Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনা থেকে মুক্তিতে যে ৪ ভ্যাকসিনে ভরসা করছে বিশ্ব

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০২০, ৫:৪৭ পিএম

প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কবল থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে এর ভ্যাকসিন তৈরির বিকল্প নেই। ইতোমধ্য বিশ্বজুড়ে ২ লাখ ৮৫ হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে এ মরণঘাতি ভাইরাস। যেজন্য প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারে নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। -সিএনবিসি নিউজ, টাইমস অব ইন্ডিয়া, সাইন্স টাইমস
বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের শতাধিক দল করোনার সম্ভাব্য একটি ভ্যাকসিন তৈরিতে দিনরাত কাজ করছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এপ্রিলের শেষ সময় পর্যন্ত বিজ্ঞানীদের ১০৪টি দল ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে কাজ করে যাচ্ছিলেন। মে মাসে এসে এ তালিকায় নতুন করে আরও চারটি দল যুক্ত হয়েছে। সে দলগুলো হলো - জাপানের ইউনিভার্সিটি অব টোকিও, তুলানে ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা এবং দি ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ।
সে হিসাবে বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত ১০৮টি পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। তবে এদের মধ্যে কেবল আটটিকে মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
এই ৮টি সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের মধ্যে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রয়েছে চারটি। এই চার ভ্যাকসিনেই আশার আলো বুনছে মানব সভ্যতা।
বিশ্ব এখন যে চারটি ভ্যাকসিনে ভরসা করছে, সেই চার ভ্যাকসিন নিয়ে এখানে আলোচনা করা হলো -
১. যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসভিত্তিক মডার্না ভ্যাকসিন - এমআরএনএ-১২৭৩েএই ভ্যাকসিনটি মানুষের শরীরের কোষে এই ভাইরাসটি প্রবেশের পর ভাইরাল প্রোটিন তৈরি করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে।
ভ্যাকসিনটির নাম- এমআরএনএ-১২৭৩। করোনাভাইরাসের আরএনএ ব্যবহার করে এটি তৈরি করা হয়েছে। এটি যৌথভাবে উদ্ভাবন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব এলার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ ও ম্যাসাচুসেটসের বায়োটেক কোম্পানি মডার্না।
ইতিমধ্যে ভ্যাকসিনটি মানবদেহে প্রয়োগের পর দ্বিতীয় ধাপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
২. অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন - এনকোভ-১৯
ভ্যাকসিনটির গবেষকরা জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের দুর্বল প্রজাতির একটি অংশ ও জিন ব্যবহার করে এই ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়েছে। ভ্যাকসিনটি মানবদেহে প্রয়োগ করা হলে সেটি করোনাভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন শনাক্ত করবে। সম্ভাব্য ভ্যাকসিনটির উদ্ভাবক ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তিন মাসের প্রচেষ্টা চালিয়ে তারা এই ভ্যাকসিনটি তৈরি করেছে। এর নাম দেয়া হয়েছে - চ্যাডক্স১ এনকোভ-১৯। ইতিমধ্যে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে এটি। অর্থাৎ বর্তমানে ফেইজ-১ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে রয়েছে এটি। জুনের মাঝামাঝি সময়ে ক্লিনিক্যাল এই ট্রায়ালের ফল আসলেই দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশ করবে এই গবেষণা।
৩. বেইজিংয়ের সিনোভ্যাক বায়োটেক - পিকোভ্যাক
চীনের রাজধানী বেইজিংভিত্তিক বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি সিনোভ্যাক বায়োটেক প্রতিষ্ঠান এই ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। সম্প্রতি পিকোভ্যাক নামের এই ভ্যাকসিন বানরের দেহে প্রয়োগ করে সফল হয়েছেন এর উদ্ভাবকরা। ভ্যাকসিনটি প্রয়োগের পর বানরগুলোকে করোনাভাইরাসে সংস্পর্শে নেয়া হয়। এতে দেখা যায়, বানরগুলোর ফুসফুসে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি হ্রাস পেয়েছে। ওই সফলতার পর মানবদেহেও এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে।
৪. ফাইজার ও বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন - বিএনটি১৬২
এই ভ্যাকসিনটিও এমআরএনএ-১২৭৩ এর মতো করোনার আরএনএ থেকে তৈরি করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ফাইজার এবং জার্মান কোম্পানি বায়োএনটেক এটি তৈরি করেছে। এর নাম দেয়া হয়েছে - বিএনটি১৬২। ইতিমধ্যে ফেইজ-১ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই দ্বিতীয় দফায় ৩৬০ জন স্বাস্থ্য স্বেচ্ছাসেবীর দেহে ভ্যাকসিনটি প্রয়োগ করা হবে বলে জানা গেছে।
এই চার ভ্যাকসিন ছাড়াও সম্প্রতি ইতালির তৈরি একটি ভ্যাকসিনের কথা শোনা যাচ্ছে।
সিএনবিসি নিউজ জানিয়েছে, রোমের স্পালানজানি হাসপাতালে সংক্রমণ বিশেষজ্ঞরা এ ভ্যাকসিন পরীক্ষা করেছেন।
গ্রীষ্ম মৌসুম শেষে এই ভ্যাকসিন মানুষের দেহে প্রয়োগের চিন্তাভাবনা করছেন তারা। সায়েন্স টাইমস ম্যাগাজিনে ইতালীয় গবেষকরা বলেছেন, ইঁদুরের দেহে ওই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করে তারা দেখেছেন এটি করোনাভাইরাসের এ্যান্টিবডি তৈরিতে সক্ষম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ