ....তা হবে না এবার আশা করি’। অ্যাডভোকেট এফআর খান লেখেন, ‘ভার্চুয়াল চরম বৈষম্য, স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হবে।’
অ্যাডভোকেট ইউনূস আলী রবি তার আইডিতে ‘রম্যকথন’ এ ভার্চুয়াল কোর্ট’র দুর্ভোগ তুলে ধরেন। বলেন, ‘হতবাক সাধারণ আইনজীবীগণও। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই কোনো রকম প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ না দিয়েই সকল আইনজীবীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করেই মাত্র কয়েক জন আইনজীবীকে সংশ্লিষ্ট করে এধরনের ভার্চুয়াল শুরু হয়ে গেলো! নানা দুর্ভোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, শুনেছি ভার্চুয়াল কোর্ট নিয়ে ভোগান্তিতে আছেন ডিজিটাল আইনজীবীগণও। কারণ অ্যাকুচয়াল উপস্থিত ছাড়া মামলা ভার্চুয়াল লিস্টে আসে না। মামলা লিস্টে আসিলে লিংক পাওয়া যায় না। আবার লিংক পাইলে লিস্টে মামলা থাকে না! আবার সবকিছু পাওয়া গেলে নেটওয়ার্ক থাকে না! নেটওয়ার্ক থাকিলে ইউনিফর্ম পরিয়া আগানে-বাগানে চলিয়া যেতে হয়, এমন ভার্চ্যুয়াল চাই না। যেহেতু মামলা লিস্টে তোলার জন্য অ্যাকচুয়াল উপস্থিত হতেই হয় তাই ভার্চ্যুয়াল নয়-কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে অ্যাকচুয়াল কোর্ট খুলে দেয়া হোক।
অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান লিখেন, প্রধান বিচারপতি ও বার কমিটির প্রতি অনুরোধ- কোর্ট না খোলার জন্য। রেগুলার কোর্টের সম-পরিচালমান ভার্চুয়াল কোর্ট দেয়া হোক। আরও এক মাস করোনা পরিস্থিতিতে অবলোকন করা উচিৎ।
প্রসঙ্গত: করোনা প্রকোপে ২৪ মার্চ থেকে বন্ধ সুপ্রিম কোর্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম। সুপ্রিম কোর্ট বারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ মে সুপ্রিম কোর্টে চালু হয় ৩টি ভার্চুয়াল বেঞ্চ। সাধারণ ছুটির মেয়াদ বৃদ্ধি করেনি সরকার। ৩০ মে শেষ হচ্ছে সাধারণ ছুটি। ৩১ মে থেকে সীমিত আকারে খুলছে সরকারি- বেসরকারি দফতর। এ পরিস্থিতিতে নিয়মিত আদালত খোলা হবে কি না- ২৮ মে পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আদালত

২৪ নভেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ