পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বঙ্গোপসাগর উত্তল। আছড়ে পড়ছে ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার ঢেউ। ভীতি আতঙ্ক আর উদ্বেগের মধ্যে লাখ লাখ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নেয়া হচ্ছে। নিরাপদ জায়গায় চলে যাওয়ার জন্য মাইকিং চলছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানের কবলে গোটা দেশ। ১০ নম্বর বিপদ সংকেত দেয়া হয়েছে সমুদ্রবন্দর ও কয়েকটি জেলায়। গণপরিবহণ বন্ধ অনেকদিন ধরে। ফেরিও চলছে না। তবুও রাজধানী ঢাকা ছাড়ছে হাজার হাজার মানুষ। যানবাহনহীন পথের চরম ভোগান্তিকে মেনে নিয়েই নানা কৌশলে ঈদ করতে গ্রামে যাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ।
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে কয়েকদিন আগে সাধারণ মানুষের অবাধ চলাচল নিষিদ্ধ করে আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।সামাজিক ট্রান্সমিশন রোধে এক জেলার মানুষ যাতে অন্যজেলায় যেতে না পারেন সে জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আইন শৃংখলা বাহিনী রাজধানীর প্রবেশ ও বাহির পথগুলোতে চেকপোষ্ট বসিয়েছে। পথচারীদের দেখলেই জেরা করছেন এবং ঘরে ফিরিয়ে দিচ্ছেন। কোথাও কোথাও জরিমানা করা হচ্ছে।
তারপরও ঘূর্ণিঝড়ের মহাবিপদ এবং করোনা সংক্রমণের মধ্যেই রাজধানী ঢাকার থেকে বের হওয়া সড়কগুলোতে মানুষের ঢল নেমেছে। সামাজিক দূরত্ব রক্ষার বালাই নেই; একে অন্যের হাত ধরে গাদাগাদি করে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন মানুষ। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক মুখে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ি, কাঁচপুর সাইনবোর্ড, বাবুবাজার ব্রিজ, কল্যাণপুর, গাবতলী, আমিনবাজার, উত্তরা হাউস বিল্ডিং, টঙ্গী, আশুলিয়া, আবদুল্লাহপুর, ঢাকা মাওয়া সড়কে প্রায় একই চিত্র। কেউ পায়ে হেটে যাচ্ছেন। কেউ বা ভ্যানে, ট্রাকে, মোটরসাইকেলে এবং এম্ব্যুলেন্সে করে ঢাকা ছাড়ছেন। আইনশৃংখলাবাহিনী ঈদ উপলক্ষ্যে মানুষের গ্রামমুখিতা ঠেকাতে সব ধরণের ফেরি, লঞ্চ বন্ধ করে দিয়েছে। তারপরও হাজার হাজার মানুষকে দেখা যায় মাওয়া, মানিকগঞ্জের বিভিন্ন ঘাটে অপেক্ষা করছে পারাপারের জন্য।
সরকার মূলত করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়। ঈদে মানুষকে নিজ নিজ বাসস্থানে থাকার আহবান জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ ঘোষিত আদেশে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির সময়ে সড়কপথে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান ও রেল চলাচল এবং অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল বন্ধ থাকবে। একই সঙ্গে মহাসড়কে মালবাহী ও জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন ব্যতীত অন্যান্য যানবাহন কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা আদেশে আরো বলা হয়েছে, সাধারণ ছুটি এবং চলাচল নিষেধাজ্ঞাকালে এক জেলা থেকে অন্য জেলা বা এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
গতকাল দিনভর ছিল ঘূর্ণিঝড় আমফানের ভয়াবহতা নিয়ে খবর। দিনভর খবর প্রচার হয় সন্ধ্যায় আমফান আঘাত হানবে সুন্দরবনে। এই ঘূর্ণিঝড় আমফান কয়েক বছর আগের হওয়া সিডর আইল্যার চেয়েও শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর। আবহাওয়া অফিসের এমন আগাম বার্তা সরকার প্রস্তুতি নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী করণীয় করতে সবাই ব্যস্ত। গতকাল সকাল থেকেই দিকে ঘূর্ণিঝড় আমফান ও অমাবশ্যার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর ও নদীতে পানি ৩ ফুট বেড়েছে। এতে কয়েকটি জেলায় অর্ধশত গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়াযায়। টেলিভিশনগুলোতে ২৪ ঘন্টা সরেজমিন ভয়াবহ এই সব প্রতিবেদন প্রচার করছে। তারপও জীবনের ঝুকি নিয়ে মানুষ ছুঁটছে বাড়ির পানে।
ঘুর্ণিঝড় আমপানে প্রভাবে ঢাকা ও আশপাশের জেলাগুলোতে সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি ঝড়ো হওয়া বইছে। এর মধ্যেই রাজধানী থেকে বের হওয়া পণ্যবাহী ফিরতি ট্রাক, পিকআপ ভ্যান, প্রাইভেটকার, এমনকি মোটরসাইকেল হাঁকিয়ে বাড়ির উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ঢাকা থেকে বের হওয়ার সবগুলো পয়েন্টেই দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষের ঢল।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গতকালও বলেছেন, সরকার ঈদ উপলক্ষে স্থানান্তর বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ঘর থেকে বের হয়ে কেউ সড়কে আটকা পড়বেন না। সংকট মোকাবিলায় সরকারকে সহযোগিতা করুন, অন্যথায় সরকারকে আরো কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। কিন্তু কে শোনে কার কথা। তবুও মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পথে বের হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।