Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতে শীর্ষে পৌঁছতে পারে মধ্য মে’তে

করোনা মহামারী নিয়ে গবেষণা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২০, ১১:৫১ পিএম

ভারতে করোনাভাইরাস মহামারীটি মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে শীর্ষে উঠতে পারে এবং এরপরে ধীরে ধীরে বাইরে বেরিয়ে আসতে পারে বলে বিশ্বব্যাপী পরামর্শ সংস্থা প্রতিভিতির অংশীদারিতে টাইমস নেটওয়ার্কের একটি মডেলিং সমীক্ষা পূর্বাভাস দিয়েছে।

করোনা রোগীর পরিসংখ্যান থেকে প্রাপ্ত তিনটি মডেলের সাহায্যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে যে, ২২ মে নাগাদ ভারতে করোনা রোগীর সংখ্যা ৭৫ হাজারে ঠেকতে পারে। দলটি করোনভাইরাসটির অগ্রগতি সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করতে তিনটি মডেল তৈরি করে। প্রতিটি মডেল কীভাবে এই প্রকোপটি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে ছড়িয়ে পড়তে পারে তার একটি প্রাক্কলন সরবরাহ করে এবং কীভাবে সরকার এবং স্বাস্থ্য অবকাঠামো সঙ্কটে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে সে সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী উপস্থাপন করে।

তিনটি মডেল হল পার্সেন্টেজ বেসড, টাইমস সিরিজ এবং সাসেপ্টিবল এক্সপোজড ইনফেক্টেড রিকভার্ড (এসইআইআর)। সংক্রমণ প্রবণতা এবং সময়ের সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়া ও সেরে ওঠার গতিপ্রকৃতি দেখে এই পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। এসইআইআর মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস বলছে, ভারতের জাতীয় স্তরে করোনা মহামারি আগস্ট মাস পর্যন্ত চলতে পারে। বিহার বা ওড়িশ্যার মতো করোনার প্রকোপ কম এমন রাজ্যগুলিতে মে মাসের শেষ অথবা জুনের প্রথম দিকে এর প্রকোপ কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু মহারাষ্ট্র বা মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি থেকে করোনাভাইরাসের সরে যেতে আরও একমাস বেশি সময় লাগতে পারে।

টাইমস নেটওয়ার্কের প্রধান এমকে আনন্দ বলেন, দেশের আর্থসামাজিক ব্যবস্থার ওপর করোনার মতো এমন প্রভাববিস্তারকারী ঘটনা আমাদের জীবদ্দশায় এর আগে ঘটেনি। করোনার জেরে সামাজিক অস্থিরতা তৈরির যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে একে ভালোভাবে বোঝা এবং ফলাফল নির্ধারণ করা আমাদের একটা বড় দায়িত্ব। তেলেঙ্গানা ও কর্ণাটক ইতিমধ্যে ৭ মে পর্যন্ত লকডাউনের সময়সীমা বাড়িয়েছে। কিন্তু লকডাউনের কড়াকড়ি কমিয়ে দেয়ায় কেরলের ওপর অসন্তুষ্ট কেন্দ্র।

যেসব রাজ্য প্রথম থেকেই লকডাউনের পথে হেঁটেছে, করোনা মোকাবিলায় সেই সব রাজ্যই এগিয়ে আছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাজস্থান, বিহার এবং পাঞ্জাব প্রথম থেকেই লকডাউন করায় তাদের করোনার গ্রাফ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। অন্যদিকে এখনও আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট এবং মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য।

সংক্রমণের অভিমুখ এখনও ওপরের দিকে থাকলেও আগস্টের পর করোনাভাইরাসকে হয়তো আর এ তল্লাটে দেখা যাবে না, এমনই ইঙ্গিত মিলেছে সা¤প্রতিক সমীক্ষায়। সোমবার থেকে কিছু শিল্প ও পরিষেবাক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করেছে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। ইতোমধ্যে দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে।
গোটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, দাবি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের। র‌্যাপিড টেস্ট শুরু হওয়ায় আগামী কয়েক সপ্তাহে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হুড়মুড়িয়ে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশ জুড়ে এখনও পর্যন্ত যত জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাদের বেশির ভাগের মধ্যে মারণ ভাইরাসের কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি বলে জানিয়েছেন ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর গবেষক রমণ আর গঙ্গাখেড়কর। তার মতে, বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, করোনা ধনী-দরিদ্র, উঁচু-নীচু, কাউকেই ছাড়ছে না। তাই এর বিরুদ্ধে আমাদের সব ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে।

আশার আলো দেখা গিয়েছে অন্য একটি সমীক্ষায়। মে মাসের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহ সম্ভবত শীর্ষে পৌঁছাবে দেশের করোনা মহামারির গ্রাফ, এমনটাই মনে করছেন দেশের স্বাস্থ্য পরিসংখ্যানবিদরা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য থেকে আন্তর্জাতিক সমীক্ষা সংস্থার তৈরি রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সর্বনিম্ন ৩০ হাজার এবং সর্বোচ্চ ২ লাখ ৮৬ হাজারের কাছাকাছি হতে পারে। এর মধ্যে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রাখতে হতে পারে ৩০ শতাংশ রোগীকে। আগামী মাসের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া।



 

Show all comments
  • Ekram ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৭ এএম says : 0
    ভারত নির্বাচনে বাংলাদেশকে অনুসরণ করেছে কিন্তু করোনা সনাক্তকরণে বাংলাদেশকে অনুসরণ করতে পারেনি। তাদের উচিত IEDCR এর মত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা।
    Total Reply(0) Reply
  • জান্নাতের পাখি ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৮ এএম says : 0
    ওটা ইন্দিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়,,, বাংলাদেশ এর এই বিষয়ে মাথাব্যথা করার দক্কার নাই,,, করোনা সবদেশে প্রভাব বিস্তার করলেও বাংলাদেশে পারবে না,,, ( ভবিষ্যৎ ব্রিফিং এ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী )
    Total Reply(0) Reply
  • তামান্না বিনতে জাকির ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৮ এএম says : 0
    ভারতের আয়তন কি বাংলাদেশের সমান সেখানে তো রোগী আমাদের থেকে বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Farhad Hossain ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৯ এএম says : 0
    সবাইকে ভুলে গেলে হবেনা ভারতে যে ভাবে অবৈধ মেলা মেশা চলে আমাদের এখানে তেমন্টা নেই।সকল কিছুতে ভারত ভারত করবেন না।সুবিধা অনুযায়ী ভারত আর দেশের মানুষের জন্য হলে তখন জিম্বাবুয়ে উগান্ডা দেখান।দুই মুখ সাপ।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Abdullha ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:০৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশের মোসলমান এর ওপর আল্লাহর রহমত আছে আমি আশা করি,,, যেটা ভারতের হিন্দুদের ওপরে নেই
    Total Reply(0) Reply
  • Soumitra Chakraborty ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ১:১০ এএম says : 0
    ভারতে করোনা পরবর্তী স্তরে কাজ হারাবেন ১২ কোটি মানুষ। দারিদ্র্যসীমার নীচে নেমে যাবেন ভারতে ৪০ কোটি এবং সারা পৃথিবীতে ২০০ কোটি মানুষ। (সূত্র : এবিপি নিউজ, সিটি নিউজ, টাইমস অব ইন্ডিয়া।) পরিস্থিতি ক্রমশই উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। আশঙ্কা হচ্ছে তাহলে কি ভয়ঙ্কর মহামারীর পরে আসতে চলেছে ভয়াবহ মন্বন্তর?
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ আইয়ুব আলী বসুনীয়া ২৩ এপ্রিল, ২০২০, ৯:৪১ এএম says : 0
    ভারতের মত পরিস্থিতি বাংলাদেশের হবেনা ইনশাল্লাহ। আমরা আল্লাহর রহমতে দ্রুত এই মহাসংকট কেটে যাবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ