Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্রাজিলে কফিন সঙ্কট মর্গে লাশের স্তূপ

নির্ধারিত সময়ে আগেই লকডাইন প্রত্যাহার অস্ট্রেলিয়ায় শনাক্ত : ৩৪,৩৫,৭৩২ মৃত : ২,৪১,৪৮২ সুস্থ : ১০,৯৭,৫০৯

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৪ মে, ২০২০, ১২:০৪ এএম

ব্রাজিলে করোনাভাইরাসে মৃত্যু বেড়ে কফিন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আমাজন অঞ্চলের শহর মানাউসে কয়েকদিনের মধ্যে এত বেশি মানুষ মারা গেছে যে, প্রস্তুতকারীদের পক্ষে পর্যাপ্ত কফিন জোগান দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রিয়জনের লাশ ঠিকমতো কবরস্থ করতে পারছে না শোকার্তরা। কেউ কেউ গণকবরে না গিয়ে লাশ পুড়িয়ে ফেলতেও বাধ্য হচ্ছেন।
এদিকে বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও শনাক্তের পরিধি অধিকাংশ দেশেই কমে এলেও কোন কোন দেশে বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে রাশিয়া ও ব্রাজিলে শনাক্ত ও মৃত বেড়েই চলেছে। বিশ্বের অন্য সব দেশ থেকে সংক্রমণের মাত্রা কমে আসার খবর পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল রাত ৯টা পর্যন্ত বিশ্বে নিশ্চিত হওয়া করোনা রোগীর সংখ্যা ৩৪ লাখ ৩৫ হাজার ৭৩২ জন এবং মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৪১ হাজার ৪৮২ জন। আর সুস্থ হয়ে পরিবারে ফিরে যাওয়া মানুষের সংখ্যা ১০ লাখ ৯৭ হাজার ৫০৯ জন।
গতকাল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আরো মারা গেছে- যুক্তরাষ্ট্রে ৫০৯, ইতালিতে ৪৭৪, স্পেনে ২৭৬, মেক্সিকোয় ১১৩, হল্যান্ডে ৯৪, ইরানে ৬৫, বেলজিয়ামে ৬২, কানাডায় ৫৫, রাশিয়ায় ৫৩, ইন্দোনেশিয়ায় ৩১, রোমানিয়ায় ২৭, ব্রাজিল ও ফিলিপাইনে ২৪ এবং পর্তুগাল ও সুইডেনে ১৬ জন করে।
ব্রাজিলে এযাবৎ মারা গেছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ। দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে করোনাবিধ্বস্ত দেশ এটি। মানাউসে কোনো কফিনই পাওয়া যাচ্ছে না। জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হোম অ্যাসোসিয়েশন ২ হাজার ৭শ’ কিলোমিটার দূরের সাও পাওলো থেকে কফিন আনতে বিশেষ বিমানের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছে। মানাউসের সঙ্গে দেশের আর কোনো শহরের সড়ক, রেল কিংবা নৌ-যোগাযোগ নেই।
মানাউস শহরটি প্রাকৃতিকভাবে চারদিক থেকে জঙ্গলবেষ্টিত। ২০ লাখ অধিবাসীর এই শহরে মৃত্যুহার বেশি হওয়ার পেছনে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র ও চিকিৎসা সরঞ্জাম না পাওয়াকেই দায়ী করলেন ব্রাজিলিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অভ ফিউনারেল সার্ভিস প্রোভাইডার্সের প্রেসিডেন্ট লরিভাল পানহোজ্জি।
মালয়েশিয়ায় লকডাউন শিথিল, খুলছে না মসজিদ

করোনাভাইরাস মোকাবেলায় অনেকটাই সফল পর্যটন নগরী মালয়েশিয়া। তাই আগামীকাল থেকে আগের রূপে ফিরতে যাচ্ছে মালয়েশিয়া। তবে খুলছে না মসজিদ, গির্জা, মন্দির। শুক্রবার বিশেষ ভাষণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী তান সেরি মহিউদ্দিন ইয়াসিন এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, আমরা করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সফল হয়েছি। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় চলমান নিয়ন্ত্রণ আদেশ মুভমেন্ট কন্ট্রোল অডার (এমসিও) চতুর্থবারের মতো চলছে। যা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ১২ মে। তবে এর মধ্যে দিয়ে আমরা কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে প্রচুর মানুষের উপস্থিতি থাকে এমন কিছু বাদ রেখে বাকি সবগুলোই ব্যবসা পরিচালনা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে রয়টার্স জানিয়েছে, ফ্রান্সে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ও মৃত্য আশানুরূপ কমে এসেছে। দেশটিতে গত শুক্রবার মাত্র ১৬৮ জন সংক্রমিত বলে শনাক্ত হয়েছে। এটি গত ৩০ এপ্রিল ছিল ৭৫৮ জন। ফ্রান্সে করোনা সংক্রমণের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংক্রমণের ডেটা সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে গত ১ মে সর্বনিম্ন শনাক্ত রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটিতে সর্বোচ্চ সংখ্যাক একদিনে শনাক্ত হয়েছিল ৩ এপ্রিল ১৭ হাজার ৩৫৫ জন। সর্বশেষ তথ্যে দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৬। এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে পরিবারে ফিরে গেছেন ৫০ হাজার ২১২ জন।
এদিকে মৃত্যুর হিসেবে দেখা গেছে, ২৪ মার্চের পর ফ্রান্সে গত শুক্রবার একদিনে সর্বনিম্ন মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছে। ২৩ মার্চ ১৬৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল এবং গত শুক্রবারই সর্বনিম্ন ২১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় গত ১৫ এপ্রিল ১ হাজার ৪৩৮ জন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রধান জেরোম সালমোন বলেছেন, নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে লোকের সংখ্যা বুধবার ৪,২০৭ থেকে ৪,০১৯ এ নেমে আসে, যা ছিল টানা ২২ দিনের দিন নিম্ন গমন। একইভাবে করোনায় হাসপাতালে লোকের সংখ্যাও ২৬ হাজার ৮৩৪ থেকে ২৬ হাজার ২৮৩-এ নেমে এসেছে। টানা দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে নিরবচ্ছিন্নভাবে কমে আসা অব্যাহত রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়াতে নির্ধারিত সময়ের আগেই লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে লকডাউন শিথিলের ঘোষণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। আগামী শুক্রবার থেকেই কড়াকড়ি শিথিল করা হবে।
মরিসন বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকরা সরকারের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করেছে। তারা ভালো অবস্থান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের অর্থনীতি পুনরায় চালু করতে হবে। আমাদের সমাজকে আবারও গতিশীল করে তুলতে হবে। দেশটিতে করোনা রোগী ৬ হাজার ৭৬৬ এবং মারা গেছেন ৯৩ জন। সূত্র : রয়টার্স, সিএনএন, ওয়ার্ল্ডমিটার্স।



 

Show all comments
  • Mohamed Rabiul Hassan ৩ মে, ২০২০, ১:৪১ এএম says : 0
    He Allah tmi sobai k hefajot koro . Amin
    Total Reply(0) Reply
  • রশীদ খান রশীদ ৩ মে, ২০২০, ১:৪২ এএম says : 0
    সারাবিশ্বে মৃত্যুর হার ৭.০৫%। যেখানে উগান্ডার চেয়ে ১০০ গুন অনুন্নত দেশ বেলিজিয়ামে মৃত্যুর হার ১৫.৭১% সেখানে সিঙ্গাপুরের চেয়ে ৫০ গুন উন্নত বাংলাদেশে মৃত্যুর হার মাত্র ২.০৬%। আসলে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেনসহ কয়েকটি দেশ ছাড়া অনেক দেশই সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। চীন, বাংলাদেশসহ অনেক দেশই আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি করছে। যেমন বাংলাদেশে গতকাল মৃত দুজন পুলিশ সদস্যকে আজকের মৃত্যুর তালিকায় দেখায় নাই সরকার।
    Total Reply(0) Reply
  • শেষ অধ্যায় ৩ মে, ২০২০, ১:৪২ এএম says : 0
    আল্লাহ তাআ´লা সবাইকে হেফাজত করুক,,, এবং জ্ঞানহীনদেরকে হেদায়েত দান করুক,,,আমিন।
    Total Reply(0) Reply
  • Pg Abul Hasim ৩ মে, ২০২০, ১:৪৩ এএম says : 0
    কি যে আছে কপালে আল্লাহ ভাল জানে।
    Total Reply(0) Reply
  • Anwar ৩ মে, ২০২০, ২:০৩ পিএম says : 0
    আল্লাহ তাআ´লা সবাইকে হেফাজত করুক,,, এবং জ্ঞানহীনদেরকে হেদায়েত দান করুক,,,আমিন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ