মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বাজার মন্দা থেকে উঠে আসতে শুরু করেছে। তবে, মন্দা থেকে এই হঠাৎ উত্তরণের বাজারু হিসাব এবং বাস্ততার মধ্যে আশঙ্কাজনক বিশাল ফারাক দেখছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। দ্য ইকোনোমিস্টে প্রকাশিত এসংক্রান্ত প্রতিবেদনটি ২ পর্বে ছাপানো হবে। আজ ১ম পর্ব দেয়া হ’ল :
১৯২৯ সালের অর্থনৈতিক ধস, ১৯৮৭ সালের ব্লাক মানডে, যখন একদিনে শেয়ারের দরে ২০ শতাংশ পতন ঘটেছিল এবং ১৯৯৯ সালের ডটকম ম্যানিয়া; যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারের ইতিহাস নাটকীয়তায় ভরপুর। দেশটির শেয়ারবাজারের এ ধরনের নজিরগুলি আশ্চর্য হওয়ার মতো কিছুই নয়, তবে গত ৮ সপ্তাহ ছিল বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। আমেরিকাতে পিলে চমকানোভাবে শেয়ার বিক্রির হিড়িক শুরু হয়েছে। ১৯ ফেব্রæয়ারি থেকে ২৩ মার্চের মধ্যে এস অ্যান্ড পি ৫০০’র সূচকের মানে এক তৃতীয়াংশে পতন ঘটে। তবে, সামমাত্র বিরতির পরেই এই সূচক, অর্ধেকেরো বেশি ক্ষতি পুষিয়ে নিতে শুরু করেছে। ফেডারেল রিজার্ভ কর্পোরেট বন্ডগুলো কিনে নিয়ে বড় বড় সংস্থাগুলোকে তাদের ঋণ পরিশোধে সহায়তা করবে, এমন সংবাদ শেয়ার মার্কেট চাঞ্চল্যের অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। বিনিয়োগকারীরা মুহূর্তেই আতঙ্ক থেকে আশাবাদে মন বদলে ফেলেন। ওয়াল স্ট্রিটের এই স্বপ্নীল দৃশ্য অস্বস্তিতে ফেলে দিতে পারে। কারণ এদেশের শেয়ার বাজার অন্য দেশের বাজারের তুলনায় বিপরীত অবস্থানে রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটেন এবং মহাদেশীয় ইউরোপের শেয়ারগুলি আরো অনেক ধীরগতিতে সূচকে উঠছে এবং আমেরিকার সূচকের এই উত্থান দেশটির বাস্তবতার থেকে এক পৃথিবী দূরে অবস্থান করছে। এমনকি আমেরিকাতে লকডাউন শিথিল হলেও কর্মসংস্থানের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। বেকারত্ব ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে প্রায় ১৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। ১৯৪৮ সালে শুরু হওয়া বেকারত্বের পরিসংখ্যানে এটি সর্বোচ্চ হার। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের অর্থনৈতিক ক্ষত আবারো তাজা হতে শুর করেছে।
প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন গত মাসে অভিযোগ করেন যে, ‘আমরা এই নিয়ে দ্বিতীয়বার তাদের জামিন দিয়ে বাঁচালাম।’ করোনা মহামারীর বিশাল আর্থিক ব্যয় মেটাতে কে অর্থ সংস্থান করবে, তা নিয়ে মাত্রই লড়াই শুরু হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে, বড় ব্যবসাগুলির উপরেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
বাজারে একের পর এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা শুরু হয়েছে। হঠাৎ ইতিবাচক পরিস্থিতিটির সৃষ্টি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের কারণে, যা নাটকীয়ভাবে অন্যান্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলির তুলনায় অকল্পনীয় হারে সম্পদ কিনে নিয়েছে।
এটি উচ্চ সুদের ঝুঁকিপূর্ণ ঋণপত্রগুলোসহ আরো বহু প্রতিষ্ঠানিক ঋণপত্র কেনার জন্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ হয়ে যাওয়া নতুন ঋণপত্রের বাজার দর্শনীয়ভাবে পুনরায় চালু হয়েছে। সংস্থাগুলো গত ৬ সপ্তাহে ৫৬ হাজার কোটি ডলারের ঋণপত্র জারি করেছে যা স্বাভাবিক মাত্রার দ্বিগুণ। এমনকি সাগরের প্রমোদতরীর সংস্থাগুলোও উচ্চ সুদে হলেও কিছুটা নগদ অর্থ জোগাড় করতে সক্ষম হয়েছে। (চলবে)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।