পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৯ বছর পর প্রকাশিত হয়েছে আদালত অবমাননা আইন অবৈধ ঘোষণা করে দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায়। গতকাল বুধবার রায়ের ৩৮ পৃষ্ঠার সার্টিফায়েড কপি হাতে পাওয়ার কথা জানিয়েছেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। দেশের সংবাদ মাধ্যম এবং সরকারি কর্মকর্তাদের কিছু সুরক্ষা দিয়ে আদালত অবমাননার যে আইন করা হয়েছিল, হাইকোর্ট সে আইনকে সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বিবেচনায় ‘অবৈধ’ ঘোষণা করে রায় দেন ২০১৩ সালের সেপ্টম্বরে। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি এবিএম আলতাফ হোসেনের তৎকালিন ডিভিশন বেঞ্চ রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ওইবছর ২৬ সেপ্টেম্বর রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা আইন’২০১৩ বাতিল ও অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আপিল করে সরকারপক্ষ। তৎকালিন চেম্বার জাস্টিস সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আবেদন নামঞ্জুর করে ২৯ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। কথা ছিল, ওই বছর ৩ অক্টোবর পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে। চেম্বার কোর্টে তৎকালিন মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব হাইকোর্টের রায় স্থগিতের আবেদন করেন। সরকারপক্ষে শুনানি করেন তৎকালিন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
আইনটি অবৈধ ঘোষণার পর মাহবুবে আলম বলেছিলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সরকারি কর্মচারীদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনের কথা বিবেচনায় রেখে সরকার আইনটি প্রণয়ন করেছে। আদালত আইনটি বাতিল ঘোষণা করেছেন।
প্রসঙ্গত: ২০১৩ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে আদালত অবমাননা আইন, ২০১৩ পাস হয়। ১৯২৬ সালের আদালত অবমাননার আইন রহিত করে ২৩ ফেব্রুয়ারি গেজেট প্রকাশিত হয়। আইনের ৪, ৫, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৩(২) ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ২৫ মার্চ দুই আইনজীবী রিট করেন।
রায়ে আদালত বলেন, ৪, ৫, ৬, ৭, ৯, ১০, ১১ ও ১৩(২) ধারা সংবিধানের ১০৮, ১১২ ও ২৭ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত। যেকোনো আইনে দেশের সব নাগরিককে সমান অধিকার দেয়া হয়ে থাকে। এ আইনে সেকশন অব পিপলকে (জনগণের একটা অংশকে) সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। যা বৈষম্যমূলক, সংবিধানের ২৭, ১০৮ ও ১১২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থি। হাইকোর্ট রায়ে বলেন, অবশ্যই সত্য প্রকাশ ও সমালোচনার সীমা অবারিত নয়। বিধিনিষেধ ছাড়া অবারিত স্বাধীনতা পূর্ণ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। সঠিক ও সত্য প্রকাশের একটি নির্দিষ্ট পরিমণ্ডল থাকতে হবে। আমরা চাই না, কারো হাত বাঁধা থাকুক। আমরা প্রতিদিনই প্রেসের (গণমাধ্যম) সাহায্য নিই। প্রেস শক্তিশালী মাধ্যম। আমরা প্রেসকে ‘লিমিট’ করতে চাই না। আবার প্রেসও যেন লিমিটের বাইরে না যায়।
রায়ে বলা হয়, আদালত কখনো অবমাননার অভিযোগ আনতে চায় না। সীমা অতিক্রম করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এটা করতে হয়। ২০১৩ সালের আইনে কোন কোন বিষয় আদালত অবমাননা নয়, তা নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আগের আইনে এ বিষয় স্পষ্ট করা ছিল না। আইনের ৪ ধারায় নির্দোষ প্রকাশনা বা বিতরণ অবমাননা নয়, ৫ ধারায় পক্ষপাতহীন ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ আদালত অবমাননা নয়, ৬ ধারায় অধস্তন আদালতের সভাপতিত্বকারী বিচারকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আদালত অবমাননা নয়, ৭ ধারায় কিছু ক্ষেত্র ছাড়া বিচারকের খাসকামরায় কক্ষে অনুষ্ঠিত প্রক্রিয়া-সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ আদালত অবমাননা নয় বলে আইনে ব্যাখ্যাসহ বলা হয়েছে। আইনের ৯ ধারায় আদালত অবমাননার পরিধি বিস্তৃত না হওয়া অর্থাৎ এ আইনে শাস্তিযোগ্য নয়- এমন কোনো কাজ আদালত অবমাননা বলে গণ্য হবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।