পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতাল। এভাবে রাজধানীর ১১টি হাসপাতালে স্বামীকে নিয়ে ঘুরেছেন মিনু বেগম। কোনো হাসপাতালেই চিকিৎসা হয়নি ৫২ বছর বয়সী আমিনুলের। মিনু বেগমের কাকুতি-মিনতি কেউ শুনেনি। সর্বশেষ গত শনিবার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকেও ফিরিয়ে দেয়া হয় তাকে। তখন দিন ঘনিয়ে সন্ধ্যা। অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে রওনা দেন সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের উদ্দেশে। ওই হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মাারা যান আমিনুল।
রাজধানীর মিরপুর ১১-এর বাসিন্দা অ্যাজমার রোগী আমিনুল গত দুই সপ্তাহ ধরে শ্বাসকষ্ট ও গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। মাঝেমধ্যেই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতো। স্বজনদের অভিযোগ রাজধানীর ১১টি হাসপতালে চিকিৎসার জন্য ঘুরলেও করোনা সন্দেহে কেউ তার চিকিৎসা দিতে রাজি হননি। মৃত আমিনুলের স্ত্রী মিনু বেগম বলেন, আমার স্বামীর অ্যাজমার সমস্যা অনেক আগে থেকেই। গত দশ-পনেরো দিন ধরে তার অ্যাজমা বেড়ে যায়। যার চিকিৎসার জন্য এই শহরে এগারোটি হাসপাতালে গিয়েছি। সবাই করোনা সন্দেহে আমার স্বামীর চিকিৎসা করল না। আমার স্বামী শেষ পর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় মারা গেল। আমি জানতাম কুর্মিটোলায় করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করা হয়, কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তারা বলছে টেস্ট করিয়ে আনার জন্য। এখানে নাকি শুধু পজেটিভ রোগী চিকিৎসা করা হয়। আমি তাদের বলছি আপনারা টেস্ট করান। এখানে তো টেস্ট করানো হয়। কিন্তু তারা টেস্ট না করে আমাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে যেতে বলেন। সেখান থেকে যেতে যেতেই আমার স্বামী রাস্তায় মারা যায়। আমরা কোন দেশে বাস করছি? যে দেশে একজন মানুষের চিকিৎসা করানো যায় না। এই দেশ কি আমাদের না? সরকার বলছে যেকোনো সাহায্যের জন্য ৯৯৯-এ ফোন দেয়ার জন্য। এখানে ফোন দেয়ার পর তারা বলে বিষয়টি দেখছি। এর পর আর কোনো সারা শব্দ নেই। আইইডিসিআর-এ এক সপ্তাহ ধরে ফোন দিয়ে গত ১২ তারিখ তাদেরকে পেয়েছি। তাদের কাছে উপায় না পেয়ে আমার স্বামীর উপসর্গগুলো বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলছিলাম। যেন তারা আমার স্বামীর জন্য দ্রæত কিছু একটা করে। এসে নমুনা নিয়ে যাবে। কেউ আমাদের কাছে আসেনি। গত পাচঁটা দিন তাদেরকে হাজার বার ফোন দিলাম কিন্তু কোনো সাড়া পাইনি।
এদিকে মিনু বেগম অভিযোগ করে বলেন, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মৃত ঘোষণা করার পর সঙ্গে সঙ্গে লাশ বের করে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এই অবস্থায় আমি কোথায় যাই? আমার কোনো ছেলে সন্তান নেই। লাশ কোথায় কি করব কিছুতেই মাথায় আসছিল না। সেখানে আমাকে সাহায্য করার মতো কেউ ছিল না। পরে আমার ভাই যোগাযোগ করল মারকাজুলে। সেখানে গিয়েও বিপত্তি। তারা বলছেন, করোনা পজেটিভ বা নেগেটিভের কোনো কাগজ দেখাতে না পারলে তারা লাশ ধোয়ার কাজ করবে না। এমন অবস্থায় আমার বাসার চারপাশে ছড়িয়ে গেছে আমারা স্বামী নাকি করোনা আক্রান্ত। আশেপাশের লোকজন বাড়ির মালিক’কে ফোন দিচ্ছিলো আমাদের বের করে দেয়ার জন্য। অথচ ওই সময় আমি আমার স্বামীর লাশ নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। মিনু বলেন, আমার স্বামীর লাশ যখন মারকাজুল গোসল করাচ্ছিল না তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একটা নাম্বারে ফোন দিয়েছিলাম। তখন ওখান থেকে বলছিল যদি আপনার স্বামীর করোনা টেস্ট করাতে চান, তাহলে আরো একদিন লাগবে। লাশ আপনি কোথায় রাখবেন? আমি তাদেরকে বলছিলাম আপনারা নমুনা নেন। দরকার হলে লাশ ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রাখব। আমি দেখতে চেয়েছিলাম, আসলে কি আমার স্বামী কোভিড-১৯ আক্রান্ত ছিলেন কিনা। পরে তারা কিছুই করল না। তখন তারা মারকাজুলকে বলে দিলো, পরে খিলগাঁও নিয়ে আমার স্বামীর লাশ দাফন করল। অথচ কোনো টেস্টই করল না। আমাকে তারা লাশটাও দিলো না। আমার স্বামী করোনায় আক্রান্ত কিনা সেটা জানার ব্যবস্থাও তারা করল না। এখন যদি আমার স্বামী আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে আমাদের কি হবে?
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।