Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

করোনার ঝুঁকিতেও আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে

সরকারের ব্যাপক প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২০, ১২:০১ এএম

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আমফান অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। দ্রুতই শক্তি বৃদ্ধি করে উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে এ ঘূর্ণিঝড়টি। এদিকে, জীবন রক্ষায় নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে উপকূলের মানুষ। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে দেখা দিয়েছে বিড়ন্বনা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উপক‚লের বাসিন্দাদের রাখা যাবে কি না তা নিয়েও রয়েছে সংশয়।

চট্টগ্রাম থেকে রফিকুল ইসলাম সেলিম জানান, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিতে আশ্রয়কেন্দ্র ছুটছে মানুষ। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন গতকাল মঙ্গলবার জানিয়েছেন শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত খুলে দেওয়া ১৭৭০টি আশ্রয়কেন্দ্র্রে ছয় হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। চার হাজার আশ্রয় কেন্দ্রে লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংক্রমণের ব্যাপারে সর্তকতা অবলম্বন করতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। করোনা সংক্রমণের ভয় আর পবিত্র মাহে রমজানের মধ্যেও সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডব থেকে জীবন রক্ষায় মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে। অনেকে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচীর (সিপিপি) ৬ হাজার ৬৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক, রেডক্রিসেন্টের ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবক ছাড়াও বিএনসিসি এবং স্কাউটের স্বেচ্ছাসেবক মাঠে রয়েছে। আমফান আঘাত হানার আগেই উপকূলীয় এলাকার লোকজনকে সরিয়ে নিতে ৩ হাজার ৯৯৮টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জনসাধারণ প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। ঘূর্ণিঝড় আমফানে জানমাল রক্ষার্থে নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ উপজেলা হিসেবে পরিচিত হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম ইনকিলাবকে জানান, হাতিয়া উপজেলায় ১৮৫টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। গত দুইদিন মাইকযোগে জনসাধারণকে সতর্ক করে দেওয়া এবং নিরাপদস্থানে চলে যাবার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, দক্ষিণ উপকূলে এ ঘূর্ণিঝড় ও তার ভয়াবহতা সম্পর্কে রেডক্রিসেন্টের ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি)র স্বেচ্ছাসেবকগণ সতর্ক করে দিচ্ছেন। অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে নারী ও শিশুসহ বয়োবৃদ্ধদের আশ্রয় কেন্দ্রে স্থানন্তর শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার আগে আরো বেশি সংখ্যক মানুষকে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে সরিয়ে আনা হবে।

সিপিপির ৭টি আঞ্চলিক কেন্দ্রের আওতায় পূর্বে টেকনাফ থেকে পশ্চিমে সুন্দরবন সংলগ্ন দুবলারচর পর্যন্ত উপক‚লীয় ৪১টি উপজেলার সাড়ে ৩শ’ ইউনিয়নের ৩ হাজার ৬৯০টি ইউনিটের প্রায় ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক আমফানের হাত থেকে মানুষকে হেফজতে উদ্ধার তৎপরতাসহ দুর্যোগ পরবর্তী যেকোন পরিস্থিতির জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। উপক‚লভাগে সাইরেন ও মেগাফোন দিয়ে প্রচারনার পাশাপশি সতর্কতামূলক লাল-কালো পতাকাও উত্তোলন করা হয়েছে। সিপিপি’র সদর দফতর থেকে বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জোনাল হেডকোয়াটারের মাধ্যমে প্রতিটি ইউনিটের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করা হচ্ছে। যেকোন পরিস্থিতিতে উপকূলের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার অন্তত ১৫ লাখ নারী, শিশু ও বয়োজেষ্ঠসহ অপেক্ষাকৃত দুর্বল শ্রেণীর মানুষকে সাড়ে ৪ হাজার ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদে সরিয়ে নিতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে স্বেচ্ছাসেবকদের।

বরগুনায় ৫০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, ভোলায় প্রায় ১ হাজার ১০৫টি, ঝালকাঠীতে ২৭৬টিসহ পটুয়াখালী, বরিশাল ও পিরোজপুরের সব আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে, দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলায় লক্ষাধীক হেক্টর জমির বোরো ধান কাটা বাকি থাকার মধ্যেই ঘূর্ণিঝড় আমফান ধেয়ে আসছে। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকের কপালে দুঃশ্চিন্তার ভাজ ক্রমশ গভীর হচ্ছে।

কক্সবাজার ব্যুরো জানায়, কক্সবাজার উপক‚লে ৫৭৩ টি সাইক্লোন শেল্টার, স্বেচ্ছাসেবক এবং প্রয়োজনীয় যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়াও উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন স্কুল মাদরাসায় আশ্রয় নেয়ার জন্য জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঘূর্ণিঝড়

২৬ অক্টোবর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ