Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লন্ডনে করোনা প্রতিষেধক তৈরি, কাল থেকে মানবদেহে পরীক্ষা শুরু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ এপ্রিল, ২০২০, ৭:২৬ পিএম

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর প্রতিষেধক তৈরি করে ফেলেছেন লন্ডনের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা। কাল থেকেই এটি পরীক্ষামূলকভাবে মানবদেহে প্রয়োগ করা শুরু হবে। পাশাপাশি, যুক্তরাজ্যের ইম্পেরিয়াল কলেজও আরেকটি প্রতিষেধক তৈরি করেছেন। তারা সেটি আগামী জুন থেকে মানবদেহে প্রয়োগ করা শুরু করবেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) তথ্য মতে, এই মুহূর্তে বিশ্বজুড়ে মোট ৭০ টি প্রতিষ্ঠান করোনার ভ্যাকসিন তৈরির চেষ্টা করছে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন পরীক্ষার ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই ৫১০ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। এদের প্রত্যেকেরই বয়স ১৮ থেকে ৫৫ এর মধ্যে। তবে তাদের আরও স্বেচ্ছাসেবী প্রয়োজন। এ জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রত্যেককে মাথাপিছু ৬২৫ পাউন্ড (প্রায় ৬৬ হাজার টাকা) করে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে তারা। স্বেচ্ছাসেবীদের অর্ধেককে ট্রায়াল ড্রাগের মাধ্যমে টিকা দেয়া হবে এবং অন্যরা ইতিমধ্যে ব্যবহৃত মেনিনজাইটিস ভ্যাকসিন গ্রহণ করবে।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির তৈরি সিএইচএডিওএক্স১ এনসিওভি-১৯ নামের ওই টিকাটির মানব দেহে পরীক্ষা শুরু করা হবে ইউনিভার্সিটি হসপিটাল সাউথাম্পটনে। এটাই ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা শুরু করা একমাত্র বৃটিশ টিকা। শিম্পাঞ্জির দেহ থেকে অ্যান্টিবডি নিয়ে এই টিকা তৈরি করা হয়েছে। এজন্য শিম্পাঞ্জির দেহে প্রথমে ভাইরাসটি প্রবেশ করানো হয়। ভাইরাস থেকে বাঁচতে প্রাণীটির দেহে একধরনের অ্যান্টিবডি সৃষ্টি হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, আরএনএ ভ্যাকসিন দেয়া প্রাণীগুলো কোভিডের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সক্ষম হয়েছিল। দলটি এখন এটি পরীক্ষা করবে যে এটি মানুষের মধ্যে একই প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে এবং প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে। অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রæপ ও জেনার ইন্সটিটিউট যৌথভাবে এই টিকা তৈরির কাজ করছে। তাদের প্রত্যাশা আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যেই তারা টিকাটি মানুষের মধ্যে ব্যবহার উপযোগী করে তুলতে পারবে।

এদিকে, গতকাল ইম্পেরিয়াল কলেজও তাদের প্রতিষেধক পরীক্ষার জন্য স্বেচ্ছাসেবীদেরকে নাম লেখানোর আহ্বান জানিয়েছে। এ বিষয়ে কলেজটির প্রফেসর রবিন শ্যাটক বলেছেন, ‘আমি মনে করি বৈজ্ঞানিকভাবে এই প্রতিষেধকগুলোর সাফল্য পাওয়ার খুব বেশি সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সবাই অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী যে এগুলো করোনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।’ এর আগে ধারণা করা হচ্ছিল এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকরী ওষুধ তৈরিতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে। তার এই ঘোষণায় সেই আশঙ্কা দূর হলো।

দ্রুত পরীক্ষা সম্পন্ন করার জন্য ইম্পেরিয়াল কলেজকে ২ কোটি ২৫ লাখ পাউন্ড দিয়েছে বৃটিশ সরকার। অক্সফোর্ডকেও দেয়া হয়েছে ২ কোটি পাউন্ড। মঙ্গলবার এই তহবিল ঘোষণা করে স্বাস্থ্য সচিব ম্যাট হ্যানকক বলেছেন, ‘দীর্ঘমেয়াদে করোনাভাইরাসকে পরাস্ত করার সেরা উপায়টি হচ্ছে প্রতিষেধক ব্যবহার।’

এখনও পর্যন্ত যতদূর কাজ এগিয়েছে, সফলতা মিলেছে। যে ওষুধ তৈরি করা হচ্ছে, তা সরাসরি গিয়ে এই ভাইরাস বা এনজাইমের ওপর কাজ করবে। শুধু করোনা ভাইরাসই নয়, এই ধরণের ড্রাগ বা ওষুধ হৃদরোগ, আর্থারাইটিস, স্ট্রোক, ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধেও কাজে লাগতে পারে। সূত্র: ইউকে স্টান্ডার্ড, ডেইলি মেইল।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ