পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মহামারী করোনাভাইরাসে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে স্থবির হয়ে পড়েছে ব্যবসা-বাণিজ্য। এতে সরকারের আয় যেমন কমেছে অন্যদিকে বেড়েছে খরচের পরিমাণ। তাই ব্যয় ব্যবস্থাপানা ঠিক রাখতে বাধ্য হয়ে বাড়তি ব্যাংক ঋণ নিচ্ছে সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ১৩ মে পর্যন্ত ব্যাংক খাত থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৮১ হাজার কোটি টাকা। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৩ হাজার ৬৩৬ কোটি টাকা বা ৭১ শতাংশ বেশি। বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি অর্থবছরে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেবে বলে ঠিক করেছিল সরকার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত সাময়িক হিসাবে সরকার ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেয় ৫৭ হাজার ৯২৯ কোটি টাকা। যা নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার ৫৬৫ কোটি টাকা বা ২২ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি। ১৫ দিনের মাথায় ১৩ মে এসে সরকারের ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮১ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ গত ১৫ দিনে সরকার ২৩ হাজার কোটি টাকা বেশি ব্যাংক ঋণ নিয়েছে। আর করোনা প্রার্দুভাবের সময়ে গত আড়াই মাসে সরকার ঋণ নিয়েছে ২৮ হাজার ৮৬৩ কোটি টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১৩ মে পর্যন্ত সরকারের ৮১ হাজার কোটি টাকার ব্যাংক ঋণের মধ্যে তফসিলি ব্যাংক থেকে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের মাধ্যমে ঋণ নিয়েছে ৬৯ হাজার কোটি আর কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে বাকি ১২ হাজার কোটি টাকা। এতে চলতি অর্থবছরের ১৩ মে পর্যন্ত সরকারের পুঞ্জীভ‚ত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৮৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। যা চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের শুরুতে ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকারের পুঞ্জীভ‚ত ঋণের স্থিতি বা পরিমাণ ছিল এক লাখ আট হাজার ৯৫ কোটি সাত লাখ টাকা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকার প্রতিবছর বাজেট ব্যয় ব্যবস্থাপনার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক খাত থেকে অর্থ ধারের লক্ষ্য ঠিক করে। কিন্তু চলমান করোনা সংকটে ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ। ফলে রাজস্ব আদায় হচ্ছে না। অন্যদিকে নিয়মিত ব্যয়ের সঙ্গে করোনায় ত্রাণ বিতরণ, চিকিৎসা, স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ব্যয় বেশি করতে হচ্ছে সরকারকে। ফলে বাড়তি ব্যয় জোগাতে ব্যাংক ঋণে ঝুঁকছে সরকার।
বাজেট ঘাটতি মেটাতে চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে সরকার ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা ঋণ নেবে বলে ঠিক করেছিল। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আহরণ না হওয়ায় অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ব্যাংক ঋণ নেয় সরকার। এমন পরিস্থিতিতে মার্চ মাসে এসে ঋণ নেয়ার পরিমাণ সংশোধন করে ৭২ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রাও এখন অতিক্রম করেছে। অর্থবছরের আরও দেড় মাস বাকি রয়েছে। ফলে আগামীতে ঋণের পরিমাণ আরও বাড়বে বলছে খাত সংশ্লিষ্টরা।
২০১৯-২০ অর্থবছরে বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। ব্যয় খাতে বরাদ্দ তিন লাখ ২০ হাজার ৪৬৯ কোটি। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দ ধরা হয়েছে দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি ধরা হয় এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। এদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ধার নেবে সরকার। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ৪৭ হাজার ৩৬৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাতে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়।
এদিকে বিভিন্ন পক্ষের দাবির প্রেক্ষিতে সঞ্চয়পত্রের সুদহার না কমিয়ে এ খাতে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। সঞ্চয়পত্র কেনায় জুড়ে দেয়া হয়েছে নানা শর্ত। ফলে বিক্রি কমে গেছে। যার কারণে সঞ্চয়পত্রে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ১২ হাজার কোটি টাকায় নামানো হয়েছে। জুলাই-জানুয়ারি সময়ে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ পেয়েছে মাত্র সাত হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছর যেখানে সঞ্চয়পত্র থেকে ৪৭ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা ঋণ নেয় সরকার।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে এনবিআরের মাধ্যমে মোট রাজস্ব আহরণের মূল লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে তিন লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রথম সাত মাসে (জুলাই থেকে জানুয়ারি) রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ছিল এক লাখ ৬৪ হাজার ৬৯ কোটি টাকা। তবে এই সময়ে শুল্ক-কর মিলিয়ে আদায় হয়েছে এক লাখ ২৪ হাজার ৫২৭ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যমাত্রার ৭৬ শতাংশ। এতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৫৪২ কোটি টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।