২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
জরুরি চিকিৎসা সুবিধা থাকলে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর এখন আর কোনো রোগীকে চিকিৎসা না দিয়ে ফেরত পাঠানোর সুযোগ নেই বলে নির্দেশনা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।পাশাপাশি কোনো রোগীকে অন্য হাসপাতালে রেফার করার প্রয়োজন হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরই রেফার করতে হবে। অন্যথায় সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল বা ক্লিনিকের লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপসচিব (সাময়িকভাবে সংযুক্ত) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা সোমবার (১১ মে) জারি করা হয়। এরই মধ্যে নির্দেশনাটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, সংশ্লিষ্ট সব বিভাগীয় পরিচালকসহ (স্বাস্থ্য) বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকের মালিক সমিতি ও বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনসহ (বিএমএ) সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে অধিদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।
দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীরাও চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ ওঠে। অসংক্রামক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মারাত্মক অসুস্থ রোগীরাও বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন, এমন ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছিল।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ নিয়ে বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকদের মালিকদের প্রতি নন-কভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা চালুর বিষয়ে একাধিকবার অনুরোধ জানানো হয়। ওই সময় হাসপাতাল মালিকদের পক্ষ থেকে নন-কভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়। যদিও শেষ পর্যন্ত তা না মানার অভিযোগ ওঠে হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে লিখিতভাবে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এসব নির্দেশনা না মানলে ও এ-সংক্রান্ত অভিযোগ প্রমাণিত হলে লাইসেন্স বাতিলসহ হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও মিডিয়া সেলের ফোকাল পয়েন্ট অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, নিয়মিত রোগী বা কোনো বিপদাপন্ন মানুষ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য গেলে তাদের চিকিৎসাসেবা না দেয়ার অধিকার হাসপাতালগুলোর নেই। তাদের তো শুধু ব্যবসা করার জন্য হাসপাতালের লাইসেন্স দেয়া হয়নি। জাতির প্রয়োজনে যদি তারা রোগীদের ভর্তি না করে এভাবে ফেরত দিতে থাকে, তাহলে কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
নির্দেশনায়ও অভিযোগের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, লক্ষ করা যাচ্ছে যে কভিড-১৯ সংক্রমণের পর থেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসাসেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ডায়ালাইসিসসহ চিকিৎসা গ্রহণকারী রোগীরা সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এতে আরো বলা হয়, বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় কভিড-১৯-এ আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহভাজন রোগীদের চিকিৎসার জন্য পৃথক ব্যবস্থা থাকতে হবে। চিকিৎসা সুবিধা থাকা সত্ত্বেও জরুরি চিকিৎসার জন্য আগত কোনো রোগীকে ফেরত পাঠানো যাবে না। রেফার করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি সুনিশ্চিত করে তারপর রেফার করতে হবে। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে যেসব রোগী কিডনি ডায়ালাইসিসসহ বিভিন্ন চিকিৎসা গ্রহণ করছেন, তারা কভিড-১৯-এ আক্রান্ত না হয়ে থাকলে তাদের চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে হবে।
এ নির্দেশনার ব্যত্যয় ঘটলে বা এ-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রচলিত বিধান অনুসারে লাইসেন্স বাতিলসহ প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, নন-কভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সরকারি হাসপাতালগুলোকেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এজন্য সব সরকারি হাসপাতালে আলাদা আইসোলেশন ইউনিট করার নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে যেসব রোগী যাবেন, তাদের শুরুতে আইসোলেশন ইউনিটে রেখে নমুনা সংগ্রহ করে টেস্ট করার ব্যবস্থা নিতে হবে। তাতে রোগী করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হলে তাকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ‘কভিড হাসপাতাল নিয়ন্ত্রণ কক্ষের’ সঙ্গে যোগাযোগ করে রোগীর চিকিৎসার বিষয়টি নিশ্চিত করে রেফার করতে হবে। আর করোনা নেগেটিভ হলে তার অন্যান্য রোগের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলছেন, সরকারি হাসপাতালগুলো রোগীদের ফেরত দিতে পারবে না। তার পরও কোনো হাসপাতাল রোগী ফেরত পাঠালে ওই হাসপাতাল পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।