মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অনেকে যখন ঘরে অবস্থান করছেন, ইন্টারনেটের মাধ্যমে হোম ডেলিভারিতে খাবার নিচ্ছেন, তখন ভুলে যাওয়াটাই স্বাভাবিক যে খাবারটি কোথা থেকে আসছে বা কিভাবে সরবরাহ হচ্ছে।
ব্রিটিশ কৃষকরা বসন্তের ফসল কাটার জন্য পূর্ব ইউরোপীয় অভিবাসী শ্রমিকদের উপর নির্ভর করে থাকেন। কিন্তু করোনা মহামারির কারণে হাজার হাজার ব্রিটিশ নাগরিক বেকার হয়ে পড়ায় দেশটির সরকার এখন অভিবাসীদের বদলে স্থানীয়দের মাঠে নেয়ার চেষ্টা করছে। গত রোববার সংবাদ সম্মেলনে পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও ব্রিটিশ কর্মকর্তা জর্জ ইউস্টিস বলেন, ‘আমরা অনুমান করছি যে, সাধারণত যত অভিবাসী শ্রমিক যুক্তরাষ্ট্রে আসেন, এবার তার মাত্র এক তৃতীয়াংশই আসতে পারবেন।’ তিনি জানান, খামারীদের কাছ থেকে কাজ নিয়ে জুনের ফসল কাটতে সহায়তা করার জন্য সরকার হাজার হাজার বেকারকে উৎসাহ দেয়ার জন্য কাজ করবে।
সোমবার দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের কেন্টের একটি খামারে ভোরের সময় ছয়জন মহিলাকে টি-শার্ট এবং ডাউন জ্যাকেট পরে একটি ক্ষেত থেকে লেটুস কাটতে, পাতা ছাঁটতে এবং প্যাকেট করতে দেখা যায়। ওই খামারের পরিচালক নিক ওটওয়েল বলেন, ‘এমনিতেই কৃষিকাজ যথেষ্ট জটিল।’ মহামারীর কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে এবং তিনি ক্রেতাও হারিয়েছেন বলে জানান।
ওটওয়েলের খামারে কাজ করার জন্য ৫০ জনেরও বেশি মানুষ আবেদন করেছিলেন। তিনি কাজে প্রশিক্ষণ দেয়ার জন্য তাদের মধ্যে আটজনকে বেছে নিয়েছিলেন। তাদের একজন হচ্ছেন ৩২ বছর বয়সী ড্যানিয়েল মার্টিন। লকডাউনের আগে তিনি পেশায় ছিলেন একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। তিনি ব্রিটিশ নির্মাণ শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করেছিলেন। এখন তার কাজ চলে যাওয়ায় তিনি এখানে এসেছেন। ‘নির্মাণ সাইট বন্ধ হওয়ার সাথে সাথে অনেক ক্লায়েন্টের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে,’ তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘সুতরাং আমাদের এখন কোন কাজ নেই।’ তার বন্ধুও এই খামারে কাজ করেন। মার্টিন মনে করেন পুরো গ্রীষ্ম বসে থাকার চেয়ে ট্রাক্টর চালানো ভাল।
৪৫ বছর বয়সী স্যালি পেনফোল্ড বলেন, ‘আমি বাড়ির অভ্যন্তরে থাকতে থাকতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছি। আমি মনে করি জাতির জন্য খাবার সরবরাহ করা বেশ সম্মানজনক কাজ।’ মার্চের শেষে যুক্তরাজ্য সরকার লকডাউন কার্যকর করার পরে, তিনি হেস্টিংসের একটি রেস্তোঁরায় তার ওয়েট্রেসের চাকরি হারিয়েছিলেন। তিনি স্থানীয় রেডিওতে এই খামারের কথা শুনেছিলেন এবং সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, বাড়িতে আটকে থাকার চেয়ে জমি থেকে ফসল উত্তোলন করা ভাল।
৩২ বছর বয়সী টমাস ট্যানসওল রেস্তোঁরায় শেফের কাজ করতেন। করোনা মহামারির কারণে তিনিও চাকরি হারান। তিনি বলেন, ‘আমি মূলত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আবার সক্রিয় হওয়ার জন্য।’ তিনি মনে করেন অলস বসে থাকার একটি ভাল বিকল্প খামারে কাজ করা।
তবে খামারের মালিক ওটওয়েল কিন্তু শঙ্কামুক্ত হতে পারেননি। তার প্রধান উদ্বেগ হল, নতুন নিযুক্তরা সম্ভবত টিকতে পারবে না। কারণ, তারা কঠোর পরিশ্রম করতে অভ্যস্ত নয়। তাদের বিরক্তি লাগতে পারে বা পুরানো চাকরিতে ফিরে যেতে পারে। এটি তার জন্য বিপর্যয়কর হতে পারে। কারণ, এর ফলে তার এই মৌসুমের ফসল নষ্ট হতে পারে।
ব্রিটেনের খামারগুলোতে শ্রমিক নিয়োগে কাজ করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৫৫ হাজার মানুষ খামারের চাকরিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত তাদের মধ্যে প্রায় ১৫০ জন খামারের কাজে যোগ দিয়েছেন।
সময়ের মধ্যে জমির সব ফসল তুলতে ওটওয়েলের ৪৫ জন শ্রমিক প্রয়োজন। তবে তিনি আশাবাদী নন। তিনি বলেন, ‘আমি এই শিল্পে একজন পরিচালক হিসাবে প্রায় ২৫ বছর ধরে কাজ করছি এবং আমার সমস্ত অভিজ্ঞতা আমাকে বলে যে, তারা বেশিদিন টিকতে পারবে না। এটি ঠিক তেমনটি ঘটবে না।’ তিনি জানান, এটি মৌসুমী কাজ। যে কোন কারণেই হোক ব্রিটেনের মানুষ মৌসুমী কাজ করতে চায় না। সূত্র: সিএনএন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।