মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯ সঙ্কটে অর্থনীতিকে বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য নতুন করে অর্থ মুদ্রণ করতে শুরু করেছে। আমেরিকান অর্থনীতিকে প্রবলভাবে বাঁচানোর চেষ্টা হিসেবে আমেরিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে একটি ব্রহ্মাস্ত্র রয়েছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
এটি জাদুর মতো কাজ করে। কম্পিউটারে কয়েকটি কমান্ড দিলেই, ফেডারেল রিজার্ভ কার্যত ফুস মন্তর করেই ডলার তৈরি করতে পারে এবং ভার্চুয়ালি প্রিন্ট করতে পারে। তারপর এটিকে বাণিজ্যিক ব্যাংকিং সিস্টেমে ঢুকিয়ে দিতে পারে। অনেকটা ভার্চুয়াল আমানতের মতো। ফেডারেল ব্যাঙ্কের লক্ষ্য ভয়ে ডুবে যাওয়ার বাজারগুলি সচল রাখা। কৌশলটি কম সুদের হারের সাথে বড় অঙ্কের অর্থ সরবরাহ এবং অর্জন করা আরো সহজ করে তোলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেডারেল ব্যাংক এটি এবং অন্যান্য জরুরি ব্যবস্থা না নিলে অর্থনীতি ইতিমধ্যে বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এই ক্ষেত্রে, ফেডারাল সরকার কেবল প্রচুর পরিমাণে ডলারই তৈরি করছে না, প্রকৃতপক্ষে, মহামারীতে উদ্ভ‚ত বিশাল অচলাবস্থার কারণে এবার নজিরবিহীন মাত্রায় নতুন তৈরি হওয়া ডলারের নিজস্ব ঋণ পরিশোধের করছে।
এটি আর্থিক স্বপ্নের মতো শোনাতে পারে যে, কেবল একটি মাত্র বোতাম টিপে ক্রেডিট কার্ডের বিলগুলি পরিশোধ করতে সম্ভব। হ্যাঁ, সরকার মানুষ এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ভিন্ন কিছু করতে পারে, যদিও এটি এর চেয়ে কিছুটা জটিল। তবে, বৃহত্তর প্রশ্ন হ›ল এটি কার্যকর এবং টেকসই কিনা। উত্তর নির্ভর করে আপনি কাকে জিজ্ঞাসা করেন এবং এটি কীভাবে পরিচালিত হয় তার।
ফেডারেল রিজার্ভ আক্ষরিকভাবে কাগুজে ডলার মুদ্রণ করে না। এর পরিবর্তে ফেডারেল ব্যাংক এই সঙ্কটের সময়ে খোলা বাজারে বড় বড় সম্পদ ক্রয় করে নতুন ইলেকট্রনিক ডলারগুলি ওয়েলস ফার্গো, গোল্ডম্যান শ্যাস এবং মরগান স্ট্যানলির মতো ব্যাংকের রিজার্ভগুলিতে যোগ করে। বিনিময়ে ফেডারেল ব্যাংক আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সিকিওরিটি এবং এজেন্সি সিকিওরিটিগুলির প্রচুর পরিমাণে বন্ধকী ঋণপত্র গ্রহণ করে।
ফলস্বরূপ, যে বাজারগুলি সহজেই অচল হয়ে গিয়েছিল, সেগুলি আবার প্রবাহিত হতে শুরু করে। ব্যাংকগুলি আরো ডলার রিজার্ভ পায় এবং আতঙ্কের সময়ে ব্যাঙ্কগুলি তাদের তহবিল হ্রাস পাওয়ার কথা চিন্তা না করে অর্থ ঋণ দিতে পারে। তবে, টেক্সাসের প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান এবং ‘এন্ড দ্য ফেড’র লেখক রন পল ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন যে, এই জাতীয় অর্থ বিপর্যয় ডেকে আনবে।
এটি যেমন অর্থ তৈরির মাধ্যমে অর্থ সরবরাহ বাড়িয়ে তুলতে পারে, তেমনি ফেডারেল ব্যাংক তার আর্থিক খতিয়ানের কয়েকটি বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রি করে সুদের হার বাড়িয়ে এটিকে হ্রাসও করতে পারে।
একই সময়ে, কংগ্রেসের ব্যয় এখনো কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ তৈরি করে যা ফেরত দিতে হবে। কংগ্রেসনাল বাজেট অফিস সম্প্রতি অনুমান করেছে যে, চলতি অর্থবছরে বাজেটের ঘাটতি ত্রিগুণ হয়ে ৩.৭ ট্রিলিয়ন ডলার হবে, যা মোট জনসাধারণের হাতে থাকা গড় অভ্যস্তরীণ পণ্যের ১০১ শতাংশ কেন্দ্রীয় ঋণ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফেডারেল ব্যাংকের এমন সরঞ্জাম রয়েছে যা দীর্ঘমেয়াদী সুদের হারকে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হারের নীচে রাখতে সহায়তা করতে পারে, যদিও এই হারগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাজার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় এবং, অবশ্যই, ডলার মুদ্রণের যাদুকরী মেশিন তো আছেই। সূত্র : ইএসএ টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।