Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চিকিৎসাগত ইতি ঘটার আগেই ঘটবে করোনা সামাজিক সমাপ্তি

মহামারীর শেষ : কবে, কীভাবে শেষ পর্ব

দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্স | প্রকাশের সময় : ১৭ মে, ২০২০, ১২:০২ এএম

বিশ্বজুড়ে তান্ডব চালানোর পর সেই ফ্লু বিবর্তিত হয়ে আরো বেশি অনুকুল ফ্লুতে রূপ নিয়েছে যা প্রতিবছরই ফিরে আসে। ড. স্নোডেন বলেছিলেন, ‘সম্ভবত এটি সেই আগুনের মতো যা সহজলভ্য এবং সহজ দাহ্য কাঠ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়।’

এটিরো সামাজিকভাবে ইতি ঘটেছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্ত হয়েছিল; লোকেরা একটি নতুন শুরু, একটি নতুন যুগের জন্য প্রস্তুত ছিল এবং রোগ ও যুদ্ধের দুঃস্বপ্ন তাদের পিছনে ফেলে আসতে আগ্রহী ছিল। তখন থেকে আজ অবধি ১৯১৮ ফ্লুটি সবাই প্রায় ভুলে গিয়েছিল। অন্যান্য ফ্লু-মহামারীও একই পথ অনুসরণ করেছে। কোনোটাই ভীষণ খারাপ নয়, তবে সবগুলি স্বস্তিদায়কও নয়। ১৯৬৮ সালের হংকং ফ্লুতে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ লোকসহ বিশ্বব্যাপী ১০ লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল, যাদের বেশিরভাগেরই বয়স ৬৫’র উপরে ছিল। সেই ভাইরাস এখনো মৌসুমী ফ্লু হিসাবে বিচরণ করে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে এর যে বিধ্বংসী বৈশিষ্ট এবং এটি নিয়ে যে ভয়টি ছিল, তা এখন স্মরণে আসে না বল্লেই চলে। এখন প্রশ্ন যে, কোভিড-১৯’র যবনিকা হবে কীভাবে? এবং কোভিড-১৯’র সাথে কি একই ঘটনা ঘটবে? ইতিহাসবিদরা বলছেন, একটি সম্ভাবনা হ›ল, করোনাভাইরাস মহামারীটি চিকিৎসাগতভাবে শেষ হওয়ার আগেই আগেই সামাজিকভাবে সমাপ্ত হয়ে যেতে পারে। এমনকি যদিও কোনো ভ্যাকসিন বা কার্যকর চিকিৎসা পাওয়া যাওয়ার আগেই ভাইরাস জনসংখ্যাকে শেষ করে দিতে থাকে, লোকেরা বিধিনিষেধের কারণে এতটাই ক্লান্ত হয়ে উঠতে পারে যে, তারা মহামারীটির সমাপ্তি ঘোষণা করে দিতে পারে।

ইয়েল ইতিহাসবিদ নওমী রজার্স বলেছেন, ‘আমি মনে করি, এধরণের ক্লান্তি এবং হতাশার সামাজিক মানসিক সমস্যা বিরাজ করছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এমন এক মুহুর্তের মধ্যে থাকতে পারি যখন লোকেরা কেবলই বলছে: যথেষ্ট হয়েছে। আমি আমার নিয়মিত জীবনে ফিরে আসার ক্ষমতা প্রত্যাশা করি।’

ইতিমধ্যেই এমনটি ঘটতে শুরু করেছে; যুক্তরাষ্ট্রের কিছু রাজ্যে গভর্নররা নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নিয়েছেন। এধরণের পদক্ষেপ যে অপরিপক্ক, জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের এই সতর্কতা অগ্রাহ্য করে তারা চুল কাটার দোকান, নখ সজ্জার দোকান এবং জিমগুলি আবার খুলে দিয়েছেন। লকডাউনে সৃষ্ট অর্থনৈতিক বিপর্যয় বাড়ার সাথে সাথে, আরো বেশি সংখ্যক লোক ‘যথেষ্ট’ শব্দটি বলতে প্রস্তুত হয়ে যেতে পারে।

ড. রজারস বলেছেন, ‘এখন এধরণের বিরোধিতা হয়েছে।’ জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তাগণ চিকিৎসাগতভাবে এই মহামারীর সমাপ্তির কথা বিবেচনা করলেও জনসাধারণের কিছু অংশ এর সামাজিক যবনিকা দেখতে পাচ্ছেন।

তিনি বলেছেন, ‘কে এর সমাপ্তি দাবি করবে?’ ড. রজার্স বলেন, ‘আপনি যদি এর সমাপ্তির প্রবণতার বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করেন, তবে আপনি কিসের বিরুদ্ধে পিছনে ঠেলে দিচ্ছেন? আপনি যখন বলছেন, না, এটি শেষ হচ্ছে না, তখন আপনি কী দাবি করছেন?’ ড. ব্র্যান্ড বলেছেন, ‘চ্যালেঞ্জ হ›ল, হঠাৎ করে কোনো জয় আসবে না। মহামারীটির যবনিকা নির্ধারণ করার চেষ্টা করা ‘একটি দীর্ঘ ও কঠিন প্রক্রিয়া হবে।’



 

Show all comments
  • মোহাম্মদ মোশাররফ ১৭ মে, ২০২০, ১২:৫৭ এএম says : 0
    ইবোলা ভাইরাসে সংক্রমিত হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃত্যুই অবধারিত। এই অসুখের ওষুধ বা টিকা আবিষ্কার হয়নি এখন পর্যন্ত। তবে একটা ভালো খবর হলো খুব সংক্রামক নয় এটি। ইবোলা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মৃত্যুর হাত থেকে নিস্তার পাওয়া যায় না। মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিশেষ করে কঙ্গো, সুদান, গাবন ও আইভরিকোস্টে এই ভাইরাসের প্রকোপ বেশি।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ তোফায়েল হোসেন ১৭ মে, ২০২০, ১২:৫৮ এএম says : 0
    বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা পৃথিবীব্যাপী মহামারী ঘটাতে পারে এমন অসুখের তালিকায় নতুন রহস্যময় অসুখ ‘ডিজিজ এক্স’ এর নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। ডিজিজ এক্স শুনে অপরিচিত মনে হতে পারে। এটি কোনো রোগের নামও নয়। অজানা ভাইরাসের সংক্রমণে হওয়া এই রোগের ব্যাপারে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ডিজিজ এক্স হলো এমন কোনো রোগ যা মানবজাতির কাছে এখনো অজানা, কিন্তু তা আন্তর্জাতিকভাবে মহামারীর রূপ নিতে পারে।
    Total Reply(0) Reply
  • সত্য বলবো ১৭ মে, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    জিকা ভাইরাস হচ্ছে ফ্ল্যাভিভাইরিডি পরিবারের ফ্ল্যাভিভাইরাসগণের অন্তর্ভুক্ত। এই পরিবারের অন্যান্য ভাইরাসের মতো এটি আবরণযুক্ত ও আইকসাহেড্রাল আকৃতির একসূত্রক আরএনএ ভাইরাস। এটি প্রথম ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় রেসাস ম্যাকাক বানরের দেহে পাওয়া যায়।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ তোফায়েল হোসেন ১৭ মে, ২০২০, ১২:৫৯ এএম says : 0
    ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস অর্থোমিক্সোভিরিডি ফ্যামিলির একটি ভাইরাস, যা ইনফ্লুয়েঞ্জা রোগের জন্য দায়ী। বিভিন্ন সময়ে এটা লাখ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে এসেছে। ১৯১৮ থেকে ১৯১৯ সাল সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জাতে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫ কোটি মানুষ মারা যায়। ভয়াবহ এই মহামারীকে তখন নাম দেওয়া হয় ‘‘স্প্যানিশ ফ্লু’’।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ তোফায়েল হোসেন ১৭ মে, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
    প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা যায় দখলদারি, সম্পদ লুটপাট, ক্ষমতার বাহাদুরিতে ব্যস্ত ছিল মানুষ যা আজ একইভাবে পুরো বিশ্বে পরিলক্ষিত হচ্ছে। কিভাবে টাকা কামানো যায়, কিভাবে অন্যের উপর অন্যায়ভাবে প্রভাব খাটানো যায়, কার কত শক্তি, সম্পদের অপচয়, অন্যের সম্পদ লুটপাট, দেশে অবৈধভাবে কামানো টাকা বিদেশে পাচার করা, সামাজিক চরিত্রের অধঃপতন, অন্যায়-অবিচার ইত্যাদি হাজারো অনৈতিক কার্যকলাপে দেশ ও বিশ্ব আজ নিমজ্জিত। মূলত শাসকগোষ্ঠীরাই এর জন্য দায়ী। কাজেই এর প্রতিদান আসবেই। করোনা ভাইরাস যেভাবেই আসুক আর যত মানুষই মারা যাক এটা মোটামুটি আশংকা করা যাচ্ছে যে এ-ই ভাইরাস সহসাই থামবে না আর গোটা বিশ্বকে ফকির বানিয়ে ছাড়বে। আর আমাদের দেশে যদি শক্তিমত্তা নিয়ে আসে তবে কেউ রক্ষা পাবে না। রাস্তায় রাস্তায় লাশ পড়ে থাকবে। অনৈতিকতার কবর রচিত হবে। মহান আল্লাহ আমাদের আগেই হেদায়েত দান করুন, আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Ashrafuzzaman ১৭ মে, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ আমাদের দেশে ঐরকম কিছু হবেনা। আমাদের দেশে এইরকম কোন রেকর্ড নেই। আমাদের দেশের উপর আল্লাহর যথেষ্ট রহমত আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Mohammad ১৭ মে, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    হে আল্লাহ আমাদের তুমি হেফাজত করো।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdur Rafi ১৭ মে, ২০২০, ২:০৫ এএম says : 0
    আমার করোনা থেকেও শক্তিশালী। করোনা বেড়ে গেলেও আমরা নিয়ন্ত্রন করতে পারি। করোনার সাথে বসবাস করা করোনা আমাদের নিঃশ্বাস।
    Total Reply(0) Reply
  • A R Sarker ১৭ মে, ২০২০, ৯:৪১ এএম says : 0
    ALLAH May catch great great sinner of the country who are always out of justice.
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃনুর বক্ত শেক ১৭ মে, ২০২০, ১০:০৫ এএম says : 0
    খবর গুলো সত্য না মিথ্যা এটা সাংবাদিক জানে এবং মহান আল্লাহ ভালো জানেন ।তবে মানুষ যেভাবে আল্লাহ্ কে ভুলে যাচ্ছে। আল্লাহর আদেশ নেশেদ মানচেনা মিথাচার করচে হিনশা করছে আর মুসল মানদে উপর যে নিযাতোন চলছে। আল্লাহ্ কোরআন কে অবমানোনা করছে তাই মহান আল্লাহর একটুখানি নমুনা করনা ভাইরাছ পৃথিবীতে পাঠাইছে তাতেই পৃথিবীর বরবর শক্তিশালী দেশের ঘুম হারাম হয়েছে। মানুষ আল্লাহ্ কে শরন কর। আল্লাহ্ আমাদের খমাকরুন আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ