মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর গত মার্চ থেকেই বাসায় বসে কাজ করছেন জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম টুইটারের কর্মীরা। তাদের এই ´ওয়ার্ক ফ্রম হোম´ এতটাই কার্যকর হয়েছে যে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও আজীবন বাসায় বসেই কাজ করার সুযোগ পাবেন কর্মীরা। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জ্যাক ডরসি কর্মীদের পাঠানো এক ই-মেইলে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
চাইলে ´আজীবন´ বাসা থেকে কাজ করতে পারবেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারের কর্মীরা। করোনাভাইরাস মহামারির প্রেক্ষাপটে কর্মীদের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
টুইটারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লকডাউন উঠে যাওয়ার পর যখন অফিস খোলা হবে, তখন চাইলে কর্মীরা অফিসেও যেতে পারবেন। এর আগে এ মাসের শুরুর দিকে গুগল ও ফেসবুক জানিয়েছে, বছর শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কর্মীরা বাসা থেকে কাজ করতে পারবেন।
বাসায় থেকে কাজ করার ঘোষণায় টুইটার বলেছে, ‘গত কয়েক মাসে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, আমরা এটা (বাসা থেকে কাজ) করতে পারছি। সুতরাং আমাদের কর্মীরা যদি বাসা থেকে কাজ করার মতো দায়িত্ব ও পরিস্থিতিতে থাকে এবং তারা যদি বাড়িতে বসেই আজীবন কাজ করতে চায়, আমরা সেই ব্যবস্থা করবো।’
ঘোষণায় বলা হয়, যেসব কর্মীরা অফিস করতে আগ্রহী, টুইটার তাদের সেই ইচ্ছাকেও স্বাগত জানাবে। তবে সেক্ষেত্রে কিছু অতিরিক্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটির বিশ্বজুড়ে চার হাজারের বেশি কর্মী রয়েছে। গত মার্চ মাস থেকেই কর্মীদের বাসা থেকে কাজ করার সুযোগ দিচ্ছে টুইটার। সেপ্টেম্বরের আগে তাদের অফিস চালুর সম্ভাবনা নেই।
স্টোকি ব্রুক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব জার্নালিজমের এই ভিজিটিং প্রফেসর বলছেন, ‘অনেকে হয়তো টুইটারের মতো এত গভীরভাবে বিষয়টিকে গ্রহণ করেনি। তবে কাজের পরিবেশ কীভাবে আরামদায়ক করে তোলা যায়, তা নিয়ে সিলিকন ভ্যালির এই কোম্পানির কাছ থেকে আমাদের অনেক কিছু শেখার আছে।’
তিনি বলেন, ‘একটা ধারণা আছে যে, বাসা থেকে কাজ করার মানে হলো কাজে ফাঁকি দেওয়া এবং অফিসে চেহারা দেখানো অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কর্মীরা এখন প্রমাণ করছেন যে, তারা বাসা থেকেও ভালো কাজ করতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় সব কাজ সম্পন্ন করতে পারেন। অনেকেই আমাকে বলেছেন, বাড়িতে তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হচ্ছে। তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন।’
বিশ্বজুড়েই কোম্পানিগুলো এখন উপায় বের করার চেষ্টা করছে, কীভাবে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে আস্তে আস্তে অফিসগুলো পুনরায় চালু করা যায়।
বুধবার আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, জ্যাক ডরসির এ সিদ্ধান্ত কর্মক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে। ভবিষ্যতে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও কর্মীদের বাসায় কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহী হতে পারে। এতে অফিসে বসেই কাজ করার সনাতন ধারণা থেকে অনেক প্রতিষ্ঠানই বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
জ্যাক ডরসি সম্প্রতি ই-মেইলের মাধ্যমে কর্মীদের জানান, গত কয়েক মাসের কাজের ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, বাসায় বসেই সবাই ভালোভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে। তাই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর কোনো কর্মী চাইলে এরপরও বাসায় বসে কাজ করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে সবাইকে সুযোগ দেওয়া হবে।
প্রতিষ্ঠানটির ভাইস-প্রেসিডেন্ট জেনিফার ক্রিস্টি এক টুইটে জানান, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর তারাই প্রথম কর্মীদের বাসায় বসে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তবে ফের কর্মীদের অফিসে এসে কাজ করার ব্যাপারে তারা সবার পেছনে থাকতে চান।
উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুর, লন্ডন ও নয়াদিল্লিসহ সারাবিশ্বে মোট ৩৫টি কার্যালয় আছে টুইটারের। যেখানে কাজ করেন হাজার হাজার কর্মী।
এদিকে, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছর পুরোটাই কর্মীদের বাসায় থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে ফেসবুক, গুগলসহ বহু প্রতিষ্ঠান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।