মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনার হামলায় তছনছ হয়ে গেছে ইতালি। মহামারীর কারণে ইউরোপের মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় এখন যুক্তরাজ্যের পরেই ইতালির অবস্থান। আর এই দেশের গবেষকরাই দাবি করলেন, বিশ্বের প্রথম করোনার প্রতিষেধক তৈরি করেছেন তারা। ওদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, তারা ৮টি ভ্যাকসিনকে মানবদেহে প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে।
রোমের স্প্যালানজানি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞরা করোনার প্রতিষেধক তৈরি করেছেন। ইঁদুরের দেহে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি করার পর তা মানব কোষেও কাজ করেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্ট, এই টিকা ইঁদুরের শরীরে প্রয়োগ করে সাফল্য পাওয়া গেছে। এবার এটি মানব দেহেও প্রয়োগ করলে সফলতা মিলবে। রোম থেকে এই দাবির পর নড়েচড়ে বসেছে দুনিয়া।
করোনার টিকা আবিস্কারের আপ্রাণ চেষ্টা চলছে বিশ্বজুড়েই। আমেরিকাতে এর আগে পরীক্ষামূলক টিকা মানব দেহে প্রবেশ করানো হয়। টিকা নেওয়া সবাই সুস্থ। তবে সেটিও পরীক্ষামূলক। জাপান ও কিউবা একটি করে ওষুধের দাবি করেছে। ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরাও শিম্পাঞ্জি ও বাঁদরের দেহে জীবাণু ঢুকিয়ে টিকা বের করতে মরিয়া।
এবার ইতালির গবেষকরা দাবি করলেন, টিকা বের করার। সায়েন্স টাইমস ম্যাগাজিনকে তারা জানিয়েছেন, ইঁদুরের দেহে করোনাভাইরাসের অ্যান্টিবডি তৈরি করার পর তা মানবকোষেও কাজ করেছে। ইঁদুরের শরীরে তৈরি ওই অ্যান্টিবডি মানবকোষে করোনাভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছে।
ভ্যাকসিনটি বাজারে আনছে ইতালির শীর্ষ ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি টাকিস। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী (সিইও) লুইগি আরিসিচিও জানান, এই প্রতিষেধকই সবচেয়ে উন্নত। এটিই বিশ্বের প্রথম ভ্যাকসিন যা মানুষের শরীর থেকে করোনাভাইরাসকে দ‚রে রাখতে সক্ষম। গবেষণা প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
৮টি ভ্যাকসিন মানবদেহে পরীক্ষার অনুমোদন ডব্লিউএইচও’র
মারণব্যাধি করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে দেশে দেশে শতাধিক গবেষক দল কাজ করছেন। বিশ্বজুড়ে পরীক্ষামূলক ১০৮টি ভ্যাকসিনের মধ্যে ইতোমধ্যেই আটটিকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের (মানবদেহে প্রয়োগ) অনুমতি দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও। গত এপ্রিল মাসের শেষ দিকে ভ্যাকসিন উদ্ভাবনে গবেষক দল ছিল ১০৪টি। সম্ভ্যাব্য ভ্যাকসিনের তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে, জাপানের ইউনিভার্সিটি অব টোকিও, তুলানে ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব আলবার্টা এবং দি ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, কোভিড-১৯ এর ৮টি ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে পরীক্ষার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, প্রস্তুত রয়েছে আরও একশ’টি। এর মধ্যে চীনের তৈরি চারটি ভ্যাকসিন মানুষের শরীরে পরীক্ষা করা হয়েছে। ওই ভ্যাকসিনগুলো হিউম্যান ট্রায়ালের প্রথম এবং দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে।
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে খুব দ্রুত সময়েই প্রতিষেধক আনতে কাজ করে যাচ্ছে বিভিন্ন ডেভেলপারস ও অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান। তারা এই বছরের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিন বাজারে আনার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ভাইরাস রেগুলেটরি এজেন্সির মতে, ফাস্ট-ট্র্যাকড ভ্যাকসিন বাজারে আনতে সময় লাগে ৭ থেকে ১০ বছর। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা পরীক্ষার প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরে পৌঁছাতে সময় লাগে ২ থেকে ৩ বছর এবং ৫০০ থেকে ১ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালাতে হয়।
চীনের তিয়ানজিনে কানসিনো বায়োলজিকস কোম্পানি, উহান ইন্সটিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রডাক্ট, বেইজিং ইন্সটিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রডাক্ট এবং সার্স প্লাটফর্ম সিনোভ্যাক থেকে ভ্যাকসিন তৈরি করে। এছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজেস এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে ভ্যাকসিন তৈরি করেছে। যা এখন পরীক্ষার প্রথম ও দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, বাকি একশো ভ্যাকসিন প্রি-ক্লিনিক্যাল পর্যায়ে রয়েছে। স¤প্রতি অনলাইনে অনুষ্ঠিত ৪০ দেশের এক সম্মেলনে ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ তহবিলের ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যার মধ্যে ৪.৪ বিলিয়ন ব্যয় হবে ভ্যাকসিন তৈরিতে। সূত্র : ফার্স্টপোস্ট ও বিজনেস টুডে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।