মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কোভিড সংক্রমণ নির্ভুলভাবে ধরতে এবার এনজাইম-বেসড ‘এলিজা’ টেস্টে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়। এই আইজিজি এলিজা টেস্ট কিট বানানো শুরু করেছে পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি। এই কিটের মাধ্যমে অন্যান্য কিটের তুলনায় কম খরচে এবং কম সময়ে করোনা টেস্ট করা যাবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হলে তার প্রতিরোধে শরীর যে ধরনের অ্যান্টিবডি তৈরি করে তাকেই চিহ্নিত করবে এই পরীক্ষা পদ্ধতি। নমুনায় যদি সেই ধরনের অ্যান্টিবডি মেলে তাহলেই বোঝা যাবে সেই রোগী কোভিড পজিটিভ। এরই মধ্যে টেস্ট কিট ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ। আর একটি কিট থেকে মাত্র আড়াইঘন্টায় একসাথে ৯০ জনের টেস্ট করা যাবে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডক্টর হর্ষ বর্ধন বলেছেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণ চিহ্নিত করার মতো করেই এই অ্যান্টিজেন-নির্ভর এলিজা টেস্ট কিট বানিয়েছে এনআইভি। ভাইরাসের সংক্রমণ নির্ভুলভাবে ধরে দিতে পারবে এই টেস্ট কিট।
‘এনজাইম লিঙ্কড ইমিউসরবেন্ট অ্যাসে’ বা এলিজা হল এমন একটি পরীক্ষা পদ্ধতি যা রক্তে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলিকে চিহ্নিত করতে ও তার পরিমাণ বার করতে পারে। সাধারণত দেখা যায় ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা সংক্রামক প্যাথোজেন শরীরে ঢুকলে তার একটা প্রতিরোধ ব্যবস্থা শরীর নিজেই তৈরি করতে পারে। ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাল প্রোটিনকে আটকানোর জন্য শরীরে তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। এই অ্যান্টিবডি হল শরীরে যোদ্ধা যার কাজ বাইরে থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসা শত্রুদের ঠেকাতে একটা সুরক্ষা বেষ্টনী গড়ে তোলা। সংক্রামক প্রোটিন জোরজবরদস্তি কোষে ঢোকার চেষ্টা করলেই ঢাল হয়ে দাঁড়ায় এই অ্যান্টিবডি, তারপর লড়াই করে ভাইরাল প্রোটিনগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
এখন কোনও ব্যক্তির থেকে নেয়া নমুনায় যদি এমন অ্যান্টিবডি খুঁজে পাওয়া যায় তাহলেই বুঝতে হবে সেই ব্যক্তির শরীরে ভাইরাস বাসা বেঁধেছে। কারণ ভাইরাসকে আটকাতেই তো তৈরি হয়েছে অ্যান্টিবডি। এই অ্যান্টিবডিগুলিকেই যদি চিহ্নিত করে ফেলা যায়, তাহলে বোঝা যাবে সংক্রমণ কী পর্যায়ে রয়েছে। এলিজা টেস্ট কিটের কাজ হবে সেই অ্যান্টিবডিগুলিকেই খুঁজে খুঁজে বার করা।
এইচআইভি টেস্ট করতে এই এলিজা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। এনএস-ওয়ান অ্যান্টিজেন (এলিজা) কিট দিয়ে ডেঙ্গুর সংক্রমণ ধরা হয়। এবার কোভিড টেস্টের মতো করে আইজিজি এলিজা টেস্ট কিট বানিয়েছ পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি। এই এলিজা টেস্টে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি দুটোই শনাক্ত করা যায়। নমুনায় অ্যান্টিবডি আছে কিনা পরীক্ষা করতে হলে এই কিটের প্লাস্টিক সারফেসে (পলিস্টাইরিন মাইক্রোটাইটার প্লেট) অ্যান্টিজেন রাখা হয়। তার উপরে স্যাম্পল দিলে যদি অ্যান্টিবডি থাকে সেগুলো ওই অ্যান্টিজেনের সঙ্গে বিশেষ উপায় জুড়ে যায়। পরের ধাপে মার্কার-যুক্ত সেকেন্ডারি অ্যান্টিবডি দেয়া হয় ওই প্লেটে। এইসব মিলে একটা রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়। যদি নমুনায় অ্যান্টিবডি থাকে তাহলে সেকেন্ডারি অ্যান্টিবডির মার্কার তাকে চিহ্নিত করতে পারবে। সিগন্যাল দিয়ে জানান দেবে নমুনায় অ্যান্টিবডি রয়েছে। রঙের বদল দেখা যাবে টেস্ট কিটে। এনআইভি জানাচ্ছে এলিজা টেস্ট পদ্ধতিতে কম সময়তেই সঠিকভাবে করোনার সংক্রমণ ধরে দেয়া যাবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার একটি বায়োটেকনোলজি ফার্ম এসডি বায়োসেন্সর তাদের মানেসরের প্ল্যান্টে ভারতের জন্য র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট কিট (আরটিকে) তৈরি করছে। কোরিয়ান ফার্মের তরফে জানানো হয়েছে, জরুরি অবস্থার জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টেস্ট কিট বানানো শুরু হয়েছে মানেসরের প্ল্যান্টে। আশা করা যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি প্রায় পাঁচ লাখ আরটিকে পৌঁছে যাবে দেশের নানা প্রান্তে। দক্ষিণ কোরিয়ার আরও একটি বায়োটেক ফার্ম হিউমাসিস লিমিটেডের সঙ্গেও চুক্তি করেছে ভারত। জানা গেছে, র্যাপিড টেস্ট কিট বানানোর জন্য ভারতের থেকে কাঁচামাল আমদানি করেছে ওই সংস্থা। খুব দ্রুত তারাও টেস্ট কিট তুলে দেবে দেশের হাতে।
এদিকে কোভিড টেস্টের আরও একটা উন্নত পদ্ধতি ‘ক্রিসপার জিন-এডিটিং’টেকনোলজি নিয়ে গবেষণা চলছে কাউন্সিল অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ (সিএসআইআর)-এ। তাদেরই ইনস্টিটিউট অব জিনোমিক্স অ্যান্ড ইন্টিগ্রেটিভ বায়োলজি (আইজিআইবি)-র ল্যাবে বানানো হয়েছে পেপার-স্ট্রিপ টেস্ট কিট। এই টেস্ট কিটে ক্রিসপার জিন-এডিটিং পদ্ধতির ব্যবহার করেছেন দুই বাঙালি বিজ্ঞানী। টেস্ট কিটের নাম রাখা হয়েছে ‘ফেলুদা’। এই টেস্ট কিটের বিপুল উৎপাদনের জন্য সিএসআইআর-আইজিআইবিকে সহযোগিতা করছে টাটা সন্স। সূত্র: নিউজ ১৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।