Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইরান নিয়ে ট্রাম্পের দ্বিচারিতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২০ এপ্রিল, ২০২০, ৫:৫৪ পিএম

ইরান নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিচারিতা অব্যাহত। মধ্যপ্রাচ্যে করোনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ইরান। মৃত পাঁচ হাজারেরও বেশি। এই অবস্থায় ট্রাম্প আবার ইরানকে সাহায্য করতে চাইলেন, কিন্তু নিষেধাজ্ঞা তোলা নিয়ে একটা কথাও বললেন না। অথচ, ইরান এর আগে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা না তুললে তারা আমেরিকার কাছ থেকে কোনও সাহায্য নেবে না।

রোববার সাংবাদিক বৈঠকে ট্রাম্প জানান, ‘ইরান চাইলে করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাদের সাহায্য করতে প্রস্তুত অ্যামেরিকা।’ তবে একই সঙ্গে ট্রাম্পের বক্তব্য, ‘করোনায় আক্রান্ত এবং মৃতের আসল সংখ্যা প্রকাশ করছে না ইরান।’ অর্থাৎ, ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা থেকেও ট্রাম্প সরে আসছেন না। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই সাহায্য দেওয়ার প্রস্তাব নেহাতই লোক-দেখানো। ট্রাম্প নিযেধাজ্ঞা তুলে নিলে তার সদিচ্ছা বোঝা যেত। তিনি জানেন, নিষেধাজ্ঞা থাকলে ইরান সাহায্য নেবে না। কারও কারও মতে সাহায্যের নামে আসলে ব্যবসার কথা ভাবছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ইরানকে তিনি ভেন্টিলেটর দিতে চেয়েছেন। বর্তমান সময়ে যার দাম এবং চাহিদা- দুটোই আকাশছোঁয়া। বিশেষজ্ঞদের আরেক অংশের বক্তব্য, নির্বাচনের আগে ইরানকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে ডেমোক্র্যাটদের সমালোচনা ভোঁতা করতে চাইছেন ট্রাম্প।

এপ্রিলের গোড়ার দিকে আরও একবার ইরানকে মানবিক সাহায্যের কথা বলেছিলেন ডনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু সে সময় ইরান তা নিতে রাজি হয়নি। ইরান প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ট্রাম্প যদি ইরানকে সত্যিই সাহায্য করতে চান, তা হলে তাদের ওপর থেকে যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হোক। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা তোলার বিষয়ে অনড় ট্রাম্প। রোববারের সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘করোনার প্রকোপে কাবু ইরান। বহু মানুষ আক্রান্ত। যদিও ওরা আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা গোপন করছে। এমন পরিস্থিতিতে অ্যামেরিকা ইরানকে সাহায্য করতে চায়। আমরা ইরানকে ভেন্টিলেটর পাঠাতে পারি। করোনার সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য আরও কিছু প্রয়োজন হলে আমরা পাঠাতে পারি।’ কিন্তু অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা কি তোলা হবে? রোববার কিছু না বললেও, আগেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তোলার কোনও প্রশ্নই নেই। বস্তুত, করোনা সংকট কালে এ নিয়ে দেশের ভিতরে এবং বাইরে যথেষ্ট সমালোচনার মুখোমুখিও হতে হয়েছে প্রেসিডেন্টকে। ডেমোক্র্যাটরা বার বার বলেছেন, বিপদের সময় অমানবিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া উচিত। পরমাণু শক্তির প্রশ্নে ২০১৫ সালে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন।

ইরানকে ভেন্টিলেটর দিয়ে সাহায্য করতে চাইছেন ট্রাম্প। কিন্তু তার নিজের দেশে যথেষ্ট ভেন্টিলেটর আছে তো? নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সির মতো প্রবল ভাবে করোনা আক্রান্ত রাজ্য গুলির বক্তব্য, হাসপাতালে বেড নেই। প্রয়োজনের তুলনায় ভেন্টিলেটরের সংখ্যা নেহাতই অপ্রতুল। চিকিৎসকদের পিপিই বা সুরক্ষা পোশাকের অভাবও যথেষ্ট। বস্তুত সোমবার সকাল পর্যন্ত হিসেব অনুযায়ী অ্যামেরিকায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপে মৃত্যু হয়েছে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষের। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে সাড়ে সাত লাখ। এখনও পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পেরেছেন ৪০ হাজারের কিছু বেশি লোক। কেবলমাত্র নিউ ইয়র্কেই মৃতের সংখ্যা ১৮ হাজারের কিছু বেশি। তার পরেই রয়েছে নিউ জার্সি। তবে নিউ ইয়র্কের গভর্নরের বক্তব্য, আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য হলেও কমতে শুরু করেছে। সূত্র: রয়টার্স, এপি, এএফপি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাভাইরাস

৪ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ