Inqilab Logo

রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১, ০৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সিঙ্গাপুরে এক লাখ ত্রিশ হাজার প্রবাসী চরম হতাশায়

করোনায় আক্রান্ত চার হাজার বাংলাদেশি

শামসুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৪৯ এএম

সিঙ্গাপুরে অভিবাসী কর্মীরা ডরমিটরিগুলোতে গাদাগাদি করে বসবাস করায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। ডরমিটরিগুলো থেকে কাউকে বের হতে দিচ্ছে না সরকার। অভিবাসী কর্মীদের ডরমিটরিগুলো কড়া নজরদারিতে রেখে সরকার। দেশটিতে অবরুদ্ধ এক লাখ ত্রিশ হাজার বাংলাদেশি কর্মী চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। বুধবার পর্যন্ত দেশটিতে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দশ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এ মহামারীতে আক্রান্তের ৯৯ শতাংশই অভিবাসী কর্মী। সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ বিষয়টি নিশ্চিত করছে। 

সিঙ্গাপুরস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত চার হাজার বাংলাদেশি কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরে কোনো বাংলাদেশি এখন পর্যন্ত মারা যাননি।বেশিরভাগ বাংলাদেশির মধ্যে কেবল হালকা ধরনের কোভিড-১৯ এর লক্ষণ রয়েছে। বুধবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক হাজার ১৬ জনের মধ্যে মাত্র ১৫ জন স্থানীয়। বাকি এক হাজার একজন বিদেশি।
দেশটির সরকার প্রবাসীদের ডরমিটরিগুলোতে তিন বেলাই ফ্রি খাবার সরবরাহ করছে। খাবারের সাথে বিভিন্ন প্রকারের ফলও দিচ্ছে। ডরমিটরিগুলোতে প্রতিদিন সরকারি চিকিৎসক গিয়ে কর্মীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছে। দেশটির সরকার অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে অভিবাসী কর্মীদের দেখভাল করছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে সিঙ্গাপুর থেকে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের তন্তর গ্রামের প্রবাসী আমিনুল ইসলাম তুহিন এতথ্য জানিয়েছেন। প্রবাসী তুহিন বলেন, সিঙ্গাপুর সরকার অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষায় আপন সন্তানের মতো খোঁজ খবর নিচ্ছেন। কর্মীরা অবরুদ্ধ থাকলেও কোনো খাবারের অভাব নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রত্যেক ডরমিটরিতে যেসব কর্মী আগামীকাল থেকে রোজা রাখবে তাদের জন্য সেহরি ও ইফতারের জন্য পৃথক ভাবে খাবার সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রত্যেক ডরমিটরিতে ২/৩ দিন পর পর সরকারি কর্মকর্তারা ভিডিও কলের মাধ্যমে প্রবাসী কর্মীদের কোনো কিছুর প্রয়োজন আছে কিনা অথবা কোনো সমস্যা আছে কিনা সে ব্যাপারে সরাসরি কথা বলছেন। তিনি জানান, দেশটির সরকার প্রবাসী কর্মীদের এপ্রিল ও মে মাসের পুরো বেতন কোম্পানীর মাধ্যমে পরিশোধের ঘোষণা দিয়েছে। কোম্পানীগুলো সঠিকভাবে কর্মীদের বেতন দিচ্ছে কিনা তা’ও সরকার কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জানায়, ২০ এপ্রিল থেকে টানা তিন দিন এক হাজারের বেশি মানুষের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে স্থানীয় লোকের সংখ্যা খুবই কম। ২০ এপ্রিল শনাক্ত এক হাজার ৪২৬ জনের মধ্যে স্থানীয় নাগরিক মাত্র ১৬ জন। ২১ এপ্রিল শনাক্ত এক হাজার ১১১ জনের মধ্যে ২৮ জন স্থানীয় নাগরিক। আর ২২ এপ্রিল আক্রান্ত এক হাজার ১৬ জনের মধ্যে মাত্র ১৫ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক। অর্থাৎ গত তিন দিনে আক্রান্ত তিন হাজার ৫৫৩ জনের মধ্যে মাত্র ৫৯ জন সিঙ্গাপুরের নাগরিক। বাকিরা বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার ও চীনের নাগরিক।
এদিকে, করোনায় অসুস্থ ছিলেন যে বাংলাদেশি কর্মী তাকে প্রায় দুই মাসের বেশি সময় পর আইসিইউ থেকে কেবিনে নেয়া হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থাও উন্নতির দিকে।
গত মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং জাতির উদ্দেশে ভাষণে অভিবাসীদের প্রসঙ্গে কথা বলার সময় দুই মাসের বেশি সময় পর আইসিইউ থেকে সাধারণ ওয়ার্ডে নেয়া বাংলাদেশি কর্মীর বিষয়টি উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের ওই কর্মীর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেক ভালো উল্লেখ করে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সুস্থ হতে একটু সময় লাগবে। অসুস্থ ঐ বাংলাদেশি খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে তার সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে কোলে তুলে নিতে পারবেন বলেও সিঙ্গাপুর প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

প্রবাস জীবন বিভাগে সংবাদ পাঠানোর ঠিকানা
[email protected]



 

Show all comments
  • H.M.MIJANUR RAHAMAN ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১২:৫২ পিএম says : 0
    আপনাদের পেপার আমার খুব ভালো লাগে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ