করোনা উপসর্গের তথ্য গোপন করে চিকিৎসার পর এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের কামারগাঁতি রওজা শরীফসহ ৬ টি বাড়ি লকডাউন করেছে প্রশাসন। সেখানে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ হতে লাল পতাকা ও ব্যানার টানিয়ে দেয়া হয়েছে। উদ্বিগ্নতায় রয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
উল্লেখ্য, করোনা উপসর্গ নিয়ে হারুণ অর রশিদ সুমন (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয় আজ শনিবার সকালে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে । তিনি কালিগঞ্জ উপজেলার ধলবাড়িয়া ইউনিয়নের কাঁমারগাতী গ্রামের ছবেদ আলি সরদারের ছেলে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রব জানান, নারায়ণগঞ্জে একটি প্লাস্টিক কারখানায় কাজ করতেন হারুণ অর রশিদ সুমন। ৫ দিন আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে তিনি সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে দুই প্রতিবেশীর সাথে অ্যাম্বুলেন্সযোগে বাড়িতে আসেন। তাদেরকে কামারগাঁতি রওজা শরীফ কমপ্লেক্স ভবনে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। হারুণ অর রশিদের জ¦র থাকলেও বিষয়টি গোপন রাখে তারা। হঠাৎ বেশী অসুস্থ হওয়ায় শুক্রবার রাতে তাকে শ্যামনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার ভোরে হারুণ অর রশিদের মৃত্যু হয়। এঘটনায় এলাকাজুড়ে আতং্কের সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে বিকালে সুমনের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। কামারগাতি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন আব্দুল্লা আল মামুনের ইমামতিতে পরিবারের চারজন সদস্য নামাজে জানাজায় অংশগ্রহণ করেন। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. শেখ তৈয়েবুর রহমান বলেন, ওই যুবক তথ্য গোপন করায় চিকিৎসকরা ম্যানেনজাইটিস রোগী হিসেবে চিকিৎসা দিচ্ছিলেন। মৃত্যুর পরেই প্রকৃত তথ্য জানা গেছে। ততক্ষণে তার রক্ত পরীক্ষার সুযোগ ছিল না। এখন তার পরিবারের সবার স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহত যুবকের কাছে বারবার তার সাম্প্রতিক ইতিহাস জানার চেষ্টা করলেও সে ও তার আত্মীয়স্বজন মিথ্যা তথ্য দেয়। মৃত্যুর পর তার আত্মীয় স্বজন বলছেন, সুমন সম্প্রতি ঢাকা থেকে অসুস্থ অবস্থায় বাড়িতে ফেরে।
তিনি আরো জানান, তথ্য গোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সঠিক তথ্য দিলে তাকে আমরা করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠাতে পারতাম। এখন বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক ও নার্সদের মধ্যেও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। তার নিকটাত্মীয়দের নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হচ্ছে।