মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
আফ্রিকায় গত দশ দিনে করোনভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত বেড়ে গেছে ৪০ শতাংশ এবং উদ্বেগজনক সঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে যে, সেখানে এই রোগটির আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটতে পারে। মহাদেশটি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সেরা প্রতিরক্ষা হিসাবে আগ্রাসী স্ক্রিনিং এবং টেস্টিং কৌশলে মনোনিবেশ করেছে। ধীরে শুরুর পর শনাক্ত হঠাৎ বেড়ে ৩০ হাজারের বেশিতে উঠে গেছে এবং মৃত্যুর সংখ্যায় একই রকম বৃদ্ধি ঘটে ১,৪২৮-এ পৌঁছানোয় বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বিশ্বজুড়ে মারণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রাদুর্ভাবের পর ৬ মার্চ লাখে পৌঁছে শনাক্তের সংখ্যা। এরপর ২৬ মার্চ ৫ লাখ, ২ এপ্রিল ১০ লাখ, ৮ এপ্রিল ১৫ লাখ, ১৫ এপ্রিল ২০ লাখ এবং ২১ এপ্রিল ২৫ লাখে পৌঁছে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় এ রিপোর্ট লেখার মুহূর্তে শনাক্ত দাঁড়ায় ৩০ লাখ ২৩ হাজার ০৭৭ জনে। মৃত বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৮ হাজার ৮৭৮ এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা মানুষের সংখ্যা ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৩৫ জন।
গতকাল আরো মারা গেছে- যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬৬, ইতালিতে ৩৩৩, স্পেনে ৩৩১, বেলজিয়ামে ১১৩, ইরানে ৯৬, সুইডেনে ৮০, কানাডায় ৫৭, রাশিয়ায় ৪৭, মেক্সিকোয় ৪৬, হল্যান্ডে ৪৩, সুইজারল্যান্ডে ৩০, ব্রাজিল ২৭, পর্তুগালে ২৫, ইন্দোনেশিয়া ২২, রোমানিয়ায় ১২, ইউক্রেনে ১১ ও ফিলিপাইনে ১০ জন।
ওদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশে ১ কোটি লোকের আক্রান্তের বিষয়ে সতর্ক করেছে, তবে দ্রæত নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে প্রাদুর্ভাব কম হতে পারে। আফ্রিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে, আফ্রিকার ৫৪টি দেশে কোভিড-১৯ এর ৩০ হাজারেরও বেশি (৩২,৮৪৩ জন) আক্রান্ত নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, আফ্রিকায় ১,৪২৮ জন মারা গেছে। কেবল দুটি আফ্রিকান দেশ, লেসোথোর ক্ষুদ্র পর্বতমালা এবং ছোট ভারত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জ কোমোরোসে এ রোগের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। মহাদেশের সর্বাধিক কোভিড-১৯ আক্রান্ত রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪,৫৪৬ জন। তারা এই রোগটি খুঁজে বের করতে এবং আইসেলোশনে পাঠাতে প্রতিদিন ১০ হাজারটি টেস্ট করছেন। উত্তর আফ্রিকার তিনটি দেশ মিসর ৪,৫৩৪, মরক্কো ৪,১১৫ এবং আলজেরিয়া ৩,৩৮২-এর আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ আফ্রিকায় আক্রান্তের কাছাকাছি রয়েছে। সংক্রমিতদের বিশাল সংখ্যা ও লাখ লাখ জনসংখ্যার অনেক দেশে ভেন্টিলেটরের সঙ্কট করোনা মোকাবিলার লড়াইয়ে খুব কমই সহায়তা করবে। প্যাচাই পরীক্ষার কারণে আফ্রিকায় এই রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার পুরো চিত্র আঁকা শক্ত হয়ে পড়েছে।
জিবুতিতে লাখে ৯৮.৬ সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে যা এই মহাদেশে সর্বাধিক প্রকোপ। তবে এই ক্ষুদ্র দেশটি ১০ হাজারেরও বেশি পরীক্ষা চালিয়েছে, যা ১০ কোটি জনসংখ্যার প্রতিবেশী ইথিওপিয়ার চেয়ে বেশি। ঘন বসতি এবং দরিদ্র অঞ্চলের কারণে আফ্রিকায় সামাজিক দূরত্ব সবসময় কার্যকর না হওয়ায় বিষয়গুলো আরও কঠিন করে তুলেছে।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা - যিনি চার সপ্তাহ আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বের অন্যতম কঠোর লকডাউন চাপিয়েছিলেন - পর্যায়ক্রমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালুর কথা ঘোষণা করেন। প্রেসিডেন্ট টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমরা আজকে পদক্ষেপ নিতে পারি না যে, আগামীকাল আমরা গভীরভাবে অনুশোচনা করব, তবে আমাদের লোকদের খাদ্য দরকার, তাদের জীবিকা নির্বাহ করা দরকার’। তিনি ২১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
তবে শীতের সাথে সংক্রমণের নতুন ঢেউ আসার আশঙ্কা এখনও রয়েছে। আশা করা যায় যে, পরীক্ষার কৌশলটি মহাদেশটিকে লকডাউন থেকে বেরেিয় আসতে সহায়তা করবে যাতে লোকেরা উপার্জন চালিয়ে যেতে পারে। তবে আফ্রিকা রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের পরিচালক জন নেকেনগাসং বলেছেন, বেশিরভাগ দেশের পরীক্ষার ক্ষমতা ‘অত্যন্ত সীমিত’ এবং ‘অত্যন্ত চাপযুক্ত’।
মহাদেশটি প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার পর থেকে দুই মাসে ১৩০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৫ লাখেরও কম পরীক্ষা করা হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, এই মহাদেশের জন্য ৭ কোটি ৪০ লাখ টেস্ট কিট এবং ৩০ হাজার ভেন্টিলেটর লাগবে।
ফ্রান্সে লকডাউন প্রত্যাহার হতে পারে ১১ মে
ফ্রান্সে কমতে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ১১ মে'র পর লকডাউন তুলে নেয়া হতে পারে। পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া হবে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে জনসমাগম যেন না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক ফরাসি সরকার। সূত্র : রয়টার্স, ডেইলি মেইল ও ওয়ার্ল্ডমিটার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।