মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের এই পরিস্থিতির মধ্যে শিশুদের নিয়ে ভয়াবহ আশঙ্কার কথা জানাল জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ‘ইউনিসেফ’। সংস্থাটির মতে, ভবিষ্যতে প্রতিদিন হাজার হাজার শিশু করোনার বলি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
প্রতিদিন পাঁচ বছরের কম বয়সী অতিরিক্ত ৬ হাজার শিশু মারা যেতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)। বুধবার নিউ ইয়র্কে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। এই মহামারী যাতে শিশুদের জন্য একটি স্থায়ী সংকটে রূপ নিতে না পারে সেজন্য রি-ইমাজিন নামে একটি বৈশ্বিক ক্যাম্পেইন শুরু করেছে ইউনিসেফ।
যদিও বর্তমানে খাতায়-কলমে দেখতে গেলে শিশুদেরে শরীরে এখনও সেভাবে থাবা বসায়নি করোনাভাইরাস। মারণ এই ভাইরাস বর্তমানে অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে প্রৌঢ় ও বৃদ্ধদের দেহে। কিন্তু এ পরিসংখ্যান দেখে এখনই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলা যাবে না। কারণ ভবিষ্যতে রোজ হাজার হাজার শিশুর মৃত্যুর জন্য দায়ী থাকবে এই করোনাই। এ নিয়ে সতর্ক করল জাতিসংঘের এই সহযোগী প্রতিষ্ঠান।
করোনা মহামারীর কারণে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিরাট প্রভাব পড়েছে। স্বাস্থ্যপরিকাঠামোকে নাড়িয়ে দিয়েছে এই ভাইরাস। চিকিৎসা বিজ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে এই করোনা, যা ভবিষ্যতে শিশুদের চিকিৎসায় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। আর ঠিক এই কারণেই আগামী ছ’মাস প্রতিদিন অন্তত অতিরিক্ত ৬ হাজার শিশু প্রাণ হারাতে পারে বলেই মনে করছে ইউনিসেফ।
ল্যানসেট গ্লোবাল হেল্থ জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করেই এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউনিসেফের কথায়, করোনার জেরে প্রায় সব দেশেরই সাধারণ স্বাস্থ্য পরিসেবায় ব্যাঘাত ঘটছে। করোনা মোকাবেলাতেই নিজেদের উৎসর্গ করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর তাই শিশুদেরও চিকিৎসা পেতে সমস্যায় পড়তে হবে। ফলে ৬ মাসের মধ্যে ১১৮টি দেশের ২৫ লাখ শিশু প্রাণ হারালে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। পাঁচ বছর বা তার কম বয়সের শিশুদেরই মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইউনিসেফ আরও জানায়, শিশুমৃত্যুর সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়বে অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুও। ছয় মাসে ১১৮টি দেশের নতুন করে ৫৬ হাজার ৭০০ জন গর্ভবতী প্রাণ হারাতে পারেন।
ইউনিসেফের (ব্রিটেন) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সাচা দেশমুখ বলেন, আগামী ছয় মাসে পাঁচ বছরের কম বয়সের শিশুর মৃত্যুর হার যেভাবে বাড়বে, তা গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি। কিন্তু করোনার জন্য সন্তান ও মায়ের মৃত্যু এভাবে হাত গুটিয়ে আমরা মেনে নেব না। বিজ্ঞানকে ভর করেই ঘুরে দাঁড়াতে হবে বলে মত তার।
বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তা-ব থামছেই না। প্রতি মুহূর্তে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই ভাইরাসের ধ্বংসযজ্ঞে যেন অসহায় হয়ে পড়েছে গোটা বিশ্ব।
এদিকে বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি তোমো হোযুমি বলেন, মহামারীর কারণে স্বাস্থ্য সেবা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে গেলে প্রতিরোধ যোগ্য ও আরোগ্য লাভ করা সম্ভব এমন অবস্থা থেকে হাজার হাজার শিশু মারা যেতে পারে। নারী ও শিশুদের জন্য জীবনরক্ষাকারী সেবা সহজলভ্য, নিরাপদ এবং সেবা গ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে ইউনিসেফ।
ইউনিসেফ বলছে, মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা প্রাপ্তি ব্যাপকহারে প্রায় ১৯ শতাংশের মতো কমেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০১৯ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২০ সালের জানুয়ারি-মার্চে মায়েদের গর্ভকালীন সেবার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়া এবং সন্তান জন্মের পর স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে গিয়ে চেকআপের মতো জরুরি মাতৃ স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ ব্যাপক মাত্রায় কমেছে। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে সন্তান জন্ম দান ২০১৯ সালের অক্টোবর-ডিসেম্বরের তুলনায় ২০২০ এর জানুয়ারি-মার্চে ২১দশমিক ২ শতাংশ কমেছে।
মহামারীর সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ কমে যাওয়ার ফলে যে ১০টি দেশে সর্বাধিক সংখ্যক অতিরিক্ত শিশু মৃত্যু ঘটার ঝুঁকি রয়েছে সেগুলো হল: বাংলাদেশ, ব্রাজিল, কঙ্গো, ইথিওপিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান, উগান্ডা ও তাঞ্জানিয়া। প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত (বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টা) এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে ৪৩ লাখ ৯৭ হাজার। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৭৯ জনের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।