Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আফ্রিকায় শনাক্ত-মৃত গত ১০ দিনে বেড়েছে ৪০ শতাংশ

শনাক্ত : ৩০,২৩,০৭৭ মৃত : ২,০৮,৮৭৮ সুস্থ : ৮,৯৩,০৩৫

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ এপ্রিল, ২০২০, ১২:০৪ এএম

আফ্রিকায় গত দশ দিনে করোনভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত বেড়ে গেছে ৪০ শতাংশ এবং উদ্বেগজনক সঙ্কেত পাওয়া যাচ্ছে যে, সেখানে এই রোগটির আশঙ্কাজনক উত্থান ঘটতে পারে। মহাদেশটি কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সেরা প্রতিরক্ষা হিসাবে আগ্রাসী স্ক্রিনিং এবং টেস্টিং কৌশলে মনোনিবেশ করেছে। ধীরে শুরুর পর শনাক্ত হঠাৎ বেড়ে ৩০ হাজারের বেশিতে উঠে গেছে এবং মৃত্যুর সংখ্যায় একই রকম বৃদ্ধি ঘটে ১,৪২৮-এ পৌঁছানোয় বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বিশ্বজুড়ে মারণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রাদুর্ভাবের পর ৬ মার্চ লাখে পৌঁছে শনাক্তের সংখ্যা। এরপর ২৬ মার্চ ৫ লাখ, ২ এপ্রিল ১০ লাখ, ৮ এপ্রিল ১৫ লাখ, ১৫ এপ্রিল ২০ লাখ এবং ২১ এপ্রিল ২৫ লাখে পৌঁছে। গতকাল রাত সাড়ে ১০টায় এ রিপোর্ট লেখার মুহূর্তে শনাক্ত দাঁড়ায় ৩০ লাখ ২৩ হাজার ০৭৭ জনে। মৃত বেড়ে দাঁড়ায় ২ লাখ ৮ হাজার ৮৭৮ এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা মানুষের সংখ্যা ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৩৫ জন।
গতকাল আরো মারা গেছে- যুক্তরাষ্ট্রে ৪৬৬, ইতালিতে ৩৩৩, স্পেনে ৩৩১, বেলজিয়ামে ১১৩, ইরানে ৯৬, সুইডেনে ৮০, কানাডায় ৫৭, রাশিয়ায় ৪৭, মেক্সিকোয় ৪৬, হল্যান্ডে ৪৩, সুইজারল্যান্ডে ৩০, ব্রাজিল ২৭, পর্তুগালে ২৫, ইন্দোনেশিয়া ২২, রোমানিয়ায় ১২, ইউক্রেনে ১১ ও ফিলিপাইনে ১০ জন।
ওদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে আফ্রিকা মহাদেশে ১ কোটি লোকের আক্রান্তের বিষয়ে সতর্ক করেছে, তবে দ্রæত নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা গেলে প্রাদুর্ভাব কম হতে পারে। আফ্রিকার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র জানিয়েছে, আফ্রিকার ৫৪টি দেশে কোভিড-১৯ এর ৩০ হাজারেরও বেশি (৩২,৮৪৩ জন) আক্রান্ত নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সর্বশেষ তথ্যে দেখা গেছে, আফ্রিকায় ১,৪২৮ জন মারা গেছে। কেবল দুটি আফ্রিকান দেশ, লেসোথোর ক্ষুদ্র পর্বতমালা এবং ছোট ভারত মহাসাগরের দ্বীপপুঞ্জ কোমোরোসে এ রোগের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। মহাদেশের সর্বাধিক কোভিড-১৯ আক্রান্ত রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ৪,৫৪৬ জন। তারা এই রোগটি খুঁজে বের করতে এবং আইসেলোশনে পাঠাতে প্রতিদিন ১০ হাজারটি টেস্ট করছেন। উত্তর আফ্রিকার তিনটি দেশ মিসর ৪,৫৩৪, মরক্কো ৪,১১৫ এবং আলজেরিয়া ৩,৩৮২-এর আক্রান্তের সংখ্যা দক্ষিণ আফ্রিকায় আক্রান্তের কাছাকাছি রয়েছে। সংক্রমিতদের বিশাল সংখ্যা ও লাখ লাখ জনসংখ্যার অনেক দেশে ভেন্টিলেটরের সঙ্কট করোনা মোকাবিলার লড়াইয়ে খুব কমই সহায়তা করবে। প্যাচাই পরীক্ষার কারণে আফ্রিকায় এই রোগ ছড়িয়ে যাওয়ার পুরো চিত্র আঁকা শক্ত হয়ে পড়েছে।
জিবুতিতে লাখে ৯৮.৬ সংক্রমণ রেকর্ড করা হয়েছে যা এই মহাদেশে সর্বাধিক প্রকোপ। তবে এই ক্ষুদ্র দেশটি ১০ হাজারেরও বেশি পরীক্ষা চালিয়েছে, যা ১০ কোটি জনসংখ্যার প্রতিবেশী ইথিওপিয়ার চেয়ে বেশি। ঘন বসতি এবং দরিদ্র অঞ্চলের কারণে আফ্রিকায় সামাজিক দূরত্ব সবসময় কার্যকর না হওয়ায় বিষয়গুলো আরও কঠিন করে তুলেছে।
গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা - যিনি চার সপ্তাহ আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশ্বের অন্যতম কঠোর লকডাউন চাপিয়েছিলেন - পর্যায়ক্রমে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালুর কথা ঘোষণা করেন। প্রেসিডেন্ট টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে বলেছিলেন, ‘আমরা আজকে পদক্ষেপ নিতে পারি না যে, আগামীকাল আমরা গভীরভাবে অনুশোচনা করব, তবে আমাদের লোকদের খাদ্য দরকার, তাদের জীবিকা নির্বাহ করা দরকার’। তিনি ২১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের একটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করেন।
তবে শীতের সাথে সংক্রমণের নতুন ঢেউ আসার আশঙ্কা এখনও রয়েছে। আশা করা যায় যে, পরীক্ষার কৌশলটি মহাদেশটিকে লকডাউন থেকে বেরেিয় আসতে সহায়তা করবে যাতে লোকেরা উপার্জন চালিয়ে যেতে পারে। তবে আফ্রিকা রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের পরিচালক জন নেকেনগাসং বলেছেন, বেশিরভাগ দেশের পরীক্ষার ক্ষমতা ‘অত্যন্ত সীমিত’ এবং ‘অত্যন্ত চাপযুক্ত’।
মহাদেশটি প্রাদুর্ভাবের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করার পর থেকে দুই মাসে ১৩০ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ৫ লাখেরও কম পরীক্ষা করা হয়েছে। জাতিসংঘ বলছে, এই মহাদেশের জন্য ৭ কোটি ৪০ লাখ টেস্ট কিট এবং ৩০ হাজার ভেন্টিলেটর লাগবে।
ফ্রান্সে লকডাউন প্রত্যাহার হতে পারে ১১ মে
ফ্রান্সে কমতে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। চলমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ১১ মে'র পর লকডাউন তুলে নেয়া হতে পারে। পর্যায়ক্রমে খুলে দেয়া হবে স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে জনসমাগম যেন না ঘটে সে বিষয়ে সতর্ক ফরাসি সরকার। সূত্র : রয়টার্স, ডেইলি মেইল ও ওয়ার্ল্ডমিটার্স।



 

Show all comments
  • আমজাদ হুসেন ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:২৫ এএম says : 0
    মহান সৃষ্টিকর্তার নিকট সারা বিশ্বের করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব যেন মুক্ত হয় আল্লাহ যেন আমাদের বিশ্বের সকল ধর্মের মানুষদেরকে এ রোগ থেকে মুক্ত করেন নিউজিল্যান্ড মহান আল্লাহ তাআলার অশেষ কৃপায় ভাইরাস মুক্ত হওয়া মহান আল্লাহর কাছে হাজার হাজার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি
    Total Reply(0) Reply
  • Abdulaziz Nakib ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:২৫ এএম says : 0
    বাংলাদেশকে করোনা থেকে মুক্ত করতে হলে আবশ্যক হবে সকল স্তর থেকে দূর্নীতি মুক্ত করা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mijanur Rahman Mijan ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:২৭ এএম says : 0
    ইতালিতে ৪তারিখ পর লকডাউন তুলে নেওয়া হবে, তার পরও আমাদের সাবাইকে সচেতন ভাবে চলাফেরা করতে হবে, বাংলাদেশ সুস্থ থাকুক এই দোয়া করি
    Total Reply(0) Reply
  • NAdim Ahmed ২৮ এপ্রিল, ২০২০, ১:২৮ এএম says : 0
    বাংলাদেশের অচলাবস্থা আর শেষ হবে বলে আমার মনে হয়না কারণ মানুষ যে হারে রাস্তাঘাটে ঘুরাঘুরি করছে বাজারে যাচ্ছে আবার নতুন করে যুক্ত হয়েছে গার্মেন্টস খোলার হিড়িক সুতরাং ঝুঁকি যে আরো বাড়ছে তাতে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ